ইনিংসের কেবল ৩ ওভার ৪ বল হয়েছে তখন—৪ রানেই ৬ উইকেট নেই গাজী গ্রুপের! দেশের তো বটেই, বিশ্ব রেকর্ডও হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা জেগেছিল তখন। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে সবচেয়ে কম রানে অলআউট হওয়ার রেকর্ডটা ওয়েস্ট ইন্ডিজ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের, বার্বাডোজের বিপক্ষে ২০০৭ সালে ১৮ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল তারা।

বাংলাদেশে সেটি চট্টগ্রাম বিভাগের, সিলেটের বিপক্ষে ২০০২ সালে তারা অলআউট হয়েছিল ৩০ রানে। এসব রেকর্ড থেকে শেষ পর্যন্ত অবশ্য অনেকটুকু দূরে গিয়েই থেমেছে গাজী গ্রুপ। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে বিকেএসপিতে আজ তারা ৯৩ রানে অলআউট হয়েছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে।

এনামুল হক উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিলে বিপর্যয়ের শুরু হয়, আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছিলেন না তিনি, তার মনে হচ্ছিল বল লাগেনি ব্যাট। শূন্য রানে এনামুল ফেরার পর শরীফুলের ওই ওভারেই আকবরের হাতে ক্যাচ দেন ৪ বলে ২ রান করা সালমান হোসেনও।

দ্বিতীয় ওভারে তানজিম হাসান কোনো উইকেট নিতে পারেননি। তবে তৃতীয় ওভারে শরীফুল ফিরতেই আবার উইকেটের দেখা পায় রূপগঞ্জ। এবার সাদিকুর রহমান রানআউট হন সৌম্য সরকারের সরাসরি থ্রোয়ে। চতুর্থ বলে আমিনুল ইসলাম ও শেষ বলে শেখ পারভেজ জীবনকে বোল্ড করে নিজের চতুর্থ উইকেট পেয়ে যান শরীফুল।

নিজের দ্বিতীয় ওভার করতে এসে তানজিম হাসানের বলে বোল্ড হন শামসুর রহমান। ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে শামসুর আউট হওয়ার সময়ও গাজী গ্রুপের রান ৪। এরপর অবশ্য তাদের মান বাঁচান তোফায়েল আহমেদ ও ওয়াসি সিদ্দিকী। সপ্তম উইকেট জুটিতে ৪৭ রান যোগ করেন। ৫৯ বল খেলে ২৪ রান করে তোফায়েল ও ৭৭ বলে ১৮ রান করে ওয়াসি সিদ্দিকী শিকার হন তানভীর ইসলামের বলে।

শেষ দিকে ৫০ বলে আব্দুল গাফফার ২৬ রান করলে এক শ ছোঁয়া সংগ্রহ পায় গাজী গ্রুপ। প্রথম ২ ওভারে ৪ উইকেট নেওয়া শরীফুল নিজের পরের ৮ ওভারে কোনো উইকেট পাননি। ১০–৩–১৪–৪, তবু ইনিংস শেষে দেখার মতোই ছিল তাঁর বোলিং–বিশ্লেষণ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ন কর উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

অজিদের হারিয়ে টেস্টের চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা 

দক্ষিণ আফ্রিকার ধস নামে শেষে। জিততে জিততে হারই যেন তাদের নিয়তি। কিন্তু লর্ডসে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে প্রথম ইনিংসেই যেন হারতে বসেছিল তারা। গল্পের যে বহু বাকি দ্বিতীয় ইনিংসে দেখিয়েছে প্রোটিয়ারা। দেখিয়েছেন প্রোটিয়া ক্রিকেটের শাপমোচনের ভার কাঁধে নেওয়া এইডেন মার্করাম। তার দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ২৮১ রান তাড়া করে ৫ উইকেটে জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।  প্রথমবার টেস্টের চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ঘরে তুলেছে আইসিসির দ্বিতীয় শিরোপা।

লর্ডসে টস জিতে দক্ষিণ আফ্রিকা বোলিং নিতেই উইকেট পেস বান্ধব হতে যাচ্ছে এই বার্তা পাওয়া গিয়েছিল। উইকেটে ঘাসের সুবিধা নিয়ে কাগিসু রাবাদার দুর্দান্ত বোলিংয়ে গত টেস্ট চক্রের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে প্রথম ইনিংসে মাত্র ২১২ রানে অলআউট করে দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। অজিরা বল হাতে ছিল আরও বিধ্বংসী। প্যাট কামিন্সের তোপে মাত্র ১৩৮ রানে ধসে যায় প্রোটিয়ারা। অস্ট্রেলিয়া ৭৪ রানের লিড নিয়ে শিরোপায় এক হাত দিয়ে ফেলে।

প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে স্টিভ স্মিথ ৬৬ রান করেন। বাও ওয়েবস্টার দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭২ রানের ইনিংস খেলেন। এছাড়া অ্যালেক্স কেরি ২৩ ও মার্নাস লাবুশানে ১৭ রান যোগ করেন। ওই ইনিংসে নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরা রাবাদা ৫১ রান দিয়ে ৫ উইকেট তুলে নেন। মার্কোস ইয়ানসেন নেন ৩ উইকেট। প্রোটিয়াদের হয়ে অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা প্রথম ইনিংসে ৩৬ রান করেন। ডেভিড বেডিংহাম ৪৬ রান যোগ করেন। কামিন্স ২৮ রান দিয়ে ৬ উইকেট তুলে নেন। মিশেল স্টার্ক ২ উইকেট দখল করেন।

দ্বিতীয় দিনের শেষ বেলা ও তৃতীয় দিন সকালে পুনরায় ব্যাটিংয়ে বিপদে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। ২০৭ রানে অলআউট হয়ে যায় তারা। ৬৬ রানে হারায় টপ ও মিডল অর্ডারের নির্ভরযোগ্য ৬ ব্যাটার। এর মধ্যে মার্নাস লাবুশানে ৬৪ বল খেলে ২২ রান করেন। অন্য কোন ব্যাটার ক্রিজে দাঁড়াতে পারেননি।

তৃতীয় দিন সকালে অবশ্য উইকেটের ঘাস মরে যাওয়ায় ও ঝলমলে রোদ ওঠায় পরিস্থিতি বদলে যায়। সুবিধা নিয়ে অ্যালেক্স কেরি ৪৩ রান করেন। তবে ব্যাটিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সবচেয়ে কার্যকরী কাজটা করেন স্টার্ক ও জস হ্যালজউড। স্টার্ক ১৩৬ বল খেলে হার না মানা ৫৮ রান করেন। শেষ ব্যাটার হ্যালজউড ৫৩ বল খেলে ১৭ রান যোগ করেন। দ্বিতীয় ইনিংসে রাবাদা ৪টি ও লুঙ্গি এনগিডি নেন ৩ উইকেট।

রান তাড়া করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা দলের ৯ রানে ওপেনার রায়ান রিকেলটনকে হারায়। তবে অলরাউন্ডার ওয়ান মুলদারকে নিয়ে ওপেনার এইডেন মার্করাম ভিত্তি শক্ত করে ফেলেন। মুলদার ২৭ রান করে দলের ৭০ রানে ফিরে যান। মার্করাম ও বাভুমা সেখান থেকে ২১৩ রান তুলে জয়ের সুবাস নিয়ে দিন শেষ করেন। মার্করাম সেঞ্চুরি তুলে নেন। ফিফটি হয় বাভুমারও। চতুর্থ দিনের শুরুতে বাভুমা ৬৬ রান করে ফিরে যান। মার্করাম ২০৭ বল খেলে ১৩৬ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলে আউট হলেও জয় নিয়ে শঙ্কায় পড়তে হয়নি প্রোটিয়াদের।   

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অজিদের হারিয়ে টেস্টের চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা