কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ডিগ্রি শাখার মসজিদে পছন্দের ইমামকে না রাখায় জাতীয় পতাকার স্ট্যান্ডে (খুঁটি) জুতা ঝুলিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে অব্যাহতি পাওয়া ইমাম মারুফ বিল্লার অনুসারীরা। শুক্রবার জুমার নামাজের পর কলেজের ডিগ্রি শাখার প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার ২৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জুমার নামাজের খুতবার আগে মুসল্লিদের উদ্দেশে কথা বলেন কলেজ এলাকার স্থানীয় গণ্যমান্য লোকজন। এ সময় তারা বলেন, স্থানীয়দের সঙ্গে কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিরোধ কখনও কাম্য নয়। তারা নতুন ইমাম নিয়োগের দাবি করেন। নামাজের পর ৮/১০ জন যুবক কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে থাকা জাতীয় পতাকার তিনটি স্ট্যান্ডের মাঝের স্ট্যাডের সামনে গিয়ে বিভিন্ন অশ্লীল স্লোগান দিয়ে জুতা ঝুলিয়ে দেন।

কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাঈদ আহামেদ ও আবুল কাসেম বলেন, এ কেমন কাজ! ইমাম গেলে ইমাম আসবে। দোষ করলে মানুষ করছে। জাতীয় পতাকার অবমাননা করলো কেন। কলেজ প্রশাসনের উচিত তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
 
তবে অব্যাহতি পাওয়া ইমাম মারুফ বিল্লাহ বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আজ আমি এ মসজিদে ছিলাম না। কলেজ প্রশাসন আমাকে অব্যাহতি দিয়েছে। আমি কলেজ থেকে চলে এসেছি। এখন কি ঘটনা, কারা করেছে, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।’
 
কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো.

আবুল বাসার ভূঁঞা বলেন, জাতীয় পতাকার স্ট্যান্ডে জুতা উত্তোলন রাষ্ট্রদ্রোহী অপরাধ। এই কাজ কখনওই আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা দ্রুত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। 

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম সমকালকে বলেন, এই বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

এর আগে ১৩ জানুয়ারি কলেজের ডিগ্রি শাখার মসজিদে তাবলিগের বিবদমান দুই পক্ষ মাওলানা সাদ ও জুবায়েরের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জেরে গত ২০ জানুয়ারি তাবলিগের সাপ্তাহিক তালিম সাময়িকভাবে বন্ধের ঘোষণা করেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। পরে একাধিকবার কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে ওই ইমামের অনুসারীরা। গত ২১ জানুয়ারি অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করে রাখেন ইমাম মারুফ বিল্লার অনুসারীরা। পরে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ইমাম মো. মারুফ বিল্লাহকে নানা অভিযোগ তুলে অব্যাহতি দেয় কলেজ প্রশাসন। ইমামকে চাকরিচ্যুত করার পর থেকেই প্রতি শুক্রবার নামাজে পূর্বের ঈমামকে বহালের দাবি করে আসছে স্থানীয় একটি পক্ষ। সর্বশেষ গত শুক্রবার ২৮ ফেব্রুয়ারি নামাজ শুরুর আগেই স্থানীয়রা কলেজের অধ্যক্ষের ওপর হামলা শেষে অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী তাদের উদ্ধার করে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র অন স র কল জ র

এছাড়াও পড়ুন:

শ্রীবরদীতে ভারতীয় জিরা নিয়ে তুলকালাম

শেরপুরের শ্রীবরদী সীমান্তে ১৬ বস্তা ভারতীয় চোরাই জিরা ও কাপড় আটক করেছেন স্থানীয়রা। পরে স্থানীয় স্বার্থান্বেষী একটি মহল আত্মসাতের উদ্দেশ্যে সেসব জিরা সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে অন্য একটি পক্ষ আবার সেই জিরা আটক করে। এ নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড ঘটে।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে উপজেলার ভায়াডাঙ্গা বাজারে এ ঘটনা ঘটে। 

পরবর্তীতে হাসধরা এলাকায় দ্বিতীয়বার আটক হয়। এসময় স্থানীয়রা বেশকিছু বস্তা জিরা লুট করে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা পুলিশ ও বিজিবিকে খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে মালামাল উদ্ধার করে তাওয়াকুচা বিজিবি ক্যাম্পে নিয়ে যায়। 

স্থানীয়রা জানান, রাত ৯টার দিকে ভারতীয় চোরাই জিরা ও কাপড় বোঝাই একটি ট্রলি ঝিনাইগাতী থেকে ভায়াডাঙ্গা বাজার দিয়ে শ্রীবরদী হয়ে শেরপুরের দিকে যাচ্ছিলো। স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেয়ে ট্রলিটি আটক করে। এসময় ট্রলি চালক কৌশলে পালিয়ে যায়।

সেসময় স্থানীয় অপর একটি পক্ষ সুকৌশলে আরেক চালককে দিয়ে ট্রলিটি সরিয়ে নিয়ে যায়। ঘটনা জানাজানি হওয়ার সাথে সাথে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে হাসধরা এলাকায় ট্রলিটি আবার আটক হয়। এসময় প্রায় অর্ধেক মালামাল লুট করে এক পক্ষ। 

স্থানীয় বাসিন্দা মো. ইমন আকন্দ বলেন, “আমরা ভায়াডাঙ্গা বাজারে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। পরবর্তীতে স্থানীয় কয়েকজন নেতা নতুন করে অন্য ড্রাইভার দিয়ে ট্রলি সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। আমরা অবৈধ পাচার হওয়া মালামাল জব্দ হোক এটাই চাই। এছাড়াও যারা মালামাল লুট করেছে এবং এই পাচারের সাথে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি করছি।” 

এ ব্যাপারে শ্রীবরদী তাওয়াকুচা বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার নায়েব সুবেদার আতিয়ার রহমান বলেন, “আমরা স্থানীয়দের তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে গিয়ে ১৬ বস্তা অবৈধ মালামাল জব্দ করেছি। এই ব্যাপারে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা চলমান আছে।”

শ্রীবরদী থানার উপ-পরিদর্শক সুলতান আহমেদ বলেন, “আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছার পূর্বেই বিজিবি মালামাল জব্দ করেছে। এই ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”

ঢাকা/তারিকুল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যৌতুকের জন্য জখম: ভুক্তভোগী নারীর জন্য বাধ্যতামূলক মধ্যস্থতা তুলে দিতে হবে
  • শ্রীবরদীতে ভারতীয় জিরা নিয়ে তুলকালাম
  • যুগপৎ কর্মসূচির বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি: জামায়াত নেতা তাহের
  • জামায়া‌তের তিন‌ দি‌নের কর্মসূচি ঘোষণা