জ্ঞান ফেরেনি শিশুটির, শনাক্ত হয়নি অপরাধী
Published: 7th, March 2025 GMT
মাগুরা শহরতলীর নিজ নান্দুয়ালি এলাকায় বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে সাত বছরের এক শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ১৮ ঘণ্টায়ও তার জ্ঞান ফেরেনি।
ওই ঘটনায় শিশুটির দুলাভাই ও তার বাবাকে আটক করেছে পুলিশ। এখন পর্যন্ত প্রকৃত দোষীকে শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। তদন্ত চলছে।
এদিকে এ ঘটনায় দোষিদের সনাক্ত ও বিচারের দাবিতে শুক্রবার (৭ মার্চ) জুমার নামাজের পর মাগুরায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।
শিশুটির ফুফাতো ভাই দুপুরে রাইজিংবিডিকে বলেন, “গতকাল সন্ধ্যায় শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়েছে। এখনো সে অচেতন অবস্থায় আছে। তাকে শিশুদের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (পিআইসিইউ) রাখা হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, অবস্থা আরও খারাপ হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হতে পারে।”
পুলিশ ও ভুক্তভোগী শিশুর পরিবার সূত্রে জানা যায়, গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে আনা হয়। সেখান থেকে গতকাল দুপুরেই উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আইয়ুব আলী বলেন, “শিশুটির সঙ্গে কী ঘটেছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। শিশুটি অচেতন অবস্থায় ছিল। যে বাসায় সে বেড়াতে গিয়েছিল, ধারণা করা হচ্ছে সেখানেই ঘটনা ঘটেছে। শিশুটির পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তার দুলাভাই ও দুলাভাইয়ের বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।”
শিশুটির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের বাড়ি মাগুরার শ্রীপুর উপজেলায়। শিশুটি কয়েক দিন আগে তার বড় বোনের (শ্বশুর) বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যান তার বোনের শাশুড়ি। পরে শিশুটির মা হাসপাতালে যান।
ওই হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানান, তাৎক্ষণিক পরীক্ষা করে দেখা গেছে শিশুটির গলায় একটা দাগ আছে। মনে হচ্ছে, কিছু দিয়ে চেপে ধরা হয়েছিল। শরীরের বেশ কিছু জায়গায় আঁচড় আছে। তার গোপনাঙ্গে রক্তক্ষরণ হয়েছে।
এদিকে ওই ঘটনা নিয়ে ফেসবুকে অনেকে পোস্ট দিয়েছেন। কেউ আবার মৃত্যুর গুজব ছড়িয়েছেন। এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে আজ জুমার নামাজের পর মাগুরা শহরে মিছিল বের করা হয়।
শিশুটির মা জানান, বোনের বাড়িতে মেয়েকে ঘরের মধ্যে একা পেয়ে কেউ একজন পাশবিক নির্যাতন করেছে। যেহেতু ওই সময় বাড়িতে সে একা ছিল আর এখনও মেয়ের জ্ঞান ফেরেনি তাই তাকে কে এই ঘটনা ঘটিয়েছে তা সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না।
মাগুরা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সুবাস রঞ্জন হালদার বলেন, “প্রথমে শ্বাসকষ্টের রোগী হিসেবে শিশুটিকে নিয়ে আসা হয়। পরে মেডিসিন বিভাগে নিয়ে গেলে ধর্ষণ আর হত্যা চেষ্টার আলামত পাওয়া যায়। মেয়েটির অবস্থা শঙ্কামুক্ত নয়।”
ঢাকা/শাহীন/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গতক ল ই ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁওয়ে শহিদুল ইসলাম শহিদকে হত্যার মামলায় অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিয়েছে পুলিশ। এ মামলায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ ২৩১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চান্দগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুল হক গত বুধবার (৩০ জুলাই) আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন।
শনিবার (২ আগস্ট) চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব আহমেদ অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার তথ্য সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
সিলেটে স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা: ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন
চবি ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
পুলিশ জানিয়েছে, গত বছরের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলার সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা কোনো মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল করা হলো।
২০২৪ সালের ৩ আগস্ট সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মহানগরীর বহদ্দারহাটে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় একাধিক পিস্তল, শটগানসহ ভারী অস্ত্র দিয়ে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছিলেন আওয়ামী লীগের কর্মীরা।
এর আগে নিউ মার্কেট মোড়ে সমাবেশ করে ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে ষোলশহর মেয়র গলিতে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বাসভবনে হামলা চালায়। এর পর বহদ্দারহাট মোড়-সংলগ্ন সাবেক সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর বাসভবনে হামলা হয়। ওই সময় গুলিবিদ্ধ হন অটোরিকশাচালক শহিদ। তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শহিদের ভাই শফিকুল ইসলাম চান্দগাঁও থানায় মামলা করেন।
আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি আইনের ৩০২ ধারায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। উল্লেখযোগ্য অপর আসামিরা হলেন— চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ও আ জ ম নাছির উদ্দীন, সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, এম এ লতিফ, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভী, মহিউদ্দিন বাচ্চু, আবদুচ ছালাম, দিদারুল আলম দিদার, এস এম আল মামুন ও নোমান আল মাহমুদ, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, চসিকের সাবেক কাউন্সিলর এসরারুল হক, নুর মোস্তফা টিনু, সলিমুল্লাহ বাচ্চু, জিয়াউল হক সুমন ও নুরুল আজিম রনিসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
আগামী ২৫ আগস্ট বাদীর উপস্থিতিতে অভিযোগপত্রের ওপর শুনানি হবে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে। অভিযোগপত্রে ১২৮ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৮ জন সাধারণ মানুষ, ৯৯ জন পুলিশ ও ১ জন চিকিৎসক।
ঢাকা/রেজাউল/রফিক