দেশের মধ্যে ডিজিটাল লেনদেনের বেশির ভাগই ঢাকায় হচ্ছে। গত বছর মোট ডিজিটাল লেনদেনের ৮০ শতাংশ এবং মোট ব্যয়ের ৭৫ শতাংশ হয়েছে ঢাকায়। তবে গাজীপুর, রাজশাহী, রংপুর ও ময়মনসিংহেও ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবহার আগের বছরের চেয়ে বেড়েছে। ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা প্রদানে বৈশ্বিকভাবে শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান ভিসা এ তথ্য দিয়েছে।
ভিসা বাংলাদেশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে সামগ্রিক ব্যয় ১৪ শতাংশ এবং লেনদেনের পরিমাণে ১৭ শতাংশ বেড়েছে। ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড ব্যবহারের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে এবং এ ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে অনলাইনে পেমেন্ট প্রদান।
এ নিয়ে ভিসা বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের কান্ট্রি ম্যানেজার সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘আমাদের সর্বশেষ ট্রেন্ড বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বাংলাদেশের মানুষ ডিজিটাল ও কন্টাক্টলেস পেমেন্ট সুবিধার দিকে ঝুঁকছে। ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড, অনলাইন এবং ইন-স্টোর পেমেন্টসহ দেশের মধ্যে ও আন্তর্জাতিক পরিসরে একই প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। আমাদের দক্ষ ভিসা কনসাল্টিং ও অ্যানালিটিকস টিমের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের ভোক্তা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও গ্রাহকদের জন্য নিরাপদ ডিজিটাল পেমেন্ট সুবিধা প্রদান করছি।’
ক্রস-বর্ডার ব্যয় নিয়ে ভিসার বিশ্লেষণে দেখা যায়, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ব্যয়ের ৯০ শতাংশই হয়েছে ২০টি দেশে। এ ক্ষেত্রে শীর্ষ পাঁচ দেশ হচ্ছে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, থাইল্যান্ড ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। গত বছর বাংলাদেশিরা ইন-স্টোর কেনাকাটায় সবচেয়ে বেশি ব্যয় করেছে ভারত, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সিঙ্গাপুরে। ভারত ক্রস-বর্ডার ব্যয়ের শীর্ষে থাকলেও ২০২৪ সালে বাংলাদেশিদের কার্ডের মাধ্যমে ভারতে ব্যয় ১০ শতাংশ কমেছে। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা থাইল্যান্ডে ব্যয় ২০ শতাংশের বেশি বেড়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ল নদ ন র
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ