ইউনূস সরকারের কাজের তালিকা থাকা জরুরি ছিল যে কারণে
Published: 7th, March 2025 GMT
এ বছর ডিসেম্বরের মধ্যেই কি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জাতীয় নির্বাচন? না হলে কখন ঘোষণা করা হবে নির্বাচনী রোডম্যাপ? নাকি সংস্কারে ‘সংস্কৃত’ হওয়া বা শেখ হাসিনার বিচার সম্পন্ন করাই হবে নির্বাচনের পূর্বশর্ত?
এ প্রশ্নগুলো বাজারে আছে।
এখন স্থিতাবস্থার বিরোধী কোনো পক্ষ প্রশ্ন তুলতেই পারে, বড় পরিবর্তন আনতে অন্তর্বর্তী সরকারের ম্যান্ডেট কী? কতদূর? কত দিনের? ছয় মাসে ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠীকে আন্ডারগ্রাউন্ডে পাঠানোর বাইরে রাষ্ট্রীয় সেবা উন্নয়নে অর্জন কী কী?
এসব বিতর্কে আমাদের ড্রয়িংরুম, অফিস ও রাজনৈতিক অঙ্গন এখন কুসুম–কুসুম গরম। এতে জাতীয় অগ্রগতি উন্নত স্তরে নেওয়ার আলোচনায় কিছুটা বিষণ্নতার সুরও লক্ষ করা যাচ্ছে।
অন্য দিকে এ সমাজের আয়নাগুলো এতই ঘোলা হয়ে গেছে যে এখন বোঝা মুশকিল, চলমান পরিস্থিতিতে কে বেশি দ্বিধাগ্রস্ত—নীরব সংখ্যাগরিষ্ঠ নাকি সমাজ, রাজনীতি ও রাষ্ট্রক্ষমতার কাছাকাছি থাকা অতি সক্রিয় ‘খেলোয়াড়েরা’?
এমনকি নির্বাচিত সরকারের আমলেও এ দেশে এক দিনের ভোট ছাড়া জনগণ কী চায় এবং কী ভাবে, তা বোঝার জন্য অন্য কোনো বোধগম্য আয়োজন ছিল না।
গত সাড়ে ১৫ বছরে সেই এক দিনের ভোটের বাহাদুরিও জনগণের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুনবাংলাদেশকে ‘ব্যর্থ রাষ্ট্র’ প্রমাণের চেষ্টা করছে কারা?০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ব্যতিক্রম জুলাই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পরিবর্তন হয়েছে।
ফলে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার যে নতুন পরিপ্রেক্ষিত সৃষ্টি হয়েছিল, তার জন্য কর্মপন্থা প্রস্তুত করার প্রয়োজন ছিল বৈকি।
তা তৈরির কমবেশি দায়িত্ব ছিল পতিত হাসিনা ও তাঁর দোসররা বাদে প্রায় সবারই। অধিক ‘সকলের’ প্রতিনিধিত্বকারীদের দায়িত্ব অবশ্যই একটু বেশি।
অনেকটা অসংগঠিত বিপ্লবের পর হঠাৎ গঠিত সরকারের শুরুতেই কর্মপরিধি প্রস্তুত থাকা দুষ্কর, সে কথা মানি।
কিন্তু হাসিনার দুষ্কর্মের বিপরীতে একটি যৌক্তিক প্রত্যাশার তালিকা বানালে ক্ষতি কী ছিল?
এমন কাজের দায়িত্ব শুধু বর্তমান নেতৃত্বের জন্যই কঠিন পরীক্ষা নয়, অনাগত প্রজন্মের জন্যও গুরুত্ববহ।
আমরা জেনেও জানি না যে বিপ্লবের সুযোগ কাজে লাগাতে না পারার অনাকাঙ্ক্ষিত পরিণতি হতে পারে দীর্ঘমেয়াদি নৈরাজ্য।
আইনশৃঙ্খলা ও জনজীবন নিয়ে যে ষড়যন্ত্র হবে, সেটাও আগে থেকেই আমাদের ভাবনায় থাকা উচিত ছিল।
আরও পড়ুনতিন জোটের রূপরেখা: ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫২০৭১ সালে ইতিহাসের একজন ‘বিচারক’ যদি প্রশ্ন করেন, জুলাই-আগস্ট ২০২৪-এর আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ও তাঁর টিম বিপ্লবের বলা-না–বলা অঙ্গীকারগুলো কতটা সফলভাবে পূরণ করতে পেরেছিলেন, সে উত্তরের কাজগুলো এখনো অসম্পন্ন।
অতীতের অন্য যেকোনো প্রশাসনের বিপরীতে এই অন্তর্বর্তী সরকারের বিশেষত্ব হচ্ছে, এই সরকার ব্যক্তি প্রফেসর ইউনূসের রাজনৈতিক ইচ্ছার সরকার বা টিপিক্যাল তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয়, বরং এ সরকার হলো আগস্টে ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পরাজিত করা সমাজের সবার পক্ষে কাজ করার জন্য নিয়োজিত একটি কর্তৃপক্ষ।
এ দেশের মানুষ যেহেতু এ সরকারকে ব্যর্থ দেখতে চায় না, সেহেতু রাজনৈতিক শক্তিসহ বিপ্লবের অংশীজনেরা ইউনূস সরকারকে তাঁর কার্যপরিধি ঠিক করে দিতে পারত শুরুতেই।
যেটিকে বলা হচ্ছে বিপ্লবের ঘোষণাপত্র বা ইশতেহার, তা আগে বা ইতিমধ্যেই প্রকাশ করা হয়ে থাকলে বিপ্লবের এজেন্ডা বাস্তবায়নে সরকারের কাজ মূল্যায়ন করা সহজতর হতো।
পরস্পরের বোঝাপড়ার সুবিধার্থে সরকার নিজেও একটি কার্যতালিকা প্রস্তুত করে মাঠে নামতে পারত।
তাতে এ সরকারের চরিত্র ও দায়িত্ব পালন সম্পর্কে আরও স্বচ্ছ ধারণা তৈরি হতো, নিন্দুকেরা চুপ হয়ে যেত।
আরও পড়ুনআমরা কি বড় চিন্তা করতেই বেশি পছন্দ করি?২০ অক্টোবর ২০২৪যেহেতু এর ম্যান্ডেট নিয়েও প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, সে কারণে গণভোটের মাধ্যমে, গণ-সংযোগের মাধ্যমে, জাতীয় সংলাপের মাধ্যমে সরকার তার কর্মসূচি, বিশেষ করে সংস্কার প্রস্তাবসমূহ নিয়ে জনগণের মতামত চাইতে পারত।
জনতার ম্যান্ডেট নবায়ন করতে দোষ তো নেই-ই, বরং এটা দরকারি পদক্ষেপ। যদিও জুলাই-আগস্টে ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে রক্তাক্ত প্রতিরোধ আন্দোলনের মাধ্যমে গড়ে ওঠে এক অভূতপূর্ব ঐকমত্য। রচিত হয় হাসিনা ও তাঁর অপশক্তির বিরুদ্ধে শুভশক্তির জয়।
এই শুভশক্তির বিষয়টি আবার এমন নয় যে এরা আজীবনই ন্যায়ের পক্ষে থাকবে বা গণমানুষের আস্থায় থাকা শক্তি বিবেচিত হবে।
হাসিনাও নিজে এবং দল আওয়ামী লীগকে স্বাধীনতার চেতনার একক এজেন্ট বলতে বলতে বাংলাদেশকে বানিয়েছিলেন তাঁবেদার রাষ্ট্র এবং ভোট ও ভাতের রাজনীতির ধারক-বাহক দাবি করে ফ্যাসিবাদের চূড়ান্ত পথ বেছে নিয়েছিলেন।
গণবিরোধী, দেশবিরোধী অলিগার্কির বিরুদ্ধে ৫ আগস্টের বিজয় বাকি সব শক্তিকে এককাতারে নিয়ে এসেছিল।
রাজনৈতিক দলের ‘আজ্ঞাবহ’ না হওয়ায় ইউনূস সরকারের একধরনের বাধ্যবাধকতা থাকে রাজনৈতিক গোষ্ঠী ও অন্যান্য অংশীজনকে আস্থায় রেখে উদ্দেশ্য সাধন এবং কার্য সম্পাদন করা। অযথাই রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরি এবং দায়িত্বশীলেরা সেকেলে কায়দার আত্মতুষ্টি বা সমালোচনায় গা ভাসিয়ে দিলে জাতি হিসেবে আমরা বড় কাজের সুযোগ হাতছাড়া করে ফেলব।দেড় দশক ধরে বিরোধীশক্তির বিনাশ এবং জনগণকে দাস বানাতে চাওয়া হাসিনা নিজেকেই দলবলসহ অপ্রাসঙ্গিক করে ফেলেন। আমরা ভুলে যাই যেন তিনি ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠিত করেন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সুযোগ নিয়ে, (ভুয়া) গণতন্ত্রের নামে।
হাসিনা শাসনের অন্যতম মূল ভিত্তি ছিল আওয়ামী লীগ ও তার ‘পেয়ারের বান্দাদের’ সঙ্গে সবার বৈষম্য নিশ্চিত করা। সে জন্যই নতুন বাংলাদেশে প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তন আনা খুবই জরুরি।
উদাহরণস্বরূপ হাসিনা যেভাবে নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংস করে গেছেন, অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট নিশ্চিত করতে তারও সংস্কার অপরিহার্য। হাসিনার মানদণ্ডের ‘সুশাসন’ও কাম্য নয়।
সোজা কথা, ফ্যাসিবাদী আমলের ধারাকে উল্টিয়ে ফেলার কাজটি করতে সামগ্রিক সংস্কার দরকার।
এ সংস্কারের অংশীজন রাজনৈতিক দলসহ সবারই এবং সরকারের ভূমিকা এখানে ফ্যাসিলিটেটরের।
এসব বিষয়ে ভুল–বোঝাবুঝি এড়াতে সংশ্লিষ্ট পক্ষের কৌশলগত যোগাযোগ ঠিকঠাক করার বিকল্প নেই।
অবশ্যই সরকার সবচেয়ে শক্তিশালী সংগঠন এবং এর দায়িত্বও সবচেয়ে বেশি।
রাজনৈতিক দলের ‘আজ্ঞাবহ’ না হওয়ায় ইউনূস সরকারের একধরনের বাধ্যবাধকতা থাকে রাজনৈতিক গোষ্ঠী ও অন্যান্য অংশীজনকে আস্থায় রেখে উদ্দেশ্য সাধন এবং কার্য সম্পাদন করা।
অযথাই রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরি এবং দায়িত্বশীলেরা সেকেলে কায়দার আত্মতুষ্টি বা সমালোচনায় গা ভাসিয়ে দিলে জাতি হিসেবে আমরা বড় কাজের সুযোগ হাতছাড়া করে ফেলব।
অতিদরকারি প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের বাইরেও সাধারণ মানুষের বোধগম্য চাওয়া পূরণ করা রাষ্ট্রীয় নেতৃত্বের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে, তা ইউনূস প্রশাসন হোক আর পরবর্তী নির্বাচিত সরকারই হোক।
সেই রুটিন কিন্তু জনকল্যাণকর কাজগুলো করার সরকারি ও সামাজিক সামর্থ্য ধ্বংস করেছিল হাসিনার ডাকাত দল।
ফলাফল ছিল সর্বগ্রাসী দুর্নীতি, অবিচার, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, বৈষম্য, নাগরিকের বামনীকরন ইত্যাদি।
দুঃখজনকভাবে আমরা অনেক ক্ষেত্রেই জনকল্যাণ, উন্নয়ন ও গণতন্ত্রীকরণের চেয়ে সংকীর্ণ বিষয়ে কুতর্কে জড়িয়ে পড়ছি, যা হাসিনার লোকদের চাওয়া।
রাষ্ট্র পুনর্গঠন, আইন ও প্রতিষ্ঠান সংস্কার, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সুসংহতকরণ এবং উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলাসহ যত জরুরি জনগুরুত্বপূর্ণ ইস্যু আছে, সেগুলোর সমাধান একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া হওয়া উচিত।
তবে ইউনূস সরকারের কাঁধে যে ঐতিহাসিক দায়িত্ব এসে পড়েছে সেগুলোর মীমাংসা করাটা মানুষের কাছে কাঙ্ক্ষিত।
ভবিষ্যৎ সরকার কোথা থেকে শুরু করবে, সে তালিকা আজ প্রস্তুত হলে আগামীর তালিকা যেমন সমৃদ্ধ হতে পারে, ভবিষ্যৎ নেতৃত্বও হয়তো দেশকে ভিন্ন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারবে।
খাজা মাঈন উদ্দিন সাংবাদিক
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউন স সরক র র র জন ত ক র জন য র র জন অ শ জন আগস ট
এছাড়াও পড়ুন:
৩০০ আসনে প্রার্থী বাছাই প্রায় চূড়ান্ত: তারেক রহমান
জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে সম্ভাব্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তিনি বলেন, “দেশের ৩০০ সংসদীয় আসনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী কিংবা বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের মনোনয়ন চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত ধাপে রয়েছে।”
আরো পড়ুন:
বরগুনায় জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা মামুন
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির
রবিবার (২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে প্রবাসে বিএনপির সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তারেক রহমান। লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি।
প্রতিটি নির্বাচনী আসনে বিএনপির একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন জানিয়ে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “দেশের প্রতিটি সংসদীয় আসনে বিএনপির একাধিক যোগ্য এবং জনপ্রিয় প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও প্রতিটি মানুষকে নিশ্চয়ই মনোনয়ন দেওয়া সম্ভব নয়। ভিন্ন রাজনৈতিক দলের যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে আমাদের সঙ্গে রাজপথের সঙ্গী ছিলেন, এমন প্রার্থীকেও বিএনপি সমর্থন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
এই বাস্তবতার কারণে হয়তো কিছু সংসদীয় সংসদীয় আসনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন বঞ্চিত হবেন জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, “বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মী, সমর্থকদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা, দেশ ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে আপনারা এই বাস্তবতাকে মেনে নেবেন।”
জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে জনমনে সৃষ্ট সংশয়, সন্দেহ গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে সংকটপূর্ণ করে তুলতে পারে মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, “দেশে প্রতিনিয়ত একের পর এক নিত্য নতুন শর্ত জুড়ে দিয়ে গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সংকটাপূর্ণ করে তোলা হচ্ছে। তবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শক্তিতে বিশ্বাসী নাগরিকেরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো ষড়যন্ত্রই বিএনপিকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না।”
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মানুষের উদ্বেগের কথা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, “পরাজিত পলাতক স্বৈরাচারের শাসন আমলে জনগণের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনোই আগ্রহ ছিল না। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় জনমনে কোনো কোনো ক্ষেত্রে জিজ্ঞাসা বাড়ছে, যথাসময়ে কি নির্বাচন হবে?... এমন তো হবার কথা ছিল না।”
বিএনপির বিজয় ঠেকাতে অপপ্রচার ও অপকৌশল দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে বলে উল্লেখ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “উদ্বেগ এবং আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশেও বর্তমানে বিএনপির বিজয় ঠেকাতে সংঘবদ্ধ অপপ্রচার এবং অপকৌশল দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে।”
শুধু বিএনপির বিজয় ঠেকাতে গিয়ে পতিত পরাজত পলাতক স্বৈরাচার দেশে ‘ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বিগত ১৫ বছরে দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।”
প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে বিএনপি দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে মন্তব্য করে তারেক রহমান জানান, তবে বিএনপির প্রতি দেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতাপ্রিয় জনগণের আস্থা, ভালোবাসা থাকায় সে সংকট কাটিয়েছে তার দল।
তারেক রহমান বলেন, “দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি শুরু থেকেই ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য বজায় রাখার স্বার্থে সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে একদিকে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার পথ বেছে নিয়েছে। অপরদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেও যতটুকু সম্ভব, যতটুকু যথাসাধ্য সম্ভব আমাদের অবস্থান থেকে আমরা সহযোগিতা করে আসছি।”
দেশে নারীদের নিরাপত্তার বিষয়ে সামাজিক উদাসীনতা প্রকট হয়ে উঠছে উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এ সংক্রান্ত গণমাধ্যমের প্রতিবেদন তুলে ধরে বলেন, “নারী ও শিশুদের জন্য নিরাপত্তাহীন সমাজ নিশ্চয়ই সভ্য সমাজ হিসেবে গণ্য হতে পারে না।”
সেজন্য তিনি জাতীয়তাবাদী মহিলা দলসহ বাংলাদেশের সচেতন নারী সমাজকে তাদের দাবি সরকারের কাছে তুলে ধরার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে অনলাইনে বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদ গ্রহণ এবং তার ফি পরিশোধের প্রক্রিয়া নিয়ে একটি ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হয়। তাতে বলা হয়, এখন থেকে বিশ্বের যেকোনো দেশ থেকে অনলাইনে বিএনপির দলীয় ওয়েবসাইটে গিয়ে সদস্যপদ গ্রহণ করা যাবে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, এ জে ড এম জাহিদ হাসান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ আলমগীর হোসেন প্রমুখ।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ