অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সার্বক্ষণিক ইন্টারনেট প্রাপ্তিকে নাগরিক অধিকার হিসেবে দেখেছে। সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম সম্প্রতি জানিয়েছেন, সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৪-এর ২(ভ) ধারা অনুযায়ী নাগরিকদের সার্বক্ষণিক ইন্টারনেট প্রাপ্তির অধিকার সাইবার সুরক্ষা আইনে অন্তর্ভুক্ত হবে। অন্যদিকে বাংলাদেশে স্যাটেলাইটভিত্তিক দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা স্টারলিংক আনার উদ্যোগ দিয়েছে সরকার। বস্তুত এর মাধ্যমে তথ্য এবং যোগাযোগে বৈশ্বিক কানেক্টিভিটিতে একধাপ এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।

জুলাই অভ্যুত্থানের সময় গত ১৭ জুলাই পুরো বাংলাদেশজুড়ে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেয় সাবেক হাসিনা সরকার। এরপরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটও বন্ধ করে দিয়ে পুরো দেশে ইন্টারনেট ব্ল্যাক আউট ঘটানো হয়। অবশেষে ৫ আগস্ট পতনের মধ্য দিয়ে ইন্টারনেট সেবা পুনরায় সম্পূর্ণভাবে চালু হয়। সেসময় ব্ল্যাক আউটের কারণে মানবাধিকার তো লঙ্ঘিত হয়েছেই, অনলাইন নির্ভর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোও ভয়ানক ক্ষতির মুখে পড়েছে।

তবে বাংলাদেশে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ এটিই প্রথম নয়। বিগত ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থান পর্যন্ত শেখ হাসিনার রেজিমে অসংখ্যবার ভিন্নমত-বিরোধী দলকে দমনে ইন্টারনেট বন্ধ হয়েছে। ইন্টারনেট সোসাইটি ‘পালস’ গত নভেম্বরে ‘শাটডাউন ওয়াচ: বিল্ডিং এ কমিউনিটি অ্যাগেইনস্ট ইন্টারনেট শাটডাউন ইন বাংলাদেশ’ নামে একটি নিবন্ধ প্রকাশ করে। এতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশে ২০০৯ সাল থেকে প্রায় প্রতি বছরই কোনো না কোনোভাবে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ বা সীমিত করা হয়েছে। ২০১২ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে অন্তত ১৭ বার ইন্টারনেট বন্ধের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে।

২০২৩ সালে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করায় বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১১তম, তার আগের বছর ২০২২ সালে ছিল পঞ্চম অবস্থানে। দুই বছরে যথাক্রমে তিনবার এবং ছয়বার ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রাখা হয়। ২০২৪ সালের মে মাসে প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ডিজিটাল পরিসরের অধিকারবিষয়ক অ্যাকসেস নাউ ও ইন্টারনেট বন্ধবিষয়ক মানবাধিকার প্ল্যাটফর্ম কিপইটঅন কোয়ালিশনের ‘সংকুচিত গণমাধ্যম, ক্রমবর্ধমান সহিংসতা’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে আসে। প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজনৈতিক ভিন্নমত দমন ও বিরোধী দলগুলোর সমাবেশের সময় শেখ হাসিনা সরকার ইন্টারনেট বন্ধ করেছিল।

ইন্টারনেট প্রাপ্তির অধিকার গত দশক থেকে আলোচিত একটি বিষয়। ২০১১ সালের ৩ জুন জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের সভায় সর্বসম্মতভাবে ইন্টারনেট ব্যবহারকে মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এর আগে ২০১০ সালে বিবিসি বিশ্বের ২৬টি দেশে একটি জরিপ পরিচালনা করে। জরিপে প্রাপ্ত ফলাফলে উঠে আসে, বিশ্বের ৭৯ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেটকে মৌলিক মানবাধিকারের স্বীকৃতির দাবি জানিয়েছে। ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক টেলিকম ইউনিয়ন ‘রাইট টু ইন্টারনেট’ ঘোষণার মাধ্যমে ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার ঘোষণার দাবির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে।

অবশ্য জাতিসংঘ স্বীকৃতি দেওয়ার আগেই বিশ্বের চারটি দেশ ইন্টারনেট ব্যবহারকে মৌলিক অধিকার ঘোষণা করে নিজেদের সংসদে আইনও পাস করে। ৪টি দেশের মধ্যে প্রথমে রয়েছে এস্তোনিয়া। ২০০০ সালে এস্তোনিয়ায় ইন্টারনেট ব্যবহারকে মৌলিক অধিকার ঘোষণা করে আইন পাস করা হয়। ২০০৯ সালে ফ্রান্স ও ফিনল্যান্ড এবং ২০১০ সালে কোস্টারিকার সংসদে ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার স্বীকৃতি দিয়ে আইন পাস করা হয়। জাতিসংঘের স্বীকৃতি দেওয়ার পর আরও ৪২টি দেশ ইন্টারনেট ব্যবহারকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ২০২০ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। জম্মু-কাশ্মীরে প্রায় পাঁচমাস ইন্টারনেট বন্ধ রাখা নিয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়, ইন্টারনেট ব্যবহারের অধিকার তথ্যের স্বাধীনতা এবং মত প্রকাশের অধিকারের সঙ্গে সম্পর্কিত, যা ভারতের সংবিধানের ১৯(১)(এ) অনুচ্ছেদে সুরক্ষিত। রায়ে আদালত উল্লেখ করে, ইন্টারনেট প্রবেশাধিকার মৌলিক অধিকার এবং এটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা অসাংবিধানিক। বর্তমান সরকার সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশে ইন্টারনেট প্রাপ্তির অধিকার স্বীকৃতি দানের মাধ্যমে নজির স্থাপন করতে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার (বিটিআরসি) সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী দেশের ১৪ কোটি ১০ লাখ মানুষ ইন্টারনেটের গ্রাহক। ইন্টারনেট ব্যবহারের এই বৃদ্ধির পরেও, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ইন্টারনেটের প্রবেশাধিকার ও ব্যবহারে বৈষম্য রয়ে গেছে। বিশেষ করে, গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত এলাকায় ইন্টারনেট অবকাঠামো বেশ দুর্বল এবং ডিজিটাল সাক্ষরতার অভাবে প্রান্তিক জনগণ ইন্টারনেট ব্যবহারে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে। তবে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দেশব্যাপী স্বনির্ভর ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং সরকারি সেবাসমূহ সহজলভ্য হয়েছে, যা সামগ্রিক উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।

বর্তমানে বাংলাদেশের ইন্টারনেট সেবা ব্যবস্থা সাবমেরিন কেবলনির্ভর। সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে তারের মাধ্যমে ব্যান্ডউইডথ এনে মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর ও ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডাররা (আইএসপি) মানুষকে ইন্টারনেট সেবা দেয়। 

অন্যদিকে স্টারলিংক ইন্টারনেট সেবা দেয় স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে। স্টারলিংকের মূল প্রতিষ্ঠান ইলন মাস্কের স্পেসএক্সের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, স্টারলিংকের ৬ হাজার ৯৯৪টি স্যাটেলাইট স্থাপিত হয়েছে। স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবা পেতে গ্রাহককে টেলিভিশনের অ্যানটেনার মতো একটি ডিভাইস বসাতে হবে, যা পৃথিবীর কক্ষপথে ঘুরতে থাকা স্টারলিংকের স্যাটেলাইটের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে। অ্যানটেনার সঙ্গে একটি স্টারলিংকের রাউটার স্থাপন করে গ্রাহক ইন্টারনেট সেবা পাবেন। এরফলে একই সঙ্গে প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেমন শক্তিশালী ইন্টারনেট সুবিধা পৌঁছাবে তেমনি পরবর্তী কোনো সরকার চাইলেও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করতে পারবে না।

আশার বিষয় হলো, অভ্যুত্থান পরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেমন নানা উদ্যোগ নিচ্ছে একই সঙ্গে সিভিল সোসাইটি থেকে নানা উদ্যোগ গৃহীত হয়েছে এবং হচ্ছে। অ্যাক্টিভিস্ট রাইটস প্লাটফর্মটি ‘শাটডাউন ওয়াচ’ নামে বাংলাদেশের প্রথম লাইভ ইন্টারনেট শাটডাউন মনিটরিং ড্যাশবোর্ড তৈরি করেছে। এটি সবার জন্য উন্মুক্ত এবং অবাধ থাকবে।

প্লাটফর্মটির সহপ্রতিষ্ঠাতা ডিজিটাল রাইটস অ্যাক্টিভিস্ট শোয়েব আব্দুল্লাহ বলেন, আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি বিভাগে স্থানীয় সাংবাদিক, ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান, সরকারি টেলিযোগাযোগ সংস্থা, টেলিকম প্রতিষ্ঠান ইত্যাদির মাধ্যমে প্রাথমিক যাচাই বাছাই করি। এরপর অধিকতর যথার্থতা নিশ্চিতে ক্লাউডফ্লেয়ার রাডার, আইওডিএ (ইন্টারনেট বিভ্রাট শনাক্তকরণ এবং বিশ্লেষণ) এবং ইন্টারনেট সোসাইটি পালস শাটডাউন ট্র্যাকারসহ বহিরাগত উৎসগুলির সঙ্গে আমাদের ডেটা ক্রস-রেফারেন্স করি। সবগুলো সম্পন্ন করে শাটডাউন ওয়াচ ড্যাশবোর্ডে যাচাইকৃত তথ্য যুক্ত করা হয়।

এ ধরনের সরকারি ও বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে আশা করা যায়- অচিরেই বাংলাদেশে সার্বক্ষণিক ইন্টারনেট প্রাপ্তি নিশ্চিত হবে। প্রতিষ্ঠিত হবে অবাধে তথ্য প্রাপ্তির অধিকার। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স য ট ল ইট ত হয় ছ বন ধ র সরক র টফর ম

এছাড়াও পড়ুন:

কীর্তনখোলার তীর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীতে

আনিকা জেবা ও মালিহা জেবা। যমজ বোন। গত ১৭ মে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীতে ‘সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট’ পদে কমিশন্ড হন। বরিশাল সদরে জন্ম নেওয়া দুই বোন ২০১০ সালে পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানোর পর কেমন করে গেলেন স্বপ্নের বন্দরে তাই তুলে ধরেছেন মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ 

গত ১৬ মে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট জোন্স ইউনিভার্সিটি থেকে ব্যবসা প্রশাসনে বিশেষ কৃতিত্বের সঙ্গে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন আনিকা জেবা ও মালিহা জেবা। এর ঠিক পরদিনই এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীতে ‘সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট’ পদে কমিশন্ড হন। আরও মজার বিষয় হচ্ছে, এমবিএ গ্র্যাজুয়েশন ও সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভের ঠিক পরদিন, ১৮ মে ছিল এই দুই বোনের জন্মদিন। জন্মদিনটি তারা পরিবারের সঙ্গে উদযাপন করেন নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের আর রাজ্জাক সুপারমার্কেটের ব্যাঙ্কুয়েট হলে।
কীর্তনখোলার তীর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে...
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশি আমেরিকানদের মধ্যে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করা যমজ বোন আনিকা জেবা ও মালিহা জেবার জন্ম বরিশাল সদরে। ২০১০ সালে পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান তারা। নিউইয়র্কে গিয়ে হাইস্কুল শেষ করে তারা সেন্ট জোন্স ইউনিভার্সিটিতে ব্যবসা প্রশাসনে ভর্তি হন এবং একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর রিজার্ভ অফিসার্স ট্রেনিং প্রোগ্রামে অংশ নেন। ১৬ মে সেন্ট জোন্স ইউনিভার্সিটি থেকে ব্যবসা প্রশাসনে বিশেষ কৃতিত্বের সঙ্গে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীতে ‘সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট’ পদে 
কমিশন্ড হন।
যে উদ্যোগ অনুপ্রেরণাদায়ক
সেন্ট জোন্স ইউনিভার্সিটি ১৭ মে তাদের ডিগ্রি অর্জন উপলক্ষে যে সংবর্ধনা দেন তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ব্রায়ান জে শ্যানলি বলেন, ‘শিক্ষার পাশাপাশি দেশসেবায় তাদের এই উদ্যোগ অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণাদায়ক। জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে তারা নিয়মিত বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধক্ষেত্রে অংশ নেবেন।’
যে জন্য করেছেন এমবিএ
মাস্টার্স অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা এমবিএ কোর্স সম্পন্নের পর আনুষ্ঠানিক সার্টিফিকেট অর্জনে আনিকা জেবা ও মালিহা জেবা বলেন, এমবিএ হয়েছি নিজের ব্যবসাকে আরও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার মধ্য দিয়ে বহুজাতিক সমাজে বাঙালির এগিয়ে চলার ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকার জন্য। অধ্যয়নের পাশাপাশি নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সে পাঁচটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান চালু করেছি। বাংলাদেশেও রয়েছে দুটি কসমেটিকস ব্র্যান্ড ‘দ্য বিউটি মল’ এবং ক্লথিং ব্র্যান্ড ‘ইলেনি’। এ দুটো পরিচালিত হচ্ছে অনলাইনে অর্ডার নিয়ে। আর রাজ্জাক ম্যানেজমেন্ট ইনকের অধীনে নিউইয়র্কের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পাঁচটি হচ্ছে– এবিসি ফুড অ্যান্ড ভেজিটেবল, বুচার মিট, আর রাজ্জাক সুপারমার্কেট, আর রাজ্জাক ব্যাঙ্কুয়েট এবং আর রাজ্জাক হোলসেল ফ্লাওয়ার। 
ঐতিহ্য ও মায়ের অগ্রযাত্রা
বরিশাল থেকে মা মোর্শেদা বেগমের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানো দুই বোন দেখেছেন মায়ের দৃঢ়তা ও পরিবারের জন্য মায়া। এও দেখেছেন যে মায়ের তত্ত্বাবধানে গড়ে ওঠা ‘আর রাজ্জাক ম্যানেজমেন্ট’ কেমন করে আস্থা অর্জন করে নিয়েছে স্থানীয় বাঙালিদের মাঝে! প্রতিষ্ঠানটির মাটি দিয়ে তৈরি ডিনার সেট প্রবাসীদের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। কেবল পহেলা বৈশাখেই নয়; বাঙালিয়ানা প্রদর্শনের অন্য সব অনুষ্ঠানে এবং শৌখিন প্রবাসীদের ড্রয়িং রুমেও স্থান করে নিয়েছে তাদের মাটির ডিনার সেট। মায়ের মতো দুই বোনও বাংলাকে ভালোবেসে, বাঙালিয়ানায় ভর করে এগিয়ে যেতে চান। 
আগামীর স্বপ্ন
আনিকা জেবা এবং মালিহা জেবা দেশ ছাড়ার পর থেকে তাদের উচ্চশিক্ষা লাভের ব্যয় নিয়ে কোনো রকম দুশ্চিন্তা করতে হয়নি মা মোর্শেদা বেগম মায়াকে। তারা বিশেষ কৃতিত্বের সঙ্গেই নিজেদের পড়াশোনা চালিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় ১৭ মে তারা ‘ইউএস আর্মি রিজার্ভ অফিসার্স ট্রেনিং কোর্স’ সম্পন্নের সার্টিফিকেট তথা ‘সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট’ হিসেবে অভিষিক্ত হয়েছেন। সেদিন সেন্ট জোন্স ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট ব্রায়ান জে শ্যানলি ক্লাস-২০২৫ কমিশনিংপ্রাপ্ত ১৪ জনকে অভিনন্দন জানান। সেকেন্ড লেফটেন্যান্টের ব্যাজ পরার আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে দুই বোন বলেন, ‌‘পেশার পাশাপাশি আগামীতে নিজেদের ব্যবসাকেও এগিয়ে নিতে চাই। দেশেও কাজ করছি আমরা। সেখানেও রয়েছে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। এসবের পাশাপাশি মানবিক কাজ করে যাচ্ছি। এই কাজের ধারাবাহিকতার পাশাপাশি নিজেদের সঙ্গে লাল-সবুজের পতাকাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই!’ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাবার নিঃশব্দ সংগ্রাম
  • কীর্তনখোলার তীর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীতে
  • বেসরকারি খাত পিপিপিতে আকৃষ্ট নয়, বরাদ্দ ৫ হাজার কোটি টাকা