‘পার্সিয়ান টেল’ থিমে সারার আকর্ষণীয় ঈদ আয়োজন
Published: 5th, March 2025 GMT
ঈদ মানেই নতুন পোশাক, উৎসবের রং আর উদ্যাপনের আনন্দ! ঈদ আয়োজনের এই ঐতিহ্যকে আরও রঙিন করে তুলতে দেশের জনপ্রিয় ফ্যাশন ব্র্যান্ড ‘সারা লাইফস্টাইল’ নিয়ে এসেছে ‘পার্সিয়ান টেল’ থিমে পবিত্র ঈদুল ফিতরের আকর্ষণীয় সংগ্রহ।
পারস্যের রাজকীয় নকশা ও আধুনিক ট্রেন্ডের অপূর্ব সংমিশ্রণে এবারের সংগ্রহে তরুণ-তরুণী, শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সীর জন্য থাকছে আরামদায়ক পোশাকসহ পার্টি ও ফেস্টিভ লুকের দারুণ সব আউটফিট।
সারার এবারের ঈদ আয়োজনের পোশাকের ডিজাইনে থাকছে স্ক্রিন প্রিন্ট, সাবলিমেশন প্রিন্ট, কারচুপি, এমব্রয়ডারি ও অল ওভার প্রিন্ট। পোশাকের মোটিফ ও নকশায় রাখা হয়েছে উৎসবের আমেজ। এ ছাড়া অ্যাবস্ট্র্যাক্ট, ফ্লোরাল, ট্র্যাডিশনাল ও জিওমেট্রিক বিভিন্ন মোটিফ রয়েছে ডিজাইনে। আনারকলি, প্রিন্সেস লাইন, ডাবল লেয়ার, এ লাইন, সিমেট্রিক, অ্যাসিমেট্রিক বিভিন্ন কাজ থাকছে পোশাকগুলোর প্যাটার্নে। তা ছাড়া নিখুঁত হাতের কারুকাজ দিয়েও সাজানো হয়েছে সারার ঈদুল ফিতরের এবারের আয়োজন। এসব পোশাকে ফেব্রিক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে কটন, জর্জেট, ভিসকস, ডবি সিল্ক, ক্রেপ জর্জেট, নিট, ডেনিম, জ্যাকার্ড কটন ইত্যাদি।
ঈদুল ফিতরের এবারের আয়োজনে মেয়েদের জন্য সারা লাইফস্টাইল এনেছে শাড়ি, থ্রি–পিস, ফ্যাশন টপস, আনারকলি থ্রি–পিস, কুর্তি, কো–অর্ডস, ডেনিম প্যান্ট, শ্রাগ, ওয়ান–পিস, টু–পিস, স্কার্ফ, শারারা, কাফতান ও টি–শার্ট। ছেলেদের জন্য থাকছে এক্সক্লুসিভ পাঞ্জাবি, ক্যাজুয়াল শার্ট, ফরমাল শার্ট, টি–শার্ট, পোলো শার্ট, ডেনিম প্যান্ট, চিনো প্যান্ট, কার্গো প্যান্ট, কোটি, পায়জামা ইত্যাদি।
সারার ঈদ আয়োজনে গুণগত মান ও ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতার বিষয়টি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। আকার, ডিজাইন ও প্যাটার্নের ভিন্নতার দিক বিবেচনা করে এসব পোশাকের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি থাকছে এক্সক্লুসিভ পাঞ্জাবি ও শাড়ি।
মেয়েশিশুদের জন্য টি-শার্ট, পার্টি ফ্রক, কটন ফ্রক, থ্রি–পিস, ফ্যাশন টপস, টু–পিস, লেহেঙ্গা; ছেলেশিশুদের জন্য সিঙ্গেল শার্ট, ফ্যাশনেবল শার্ট-প্যান্ট সেট, পাঞ্জাবি, পায়জামা, ডেনিম প্যান্ট, নিট প্যান্ট, টি–শার্ট, ইনফ্যান্ট সেট, নিউ বর্ন সেট, ইনফ্যান্ট পাঞ্জাবি সেট, পোলো শার্ট ইত্যাদি ছাড়াও রয়েছে বাবা-ছেলে-মা-মেয়ে এবং কাপলদের জন্য একই ডিজাইনের বিভিন্ন পোশাকের আয়োজন।
উল্লেখ্য, স্নোটেক্স গ্রুপের লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড সারা কাজ শুরু করেছে ২০১৮ সালের মে মাসে।
দেশজুড়ে থাকা আউটলেটের পাশাপাশি সারার নিজস্ব ওয়েবসাইট , ফেসবুক পেজ এবং ইনস্টাগ্রাম থেকে ক্রেতারা ঢাকার ভেতরে অর্ডার করে হোম ডেলিভারি পেতে পারেন। এ ছাড়া ঢাকার বাইরে সারা দেশে কুরিয়ারের মাধ্যমেও আপনার অর্ডার করা পণ্য ডেলিভারি পাবেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
তুলশীগঙ্গার তীরে সন্ন্যাসতলীর শতবর্ষী ঘুড়ির মেলা
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের মহব্বতপুর গ্রাম ঘেঁষে তুলশীগঙ্গা নদীর অদূরে সন্ন্যাসতলীর বটতলা। জায়গাটিতে প্রায় একশ বছর আগে থেকে বাংলা জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ শুক্রবার আয়োজন হয় ঘুড়ির মেলা। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। অন্তত ৫০ গ্রামের হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে শুক্রবার সন্ন্যাসতলী ঘুড়ি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মেলার দিনক্ষণ মনে রেখে সময়মতো দোকানিদের পাশাপাশি দর্শনার্থীরা ভিড় জমান নিভৃত পল্লীতে। আগে মেলার দিন বৃষ্টি হওয়া যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটেছে। প্রচণ্ড গরম ও তাপপ্রবাহের মধ্যেই চলে এ আয়োজন। বৈরী পরিবেশের কারণে উৎসবের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দারা বলছেন, সন্ন্যাসতলীর এ ঘুড়ি উৎসব শুরুর দিন বিকেলে বটতলায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় সন্ন্যাস পূজা পালন করেন। তাদের এ পূজা-অর্চনা ঘিরেই মূলত এ মেলার উৎপত্তি। তবে শুরুর কথা কেউ বলতে পারেননি। প্রবীণরা শুধু জানেন, একশ বছরের বেশি সময় ধরে তারা এ মেলার আয়োজন দেখে আসছেন।
মেলার নিজস্ব জায়গা না থাকলেও এর ব্যাপ্তি প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। প্রচণ্ড গরমের মধ্যেই এক দিনের এ মেলা ঘিরেই জেলার জামালগঞ্জ চারমাথা থেকে ঐতিহাসিক আছরাঙ্গাদীঘি পর্যন্ত রকমারি পণ্যের দোকান বসে। এখান থেকে সংসারের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন আসবাব থেকে শুরু করে ছোট মাছ ধরার বাঁশের তৈরি পণ্য খলসানি, টোপা, ডালা, চালুন কিনে নেন অনেকে।
সুতার তৈরি তৌরা জাল, গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত দ্রব্যাদি, বিভিন্ন ধরনের খেলনা, মিষ্টান্ন, প্রসাধনী, মাটির তৈজসপত্রসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি হয়। শিশুদের বিনোদনের জন্য ছিল নাগরদোলার ব্যবস্থাও। আর মেলার বড় আকর্ষণ ঘুড়ি ওড়ানো ও বিক্রি। পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা এসেছিলেন ঘুড়ি বিক্রি করতে।
প্রচণ্ড গরমের পাশাপাশি তেমন হাওয়া-বাতাস না থাকায় এবার ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা সেভাবে জমে ওঠেনি। তবে ঘুড়ি বেচাকেনা ও শিশু-কিশোরদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। এ উপলক্ষে আসা হাজার হাজার দর্শনার্থীর নিরাপত্তার জন্য মেলায় সার্বক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টহল ছিল।
আদমদীঘির শিববাটি গ্রামের ঘুড়ি ব্যবসায়ী সালাম হোসেনের ভাষ্য, সন্ন্যাসতলীর মেলা বড় হওয়ায় তিনি এসেছেন ঘুড়ি বিক্রির জন্য। মেলায় প্রত্যাশা অনুযায়ী ঘুড়ি বিক্রি করতে পেরে তিনি খুশি। জয়পুরহাটের পার্বতীপুর এলাকার ঘুড়ি ব্যবসায়ী মফিজ উদ্দিন ও মজনু সরদার বলেন, পূর্বপুরুষের আমল থেকে এ মেলার কথা শুনে আসছেন তারা।
মেলা উদযাপন ও পূজা কমিটির সদস্য মহব্বতপুর গ্রামের মন্টু মণ্ডল বলেন, মেলাটি হিন্দু সম্প্রদায়ের হলেও এটি আসলে সব ধর্মালম্বীর মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে।
মামুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মিলন হোসেনের ভাষ্য, এক দিনের আয়োজনে যে এত লোকের সমাগম হতে পারে, তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। মেলায় যেন অনৈতিক কর্মকাণ্ড না হয়, সে ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ক্ষেতলাল থানার ওসি মোহাম্মদ ফরিদ হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং মেলায় আসা দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ প্রশাসন সতর্ক আছে। মেলায় অনৈতিক আচরণ লক্ষ্য করা গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।