ভারতীয় এলওসি প্রকল্প বন্ধ হবে না: অর্থ উপদেষ্টা
Published: 5th, March 2025 GMT
ভারতীয় লাইন অব ক্রেডিটের (এলওসি) আওতায় চলমান প্রকল্পগুলোর প্রয়োজনীয় উল্লেখ করে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, এলওসি প্রকল্পগুলো বন্ধ হবে না। অর্থনীতির জন্য প্রকল্প নেওয়া হয়, কিন্তু ক্যান্সেল করা খুবই সেনসেটিভ ব্যাপার। এ ব্যাপারে আমি যথেষ্ট যত্নবান। চট করে ক্যান্সেল করে দেবো না।
বুধবার (৫ মার্চ) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে এ কথা বলেন তিনি।
ভারতীয় এলওসির আওতায় প্রকল্পগুলো নিয়ে সরকারের অবস্থান কি জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এলওসি নিয়ে কথা হয়েছে। এলওসি পার্টিকুলার দেশে আসে। ওই দেরি হওয়া মানে আমরা প্রজেক্টটা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করি, অনেকে বলে বন্ধ, না সেটা সম্ভব নয়। একটা প্রজেক্ট হয়েছে, সেটা যে সরকারই করুক এবং ভারত সাহায্য দিচ্ছে, এগুলো প্রয়োজনীয়। অব্যাহত রাখার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি বলেন, কয়েকটায় প্রগ্রেস জিরো থেকে ওয়ান, টু আমরা দেখবো। কিন্তু আপাতত জেনারেললি বন্ধ করার বিষয় নেই। এখানে অর্থনৈতিক দিক ছাড়াও দ্বিপাক্ষিক একটা বিষয় আছে। একটা দেশের সঙ্গে যখন দ্বিপাক্ষিক বিষয় থাকে তখন ওই দেশের প্রাইভেট সেক্টর হোক, গভর্নমেন্ট সেক্টর হোক আমরা সাহায্য-সহযোগিতর জন্য অর্থনীতি দেখি না। অর্থনীতির জন্য একটা প্রকল্প নেওয়া হয়, কিন্তু ক্যান্সেল করা খুবই সেনসেটিভ ব্যাপার। এ ব্যাপারে আমি যথেষ্ট যত্নবান। চট করে ক্যান্সেল করে দেবো না। চট করে আমরা কিছু নিচ্ছিও না।
আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সার্বিকভাবে অর্থনৈতিক খারাপ অবস্থায় আছে তা কিন্তু নয়। একটা বিষয় হয়েছে ব্যবসায় মন্দা, সোর্স অব ইনকাম সেটা কিছুটা কম। কিন্তু একেবারে ধ্বংসের পথ থেকে আমরা উদ্ধার করে নিয়ে এসেছি।
তিনি আরও বলেন, নতুন এমপ্লয়মেন্ট (কর্মসংস্থান) কম হচ্ছে। সেটা আমরা একনেকে বলেছি। ব্যবসা-বাণিজ্য আমরা চেষ্টা করছি। কারণ ব্যবসা-বাণিজ্য সব থেকে বেশি। রিসেন্টলি এসএমই সেক্টরের ছোট ছোট প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে বলা হয়েছে। তবে কিছু লোকের কষ্ট হচ্ছে, সেটা আমরা স্বীকার করছি। তবে প্রাইজের থেকে আয়ের বিষয়টা বড়।
পোশাকখাত নিয়ে করা এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, গার্মেন্টসে আমরা ক্যাশ ইনসেনটিভ দিচ্ছি। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান আছে তাদের ম্যানেজমেন্টের দোষ আছে, কিছু আছে প্রোডাক্টের ডিমান্ড তেমন নেই। সেটার জন্য আমরা চেষ্টা করছি।
আগের সরকারের অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। বেক্সিন কর ১৪ টি প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে করা এক প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, বেক্সিমকোরটা ইউনিক চ্যালেঞ্জ। ওদের দোষে, করাপশনের দোষ, আর ম্যানেজমেন্টের দোষ। প্রাইভেট দায় সরকারের ঘাড়ে নেওয়া ঠিক না। সরকারের টাকা মানে তো জনগণের টাকা। ওটা তো অন্য কাজে ব্যয় করতে হয় আমাদের। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সামাজিক বিষয় আছে। তাদের প্রতি (বেক্সিমকোর শ্রমিক) আমাদের নজর আছে। আমরা চেষ্টা করছি। বিডার সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। এক্সপোর্ট প্রসেসিংজনের সঙ্গে কথা হয়েছে। যদি রিলোকেট করা যায়।
বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ে করা এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বাজার ব্যবস্থা নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। আরেকটু বেটার হলে ভালো হতো। গত বছরের তুলনায় অনেক পণ্যের দাম এখন কম।
সামনে গরম আসছে, এলএনজি সংকট হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আছে কি? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এলএনজি সংকটের কোনো সম্ভাবনা নেই। দুইটা লটে আজকে আমরা এলএনজি আমদানি করতে বলেছি। কন্টিনিউয়াসলি আমরা বলছি- কষ্ট বেশি হয় বা না হোক আমরা এনসিওর করব সাপ্লাইটা।
তিনি বলেন, মেইনলি আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের বিষয়টা প্রথম, আর জনগণের জীবনযাত্রার বিষয়টি আছে।
ঢাকা/হাসনাত/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক য ন স ল কর প রকল প সরক র র আম দ র র জন য ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
পিটার হাস কোন কোম্পানিতে আছেন, ভালো করে জানি না: অর্থ উপদেষ্টা
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করা হয় আন্তর্জাতিক বাজার যাচাই করে। যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, চীন, সিঙ্গাপুর—যে দেশ থেকেই আনা হয় না কেন, তুলনামূলক দর দেখা হয়। বিষয়টি এত সহজ নয় যে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কোম্পানিকে কাজ দিয়ে দেওয়া হবে। আর পিটার হাস কোন কোম্পানিতে আছেন, তা ভালো করে জানিও না আমরা।’
আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এ কথাগুলো বলেন।
অর্থ উপদেষ্টার কাছে প্রশ্ন ছিল, এলএনজি আমদানিতে বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের কোম্পানিকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে কি না।
মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানি অ্যাকসিলারেট এনার্জির স্ট্র্যাটেজিক উপদেষ্টা পদে গত বছরের সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে যোগ দিয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। এর আগে তিনি ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের ১৭তম রাষ্ট্রদূত হিসেবে ২০২২ সালের মার্চ থেকে গত এপ্রিল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
অ্যাকসিলারেট এনার্জি যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের উডল্যান্ডে অবস্থিত বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ এলএনজি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। এলএনজি সরবরাহের পাশাপাশি এলএনজি রূপান্তরের ভাসমান টার্মিনাল ও অবকাঠামো উন্নয়নে কাজ করে তারা।
বিভিন্ন দেশের ২৩টি কোম্পানি থেকে বাংলাদেশ এলএনজি আমদানি করছে। এর মধ্যে অ্যাকসিলারেট এনার্জিও রয়েছে।
কর্মসংস্থানকে বড় চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বেশি কর্মসংস্থান হয় বেসরকারি খাতে। ব্যবসা–বাণিজ্য যদি একটু মন্থর হয়ে যায়, সেটা অবশ্যই প্রভাব পড়ে। ব্যবসাটা মাঝখানে একটু মন্থর ছিল, এখন একটু ভালো হয়েছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা পাল্টা শুল্কের হার ২০ শতাংশ থেকে আরও কমবে কি না জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা নির্ভর করবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ওপর। তারা ঘাটতিটা কমানোর জন্য কী কী আমদানি করতে পারে, দেখছে। সেখানে মোটামুটি আমরা ভালো অবস্থানে আছি।’
সার আমদানি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে কোনো ব্যবস্থা নেবেন কি না জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা বিষয়টা দেখছি। চট করে ব্যবস্থা নেব না। বিস্তারিত জানি না, সার আনে বেশির ভাগ কৃষি ও শিল্প মন্ত্রণালয়। এটা তাদের দায়িত্ব। বিষয়টা আরও খতিয়ে দেখব।’