মিষ্টি খাবার খাওয়ার পরেই কি পানি পান ঠিক?
Published: 5th, March 2025 GMT
বেশিরভাগ মানুষ মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়ার পর পরই পানি খান। অনেকের মতে, মিষ্টি খাওয়ার পরে পানি খাওয়ার অভ্যাস ভালো। কারণ পানি পেটের স্বাস্থ্যের উপর মিষ্টির ক্ষতিকর প্রভাব কমিয়ে দিতে সাহায্য করে। আসলে কি কথাটা ঠিক?
এ প্রসঙ্গে ভারতীয় পুষ্টিবিদ মীনু বালাজি জানান, মিষ্টি খাওয়ার পরে পানি খেলে তা মোটেই শরীরে চিনির ক্ষতিকর প্রভাব কমাতে পারে না। তবে অন্য ভাবে সাহায্য করতে পারে।
মিষ্টি খাওয়ার পরে পানি খেলে কী কী উপকার হয় তা জানিয়েছে এই পুষ্টিবিদ। যেমন-
শর্করার মাত্রা: মিষ্টি খেলে শরীরে একবারে শর্করার মাত্রা অনেকটা বেড়ে যায়। একে বলা হয়‘সুগার স্পাইক’। এটা শুধু ডায়াবেটিস রোগী নয়, সুস্থ মানুষের স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর। পুষ্টিবিদ মীনুর মতে, শরীরে পানি কম থাকলে সুগার স্পাইক বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। শরীরে পানির মাত্রা পর্যাপ্ত থাকলে এই সমস্যা তুলনামূলক কম হবে।
হজম:পানি হজমে সাহায্য করে। পুষ্টিবিদ মীনার মতে.
দাঁতের স্বাস্থ্য: খাবার দাঁতে আটকে থাকলে তা থেকে ব্যাক্টেরিয়া তৈরি হওয়ার ঝুঁকি থাকে। মিষ্টি জাতীয় খাবার ব্যাক্টেরিয়াকে আরও সক্রিয় করে তুলতে পারে। মিষ্টি খাওয়ার পরে পানি খেলে মুখে মিষ্টির টুকরো আটকে থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে। এর ফলে দাঁতের স্বাস্থ্যও ভালো থাকে।
মিষ্টি যাতে পেটের স্বাস্থ্যের ক্ষতি না করে সেজন্য কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখতে বলছেন পুষ্টিবিদরা। যেমন-
১. মিষ্টির সঙ্গে সব সময় ফাইবার, প্রোটিন বা স্বাস্থ্যকর স্নেহ জাতীয় খাবার খান। তাহলে ওই মিষ্টি খাবারের গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের পরিমাণ কমবে। মিষ্টির সঙ্গে এক মুঠো বাদাম, অথবা শুকনো কড়ায় ভাজা সূর্যমুখীর বীজ বা কুমড়োর বীজও খেতে পারলে ভালো।
২. সব থেকে ক্ষতিকর মিষ্টি হল প্রক্রিয়াজাত সাদা চিনি। পেটের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে হলে চিনির বদলে স্বাস্থ্যকর মিষ্টির বিকল্প বেছে নিন। কলা, আপেল, খেজুর অথবা অল্প পরিমাণে গুড় বা মধু খাওয়া যেতে পারে।
৩. অতিরিক্ত পরিমাণে না খেয়ে অল্প পরিমাণে খান। একটা গোটা চকোলেটের বদলে এক টুকরো খান। এক বাটি হালুয়া না খেয়ে দু’চামচ খান। যতটা সম্ভব মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স হ য য কর পর ম ণ
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।