অগ্রযাত্রার অগ্রদূত: স্বপ্ন, সংগ্রাম ও সফলতার গল্পকথা
Published: 6th, March 2025 GMT
ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘পাঠাও’ প্রকাশিত ‘অগ্রযাত্রার অগ্রদূত’ একটি অনুপ্রেরণামূলক সংকলন গ্রন্থ, যেখানে তুলে ধরা হয়েছে বিভিন্ন মানুষের জীবনের স্বপ্ন, সংগ্রাম ও সফলতার বাস্তব গল্প। পাঠাও দীর্ঘ এক দশক ধরে শুধু একটি রাইড শেয়ারিং, কুরিয়ার সার্ভিস বা ফুড ডেলিভারি প্ল্যাটফর্ম হিসেবেই নিজেকে তুলে না ধরে মানুষের জীবনে পরিবর্তন আনার একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করেছে। বইটিতে সংকলিত গল্পগুলো এই ছোট ছোট পরিবর্তনগুলোর সাক্ষ্য বহন করে, যা মানুষকে নতুন করে স্বপ্ন দেখার অনুপ্রেরণা ও সাহস জোগাবে।
বইটির শুরুতেই রয়েছে পাঠাওয়ের শুরুর দিনগুলোর ঝলক। প্রথম গল্পের শিরোনাম ‘পাঠাও ও আমি’। যেখানে পাঠাওয়ের প্রধান নির্বাহী ফাহিম আহমেদ তুলে ধরেছেন কীভাবে সাধারণ একটি আইডিয়া থেকে দাঁড় হয়ে গেল বিশাল এই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম। পাঠাওয়ের যাত্রাপথ যে খুব একটা মসৃণ ছিল, তা কিন্তু নয়। বিভিন্ন চড়াই-উতরাই পার করেই তাদের আজকের অবস্থান। কোভিড মহামারি চলাকালে বিভিন্ন ঝড়ঝাপটা থেকে শুরু করে কীভাবে প্রতিদ্বন্দ্বীদের হার মানিয়ে নিজেদের অবস্থান ধরে রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি, লেখায় সেই গল্পই তুলে ধরেছেন তিনি। পাশাপাশি ২০২৪-এর জুলাই আন্দোলনে জনসাধারণের সঙ্গে রাজপথে থেকে পুরো গণ–অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা ও ভূমিকার ওপরও আলোকপাত করেছেন তিনি।
১০ বছরের পথচলায় পাঠাওয়ের সঙ্গে অনেকের জীবনেই তৈরি হয়েছে দারুণ কিছু গল্প। কখনো ফুডম্যান কিংবা রেস্টুরেন্টকে কেন্দ্র করে, কখনো আবার একজন ব্যবসায়ী এবং একজন ডেলিভারি এজেন্টকে কেন্দ্র করে। এমনকি গল্পগুলোতে উঠে আসে ২০২৪-এর জুলাই আন্দোলনে পাঠাওয়ের এমপ্লয়ি, রাইডার, ক্যাপ্টেন ও ফুডম্যানের অংশগ্রহণের কথাও। এত সব গল্পের ভিড়েও থেকে যায় কিছু এগিয়ে যাওয়ার, ভিন্ন কিছু করার, সবার সামনে একটি উদাহরণ তৈরি করার মতো গল্প। পাঠাওয়ের সঙ্গে কাজ করে অনেকেই এই প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রতিনিয়ত তৈরি করছেন দারুণ কিছু বলার মতো গল্প। এমনই উদাহরণ তৈরি করার মতো একটি গল্পের নায়ক মাসুমা আক্তার। তিনি একজন বাইক রাইডার। মাসুমা তাঁর গল্পে তুলে ধরেছেন, কীভাবে সমাজের প্রচলিত সংস্কার ভেঙে তিনি পাঠাওয়ে রাইডার হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। তথাকথিত টিউশনি কিংবা অন্য খণ্ডকালীন চাকরির পেছনে না ছুটে, এমনকি সমাজের বাঁকা চোখকে তোয়াক্কা না করে নিজের মতো এগিয়ে যাচ্ছেন। যা অন্য সব নারীর জন্য দৃষ্টান্তমূলক উদাহরণ হিসেবেই কাজ করছে।
সেই সঙ্গে বইটিতে রয়েছে আরও কিছু নারীর সফলতার গল্প। ‘আয়েশা’স কিচেন’ গল্পের আয়েশা লেখায় তুলে ধরেছেন কীভাবে তাঁর স্বামীর চাকরি চলে যাওয়ার পর নিজেই সংসারের হাল ধরলেন নিজের তৈরি বিরিয়ানি ঘরে ঘরে ডেলিভারি করে। তবে পাঠাওয়ে ‘ফুড ডেলিভারি সার্ভিস’ না থাকলে আজ হয়তো তাঁর এই সফলতার গল্প খানিকটা দমেই যেত। কারণ, তিনি যখন অন্য সব ফুড ডেলিভারি সার্ভিসের কমিশনের ঝক্কি পোহাতে শুরু করলেন, তখনই খুব অল্প কমিশনে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় পাঠাও।
আয়েশার মতো অসংখ্য বেকার তরুণ-তরুণী তাঁদের ভাগ্য বদলাতে কাজ করছেন পাঠাওয়ের সঙ্গে। ‘আদনান দ্য বাইকার’ শিরোনামের গল্পটিতে আদনান নামের এক যুবকের জীবনসংগ্রামের কথা উঠে এসেছে। তিনি লিখেছেন, কীভাবে পাঠাও রাইডার হয়ে নিজেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার খরচ বহন করে মা–বাবার স্বপ্ন পূরণ করেছেন। এমনই ২৫টি অনুপ্রেরণামূলক গল্প স্থান পেয়েছে ‘অগ্রযাত্রার অগ্রদূত’ বইয়ে। যা দেশের শত শত তরুণ-যুবককে সামাজিক-অর্থনৈতিক প্রতিকূলতা জয় করে নিজ নিজ স্বপ্ন পূরণের পথে এগিয়ে যেতে ভূমিকা রাখবে।
পাঠাও শপ, বুকওয়ার্ম, রকমারি, ওয়াফিলাইফ, বইসদাই, পিবিএসসহ বেশ কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম এবং দেশজুড়ে বিভিন্ন বইয়ের দোকানে পাওয়া যাবে ‘অগ্রযাত্রার অগ্রদূত’ বইটি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প ল য টফর ম সফলত র ক জ কর র জ বন
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ