অনলাইনে বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম এখন ইউটিউব। ভিডিও দেখার পাশাপাশি ইউটিউবে ভিডিও প্রকাশ করে আয়ও করছেন অনেকে। ব্যবহারকারীদের বর্তমানের তুলনায় আরও ভালোভাবে ভিডিও দেখার সুযোগ দিতে নকশায় পরিবর্তন আনার পাশাপাশি সাবস্ক্রিপশনভিত্তিক কনটেন্টের দিকে ঝুঁকছে ভিডিও দেখার জনপ্রিয় ওয়েবসাইটটি। দ্য ইনফরমেশনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেটফ্লিক্স ও অ্যামাজন প্রাইম ভিডিওর মতো প্রতিদ্বন্দ্বী প্ল্যাটফর্মগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে তৃতীয় পক্ষের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তৈরি কনটেন্ট যুক্ত করতে পারে ইউটিউব।

দ্য ইনফরমেশনের তথ্যমতে, বিজ্ঞাপননির্ভর মডেলের বাইরে বিকল্প আয়ের পথ তৈরির লক্ষ্যে ইউটিউব আবারও প্রাইমটাইম চ্যানেলস সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করেছে। তবে বড় চ্যালেঞ্জ হলো সাবস্ক্রিপশনভিত্তিক কনটেন্ট আরও দৃশ্যমান করা এবং বিরক্তি তৈরি না করে স্বাভাবিক ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করা। নতুন নকশায় ইউটিউব অ্যাপের বিন্যাস নেটফ্লিক্স বা ডিজনি প্লাসের মতো হতে পারে। ফলে বিভিন্ন অনুষ্ঠান সারিবদ্ধভাবে পর্দায় দেখা হবে। সাবস্ক্রিপশনভিত্তিক কনটেন্টের জন্য প্রাইমটাইম চ্যানেলস বিভাগকে আরও সুস্পষ্টভাবে সাজানো হতে পারে।

ইউটিউবের জ্যেষ্ঠ পণ্য ব্যবস্থাপক কার্ট উইলমস জানিয়েছেন, ব্যবসার মডেল বা কনটেন্টের ধরন যেমনই হোক, ইউটিউবে সবকিছু একসঙ্গে থাকবে। নতুন বিন্যাসের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো ইউটিউব কনটেন্ট নির্মাতারা (ক্রিয়েটর) তাঁদের ভিডিও নির্দিষ্ট শো পেজে পর্ব ও সিজন অনুযায়ী সাজানোর সুযোগ পাবেন। অনেক কনটেন্ট নির্মাতাই সিজনভিত্তিক সিরিজ বা দীর্ঘমেয়াদি ভিডিও তৈরি করেন। তবে প্লেলিস্ট ব্যবস্থার কারণে এসব কনটেন্ট খুঁজে পাওয়া অনেক সময় কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। নতুন বিন্যাসের ফলে এসব কনটেন্ট আরও সহজে খুঁজে পাওয়া যাবে, যা ব্যবহারকারীদের ভিডিও দেখার অভিজ্ঞতাও উন্নত করবে।

আরও পড়ুনইউটিউব চ্যানেল জনপ্রিয় করার ৭ কৌশল১৪ জানুয়ারি ২০২৩

নতুন পরিবর্তনের বিষয়ে কার্ট উইলমস বলেন, ‘আমাদের টিভি অ্যাপে যখন কেউ কোনো অনুষ্ঠান খুঁজবেন, তখন এটি এমনভাবে প্রদর্শন করা হবে যে সেটি প্রাইমটাইম চ্যানেলসের কনটেন্ট নাকি কোনো কনটেন্ট নির্মাতার তৈরি ভিডিও, তা বোঝা যাবে না।’ ইউটিউবের নতুন নকশা ও কনটেন্ট ব্যবস্থাপনার এই পরিবর্তন শিগগিরই চালু হতে পারে।

সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে

আরও পড়ুনভিডিওতে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে এক বছরে ইউটিউবের আয় কত০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কনট ন ট ন ক কনট ন ট ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

মার্জিন ঋণ নিতে বিনিয়োগ লাগবে কমপক্ষে ১০ লাখ টাকা

পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের মার্জিন ঋণ নিতে হলে বিনিয়োগ থাকতে হবে কমপক্ষে ১০ লাখ টাকা। এছাড়া থাকতে হবে নিয়মিত আয়ের উৎস। আর বিনিয়োগের ৬ মাসের আগে ঋণ পাবে না কোনো বিনিয়োগকারী। একইসঙ্গে মিউচুয়াল ফান্ড এবং কোম্পানির হিসাবেও মার্জিন ঋণ দেওয়া হবে না। চূড়ান্ত মার্জিন ঋণ নীতিমালায় এসব সুপারিশ করেছে পুঁজিবাজার সংস্কারে গঠিত টাস্কফোর্স কমিটি।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) আগারগাঁওয়ে সিকিউরিটিজ কমিশন ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মার্জিন রুলস- ১৯৯৯ যুগোপযোগী করার চূড়ান্ত সুপারিশ প্রসঙ্গে এসব তথ্য তুলে ধরেন পুঁজিবাজার টাস্কফোর্সের সদস্যরা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্সের সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন, হুদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোং এর সিনিয়র পার্টনার এ এফ এম নেসার উদ্দীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন এবং পুঁজিবাজার সংস্কার ফোকাস গ্রুপের সদস্য প্রাইম ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের এমডি এবং সিইও মো. মনিরুজ্জামান।

টাস্কফোর্সের সদস্যরা বলেন, পুঁজিবাজার অংশীজনদের সাথে আলোচনা করেই সুপারিশ চূড়ান্ত করেছে টাস্কফোর্স। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির পর ৩ মাসের আগে মার্জিন ঋণ না দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে, মার্জিন নিয়ে শেয়ারবাজারে কারসাজি বন্ধ হবে। মার্জিন ঋণ নিয়ে সুশাসন না থাকায় বিপুল অংকের নেগেটিভ ইক্যুইটি সৃষ্টি হয়েছে। যার কারণে বিনিয়োগকারীর পাশপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং পুঁজিবাজার। মিথ্যা তথ্য দিয়ে এবং মার্জিন খারাপ কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কারসাজি করা হয়েছে। যে কারণে অনেক বিনিয়োগকারী নিঃস্ব হয়ে গেছে। বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠা টাস্কফোর্সের মূল্য উদ্দেশ্য।

এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন বলেন, অনেক স্টেকহোল্ডার দাবি করছেন তাদের সাথে বসা হয়নি। অথচ আমরা দেখলাম তাদের সাথে আমরা ৩ বারও বসে ফেলেছি। তবে কেন এরকম মিস কমিউনিকেশন। আমরা অংশীজনদের বাহিরেও যারা বাজার সম্পর্কে অভিজ্ঞ তাদের সাথেও আমরা বসেছি। এরপরেও যদি মনে হয় আমরা কিছু বাদ দিয়েছি বা গ্যাপ ছিল, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে জানালে তা আমরা যুক্ত করে দিব। তবে অংশীজনদের থেকে বেশি আমরা সাধারণ মানুষদের থেকে অনেক কিছু পেয়েছি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন বলেন, প্রতিদিন পত্র-পত্রিকায় লেখা হচ্ছে নেগেটিভ ইক্যুইটি নিয়ে। যার কারণ বাজার অচল অবস্থায় চলে গেছে। সে অবস্থাটাকে মাথায় রেখে আমরা চিন্তা করেছি, এর অন্যতম কারণ হলো মার্জিন রুলস। কারণ মার্জিন রুলসটা যদি প্ল্যান করে দেওয়া হতো, গভর্নেন্সটা যদি সঠিক থাকতো, তাহলে এ ধরনের অবস্থা তৈরি নাও হতে পারতো। তাই মার্জিন রুলসকে আমরা টপ প্রায়োরিটি আইটেম ধরেছি। পৃথিবীতে মার্জিন রুলসকে শর্টটার্ম ওয়ে হিসেবে নেওয়া হয়। কোথাও কোথাও ১:৩/৪ রেশিওতে মার্জিন ঋণ দেওয়া হচ্ছে৷ এগুলা কিভাবে হয়েছে? এরপর বাজারে নেগেটিভ ইক্যুইটি ক্রিয়েট হয়েছে। আমরা চাচ্ছি এই জিনিসগুলোর যেন পুনরাবৃত্তি বাজারে না হয়। মার্জিন নিয়ে আর গ্যামব্লিং করা যাবেনা। মার্জিন নিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোকে শেষ করে দেয়া হয়েছে। এতো পরিমাণ নেগেটিভ ইক্যুইটি না থাকলে বাজারের আজ এই পরিস্থিতি হতো না।

হুদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোং এর সিনিয়র পার্টনার এ এফ এম নেসার উদ্দীন বলেন, আমাদের কাজে সহযোগিতা করেছে ফোকাস গ্রুপ। মূল কাজ করেছে টাস্কফোর্স। আমরা কাজ করতে যেয়ে পাবলিকের কাছ থেকে অনেক পরামর্শ পেয়েছি। স্টেকহোল্ডারদের কাছ থেকেও পেয়েছি, তবে পাবলিক থেকে পরামর্শ বেশি এসেছে। এটা খুব ভালো বিষয়। কারণ যত বেশি পরামর্শ আসবে, আমরা তত বেশি রিফাইন করার সুযোগ পাব।

সংবাদ সম্মেলনে একটি উপস্থাপনায় পুঁজিবাজার সংস্কার ফোকাস গ্রুপের সদস্য প্রাইম ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের এমডি এবং সিইও মো. মনিরুজ্জামান বলেন, আজকে আমার খুবই ভালো লাগছে যে, এই প্রথম বাংলাদেশে আইনি ফরমেশন করতে যাচ্ছি, যেখানে ব্রেইন স্টর্মিং ড্রাফটিং হয়েছে গ্রাউন্ড লেভেল থেকে। এ মার্কেটে যারা কাজ করেন, তাদের আইডিয়াগুলো নিয়েই ড্রাফট করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা বিএসইসির ওয়ার্কিং টিমের সঙ্গে আলোচনা করেছিলাম। এছাড়া মার্কেটের বড় বড় স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের কাছ থেকে লিখিত প্রস্তাব নিয়ে মার্জিন রুলস- ১৯৯৯ যুগোপযোগী করার চূড়ান্ত সুপারিশ তৈরি করেছি।

এর আগে গত বছরের ৭ অক্টোবর বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ স্বাক্ষরিত আদেশে ‘পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্স’ গঠন করা হয়। গঠিত টাস্কফোর্সের সদস্যরা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এ এম মাজেদুর রহমান, হুদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোং এর সিনিয়র পার্টনার এ এফ এম নেসার উদ্দীন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মোস্তফা আকবর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন।

ঢাকা/এনটি/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মার্জিন ঋণ নিতে বিনিয়োগ লাগবে কমপক্ষে ১০ লাখ টাকা