রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নির্বাহী কমিটির (ইসি) নিয়ন্ত্রণ নিতে গিয়ে চিকিৎসকসহ দুজনকে মারধর করেছেন ওই হাসপাতালের পুরোনো কমিটির একাংশের সদস্যরা। হামলায় ওই চিকিৎসকের একটি দাঁত ভেঙে গেছে। আজ সোমবার সকালে বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তৃতীয় তলায় এ ঘটনা ঘটেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও হাসপাতালটির চিকিৎসকেরা বলেছেন, পুরোনো কমিটির কয়েকজন সদস্যের নেতৃত্বে বহিরাগত ব্যক্তিরা সকাল ১০টার দিকে বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নির্বাহী (ইসি) কমিটির নিয়ন্ত্রণ নিতে তৃতীয় তলায় জড়ো হন। কলেজ ও হাসপাতালের বর্তমান ইসি কমিটির সদস্য, শিক্ষক, চিকিৎসক ও কর্মচারীরা বাধা দিলে পুরোনো কমিটির নেতৃত্বে বহিরাগত ব্যক্তিরা হামলা চালান। এ সময় তাঁরা হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের প্রভাষক ফজলে রাব্বিকে মারধর করেন এবং তাঁর একটি দাত ভেঙে ফেলেন। একপর্যায়ে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। যৌথ বাহিনীর সদস্যরা উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুরোনো কমিটির সদস্যরা সহযোগীদের নিয়ে হাসপাতাল ছেড়ে যান। এ সময় তাঁরা হাসপাতালের নিচে বাংলাদেশ মেডিকেলের একজন টেকনোলজিস্টকে মারধর করেন।

আহত কলেজের শিক্ষক ফজলে রাব্বি প্রথম আলোকে বলেন, বহিরাগত ব্যক্তিরা তাঁকে ধাক্কা মেরে সিঁড়ি থেকে ফেলে দেন। এ সময় তাঁরা তাঁকে উপর্যুপরি আঘাত করেন। এতে তাঁর একটি দাঁত ভেঙে গেছে।

বাংলাদেশ মেডিকেলের একজন চিকিৎসক জানান, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তৎকালীন ইসি কমিটির চেয়ারম্যানসহ কয়েকজন সদস্য পালিয়ে যান। কমিটির তৎকালীন চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক পরে গ্রেপ্তার হন। এরপর হাসপাতালের নতুন ইসি কমিটি গঠন করা হয়। ইসি কমিটির বৈঠকের পর ছয়বার অনুপস্থিত থাকলে যে কারও সদস্যপদ বাতিল হয়ে যায়। কমিটির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী হামলায় অংশ নেওয়া ছয়জন সদস্য পরপর ছয়টি সভায় অনুপস্থিত ছিলেন। তাঁদের সদস্যপদ বাতিল হয়ে গেলেও আজ সকালে তাঁরা বহিরাগত ব্যক্তিদের নিয়ে সভা করতে এলে তাঁদের বাধা দেওয়া হয়।

হামলাকারীরা বিএনপির একজন কেন্দ্রীয় নেতার অনুসারী পরিচয় দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন বর্তমান ইসি কমিটির সদস্যরা। তাঁরা বলেছেন, এ ঘটনায় ধানমন্ডি থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি।

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহমেদ মাসুদ আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইসি কমিটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই পক্ষের ধাক্কাধাক্কি হয়। এতে ওই হাসপাতালের এক চিকিৎসকসহ দুজন আহত হন। এ ব্যাপারে আহত ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে অভিযোগ নিয়ে আসার কথা থাকলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁরা থানায় আসেননি। তিনি বলেন, দুই কমিটির সদস্যদের বক্তব্য শুনতে তাঁদের নিয়ে বসবে যৌথ বাহিনী। তবে দিনক্ষণ এখনো ঠিক হয়নি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কম ট র ন চ ক ৎসক ম রধর

এছাড়াও পড়ুন:

সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন

প্রথিতযশা অধ্যাপক ও পরিসংখ্যানবিদ কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন একজন সব্যসাচী মানুষ। তিনি নিজের কাজের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তাঁর ঐতিহ্য শিক্ষার্থীদের ধারণ করতে হবে।

জ্ঞানতাপস কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।

অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা, বৃত্তি, পদক, পুরস্কার ও সনদ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট।

অনুষ্ঠানে ‘যুগলের বন্ধন: কাজী নজরুল ইসলাম-কাজী মোতাহার হোসেন’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা দেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। তিনি দুই বন্ধুর সম্পর্কের রসায়নের নানা দিক তুলে ধরেন।

প্রধান অতিথি বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই অনুষ্ঠানের দুটো প্রাপ্তি আছে। প্রথমত, মানুষের অবদান ও মেধাকে স্বীকার করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এই উপমহাদেশের একজন প্রথিতযশা সব্যসাচী মানুষের ঋণ স্বীকার করা হচ্ছে।

কাজী মোতাহার হোসেন যেকোনো বিবেচনায় একজন দার্শনিক বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। প্রথম সারির পরিসংখ্যানবিদ, বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও তিনি অনেকগুলো সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রভাব বিস্তার করেছেন। একজন মানুষের ছোট জীবদ্দশায় এত গুণ সন্নিবেশিত করা কঠিন। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছেন।

সবাইকে নিয়ে চলা, প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, নিজের জগতের বাইরে নানা কিছুতে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ঐতিহ্য কাজী মোতাহার হোসেন করে গেছেন বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, তাঁর সম্মানে যাঁরা আজ স্বীকৃতি পেলেন, তাঁরা এই ঐতিহ্যকে ধারণ করবেন। এটা (বিশ্ববিদ্যালয়) যে সামাজিক প্রতিষ্ঠান, সে বার্তা দেবেন। যেসব শিক্ষার্থী সম্মাননা পাচ্ছেন, তাঁদের ছোট প্রোফাইল তৈরি করে ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মাজেদ বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন একজন সব্যসাচী মানুষ ছিলেন। বিজ্ঞানের এমন কোনো দিক নেই, যেখানে তাঁর পদচারণা ছিল না। তিনি দাবা খুব পছন্দ করতেন। দাবা খেলার কথা শুনলে তিনি ছুটে যেতেন। কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে তাঁর শোনা নানা গল্প তিনি স্মৃতিচারণা করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাফর আহমেদ খান বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন পরিসংখ্যান চর্চার পথিকৃৎ ছিলেন। বিজ্ঞান, দাবাচর্চারও পথিকৃৎ ছিলেন। এমন কোনো পুরস্কার নেই যে, তিনি পাননি। তাঁর দেখানো পথে যেন শিক্ষার্থীরা নিজেদের আলোকিত করতে পারেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন। এই আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের সেরা শিক্ষার্থীদের বই, নগদ অর্থ ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গঙ্গাচড়ায় হিন্দুবাড়িতে হামলা ঠেকাতে ‘পর্যাপ্ত’ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি
  • নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ-আ.লীগ নেতা–কর্মীদের ‘গোপন বৈঠক’ ঘিরে গ্রেপ্তার ২২, সেনা হেফাজতে মেজর
  • দেশের চারজনের একজন বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার
  • ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ যাতে মাথাচাড়া দিতে না পারে
  • ডেঙ্গুতে দুজনের, করোনাভাইরাসে একজনের মৃত্যু
  • জাওয়াইদেহ বেদুইনদের মৌখিক সাহিত্য
  • রাবিতে আ.লীগ ট্যাগ দিয়ে চিকিৎসা কর্মীকে বিবস্ত্র করে মারধর
  • ইরানের সঙ্গে সংঘাত: ইসরায়েলকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা দিতে সৌদি সরকারকে অনুরোধ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র
  • সিরিজের শেষ ম্যাচে নেই স্টোকস, দায়িত্বে পোপ
  • সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন