নরসিংদীতে আগুনে পুড়ে ৬ বছরের শিশুর মৃত্যু
Published: 7th, March 2025 GMT
নরসিংদীতে একটি বসতঘরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এসময় আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে ঘরে থাকা সুমাইয়া আক্তার (৬) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (৭ মার্চ) দুপুরে দিকে সদর উপজেলার চরাঞ্চল করিমপুর ইউনিয়নের রসুলপুর ঈদগাঁপাড়ায় এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
নিহত সুমাইয়া রসুলপুর ঈদগাঁপাড়া এলাকার পেশায় জেলে মনির হোসেনের মেয়ে। করিমপুর নৌ ফাঁড়ি পুলিশের পরিদর্শক সাইদুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, হঠাৎ করে রসুলপুর ঈদগাঁপাড়ার মনির হোসেনের বসত ঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও ঘরটি পুরোপুরি পুড়ে যায়। এসময় ঘরে ঘুমিয়ে থাকা শিশু সন্তান সুমাইয়া আক্তার আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে মারা যায়।
অগ্নিকাণ্ডের সময় শিশুটির পিতা মনির হোসেন মাছ ধরার কাজে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর এলাকায় মেঘনা নদীতে ছিলেন। শিশুটির মা বাড়ির পাশের কৃষিজমিতে কাজে বের হয়েছিলেন। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট হতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা।
দরিদ্র পরিবারটির আগুনে ক্ষয়ক্ষতি ও শিশু সন্তানের মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্বচ্ছলদের সহায়তা নিয়ে অসহায় পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ করেছেন এলাকাবাসী।
করিমপুর নৌ ফাঁড়ি পুলিশের পরিদর্শক সাইদুর রহমান জানান, শিশু মেয়েটি ঘরেই অবস্থান করছিল। বাবা-মা কেউ ঘরে না থাকায় অগ্নিকাণ্ডে বসত ঘরের সাথে মেয়েটিও পুড়ে মারা যায়। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকেই অগ্নিকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
ঢাকা/হৃদয়/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস