পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে সাতক্ষীরায় নিম্নআয়ের মানুষের জন্য ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় পয়েন্টে উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পরও এক ভ্যানচালক পণ্য কিনতে পারেননি। বাধ্য হয়ে তাঁকে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। তাঁর মতো অনেকে পণ্য না পেয়ে খালি হাতে ফিরেছেন। সাতক্ষীরা শহরের পুরাতন কোর্ট মসজিদের সামনে টিসিবির ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্রে এমন পরিস্থিতির কথা জানা যায়।

গতকাল বুধবার থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ও জেলা প্রশাসনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় সাতক্ষীরায় শুরু হয়েছে পাঁচটি পয়েন্টে সাশ্রয়ী মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রি। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সাতক্ষীরা শহরের শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্ক ও স্টেডিয়াম গেটের সামনে কয়েক শ নারী-পুরুষকে টিসিবির পণ্য ক্রয়ের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে টিসিবির পণ্যবাহী ট্রাকের দেখা না পেয়ে অনেকেই বাড়ি ফিরে গেছেন। দুপুরের দিকে শহরের পুরাতন কোর্ট মসজিদের সামনে টিসিবির পণ্যবাহী ট্রাকের পেছনে মানুষের দীর্ঘ লাইন চোখে পড়ে।

প্রতিটি ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্র থেকে প্রতি প্যাকেট ৪৫০ টাকা দরে ৪০০টি প্যাকেট বিক্রির সুযোগ আছে। কিন্তু কোর্ট মসজিদের সামনের বিক্রয়কেন্দ্রে হাজারখানেক মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ফলে অধিকাংশ মানুষকে পণ্য না পেয়ে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। ৪৫০ টাকার প্রতিটি প্যাকেটে আছে দুই লিটার সয়াবিন তেল, দুই কেজি ডাল, এক কেজি ছোলা ও এক কেজি চিনি; যার বাজারমূল্য ৮০০ টাকার বেশি।

শহরের কোর্ট মসজিদের সামনে টিসিবির পণ্যবাহী ট্রাকের পেছনে সকাল থেকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য কিনতে পারেননি রাজারবাগান এলাকার আবদুল রশিদ। তিনি বলেন, তিনি লাইনে পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় দাঁড়িয়ে যখন ট্রাকের কাছে পৌঁছেছেন, তখন পণ্য ফুরিয়ে গেছে। ফলে তিনি আর পণ্য কিনতে পারেননি। এই পণ্য কিনতে এসে সারা দিন ভ্যানও চালাতে পারেননি। এতে তাঁর দুই দিকেই লোকসান হয়েছে। তিনি পণ্যের পরিমাণ বাড়ানোর দাবি জানান।

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রণয় বিশ্বাস বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের জন্য রমজান উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে সাশ্রয়ী মূল্যে প্রতিদিন শহরের ভিন্ন ভিন্ন পাঁচটি পয়েন্টে দুই হাজার প্যাকেট টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু করা হয়েছে; যা চলবে ২৪ মার্চ পর্যন্ত। যতক্ষণ পণ্য থাকবে, ততক্ষণ পণ্য বিক্রি করা হবে। যিনি আগে আসবেন, তিনি আগে পাবেন। তাঁরা বিষয়টি তদারকি করছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প র নন শহর র

এছাড়াও পড়ুন:

গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ঢাবি শিবিরের ৩ দিনব্যাপী কর্মসূচি

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা।

বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন শাখা সভাপতি এসএম ফরহাদ।

আগামী ৫, ৬ ও ৭ আগস্ট এই কর্মসূচিগুলো অনুষ্ঠিত হবে। আয়োজনে থাকছে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, বিপ্লবী নাটক, গান, কবিতা, আলোচনা সভা ও বিশেষ চিত্র প্রদর্শনী। কর্মসূচির সূচনা হবে ৫ আগস্ট (মঙ্গলবার) ভোর ৫টায় প্রতীকী সাইকেল র‌্যালির মাধ্যমে, যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে শুরু হয়ে গণভবন পর্যন্ত যাবে।

আরো পড়ুন:

মেয়াদোত্তীর্ণ অগ্নিনির্বাপকে চলছে বেরোবি

তাহলে তো স্পন্সর নিয়ে প্রোগ্রাম করলেই চাঁদাবাজি: সালাউদ্দিন

সকাল ৯টায় টিএসসিতে থাকবে সাধারণ নাস্তার আয়োজন। এর পরপরই প্রদর্শিত হবে ‘জুলাই বিপ্লব’ ভিত্তিক একটি প্রামাণ্যচিত্র। একইসঙ্গে বিপ্লবী গান ও কবিতা পরিবেশিত হবে । সকাল ১০টা থেকে শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধাদের মুখে অভ্যুত্থানের অভিজ্ঞতা শোনার আয়োজন থাকবে।

দুপুর ২টায় একটি মাইম পরিবেশনা ও নাটক মঞ্চস্থ হবে। এরপর বিকেল সাড়ে ৩টা ও সাড়ে ৫টায় পরপর আরো দুটি নাটক প্রদর্শিত হবে। সন্ধ্যা ৬টায় ব্যতিক্রমী আয়োজন ‘প্ল্যানচ্যাট বিতর্ক’ অনুষ্ঠিত হবে। এটি একটি প্রতীকী বিতর্ক, যেখানে গণআন্দোলনে নিহতদের উত্তরাধিকার ও আত্মিক উপস্থিতিকে ঘিরে আলাপ-প্রতিআলাপের একটি রূপক পরিসর গড়ে উঠবে ।

৬ আগস্ট দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচির শুরুতেই থাকবে রাজনৈতিক ও দার্শনিক আলোচনা সভা। সকাল ১০টার দিকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও ফ্যাসিবাদ পলায়নের ১ বছর: প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর বিকেল ৩টার দিকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী ছাত্ররাজনীতি ও ডাকসু নির্বাচন’ বিষয়ে আলোচনা হবে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ‘নয়া রাজনৈতিক বন্দোবস্তে ইসলাম প্রসঙ্গ’ শীর্ষক মতবিনিময়ের মাধ্যমে পর্দা নামবে দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচির।

কর্মসূচির তৃতীয় দিন ৭ আগস্ট দিনব্যাপী চলবে বিশেষ চিত্র প্রদর্শনী ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন। সেখানে ‘জুলাই অভ্যুত্থান’ ও গণআন্দোলন সংশ্লিষ্ট নানা দলিল, ছবি ও ভিডিও উপস্থাপন করা হবে।

সার্বিক বিষয়ে ঢাবি শাখা ছাত্রশিবির সভাপতি এসএম ফরহাদ বলেন, “২০২৪ সালের জুলাই মাসে ঘটে যাওয়া গণজাগরণ ও ছাত্র প্রতিরোধ ছিল বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক অনন্য মাইলফলক। সেই ঘটনার স্মরণে এবং তা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের পথরেখা নির্ধারণের প্রয়াসে ঢাবির টিএসসি প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাবি শাখা আয়োজন করতে যাচ্ছে তিন দিনব্যাপী ‘আমরাই ৩৬ জুলাই: আমরা থামবো না’ শীর্ষক অনুষ্ঠান।”

তিনি বলেন, “এ আয়োজন হবে শিল্প, সংস্কৃতি, স্মৃতি ও রাজনৈতিক ভাবনার এক সংমিশ্রণ। জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের অভিজ্ঞতা আমাদের অনুপ্রেরণা। আর সংস্কৃতির মাধ্যমে আমরা সেই প্রতিরোধ চেতনাকে নতুন প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চাই।”

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফতুল্লায় যুবদল নেতা শাহিনের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া  
  • শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জেলা আইনজীবী ফোরামের পদযাত্রা
  • রাবি উপাচার্যের চেয়ার টেনে পদ্মায় ফেলার আহ্বান ছাত্রদল সভাপতির
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা
  • গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ঢাবি শিবিরের ৩ দিনব্যাপী কর্মসূচি