নারায়ণগঞ্জে গ্যাস বিস্ফোরণে দগ্ধ ৮ জনের একজন মারা গেছেন
Published: 8th, March 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জে ঘরে জমা গ্যাসের আগুনে দগ্ধ দুই পরিবারের আটজনের মধ্যে রিকশাচালক মো. হান্নান (৪০) মারা গেছেন। শুক্রবার দিবাগত রাত সোয়া একটার দিকে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্ল্যাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান বলে জানান ওই হাসপাতালের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান।
নিহত হান্নানের শরীরের ৪৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল বলে জানান এ চিকিৎসক। গত সোমবার রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় সিদ্ধিরগঞ্জের পশ্চিম ধনকুন্ডা এলাকায় ইব্রাহিম খলিলের টিনশেড বাসার দুটি কক্ষে জমা গ্যাস থেকে বিস্ফোরণের পর আগুনে দুই পরিবারের নারী ও শিশুসহ আটজন দগ্ধ হন।
নিহত হান্নানের স্ত্রী পোশাক শ্রমিক নুরজাহান আক্তার লাকী (৩০), মেয়ে জান্নাত (৩), মেয়ে সামিয়া (৯), ছেলে সাব্বির (১৬), আরেক পরিবারের পোশাক শ্রমিক সোহাগ (২৩), তার স্ত্রী পোশাক শ্রমিক রুপালি (২০) ও তাদের একমাত্র দেড় বছর বয়সী মেয়ে সুমাইয়া এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হান্নানের গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর জেলার জাজিরা থানা এলাকায়। তিনি পরিবারসহ সিদ্ধিরগঞ্জের ওই ভাড়া বাসায় থাকতেন বলে জানান তার আত্মীয় (স্ত্রীর ভাই) আনোয়ার হোসেন।
তিনি বলেন, হান্নানের দুই মেয়ে সামিয়া ও জান্নাত কিছুটা আশঙ্কামুক্ত জানিয়েছেন চিকিৎসক। কিন্তু লাকি আর সাব্বিরের কন্ডিশন ভালো না। এক আগুনে পুরা পরিবারটা এখন শঙ্কার মুখে।
গত সোমবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন বলেন, দুই কক্ষের সেমিপাকা টিনসেড ঘরের নিচ দিয়ে গ্যাসের লাইন গেছে। সেখান থেকে কোনোভাবে গ্যাস লিকেজ হয় এবং এর থেকে ঘরের ভেতর গ্যাস চেম্বারের সৃষ্টি হয়। যে কোনোভাবে আগুনের স্পার্কের সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরণ ঘটে এবং অগ্নিকাণ্ড সংঘটিত হয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের বিজয়ী সামিয়া
পূর্ব আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৯৮ শতাংশ ভোট পেয়ে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসান। শনিবার (১ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশন ঘোষিত চূড়ান্ত ফলে দেখা যায়, বুধবারের নির্বাচনে তিনি ৯৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। খবর বিবিসির।
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা নির্বাচনে স্বচ্ছতার অভাব এবং ব্যাপক অস্থিরতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। নির্বাচন ঘিরে দেশটিতে গত কয়েক দিনে সহিংসতায় কয়েক শ’ মানুষ নিহত ও বহু আহত হয়েছে। দেশজুড়ে ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারণে নিহতের সঠিক সংখ্যা যাচাই কঠিন হয়ে পড়েছে।
সরকার সহিংসতার মাত্রা কমিয়ে দেখানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অস্থিরতা দমনে দেশজুড়ে কারফিউও বাড়ানো হয়েছে।
ক্ষমতাসীন চামা চা মাপিন্দুজি (সিসিএম) দলের প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসানের প্রশাসনের বিরুদ্ধে ভোটের আগে ভিন্নমত পোষণকারী ও বিরোধীদের ওপর কঠোর দমনপীড়ন চালানোর অভিযোগ রয়েছে। প্রধান দুই বিরোধী দলকেই নির্বাচনে অংশ নিতে দেয়া হয়নি।
ফলে নির্বাচনের পরই বৃহত্তম নগরী দার-এস-সালাম ও অন্যান্য শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবারও বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। অস্থিরতা বন্ধ করার জন্য সেনাপ্রধানের সতর্কবার্তা সত্ত্বেও বিক্ষোভকারীরা সামিয়ার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে এবং অসংখ্য গাড়ি, পেট্রোল স্টেশন এবং থানায় আগুন দেয়।
বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বেশিরভাগ তরুণ বিক্ষোভকারীরা, যারা নির্বাচনকে অন্যায্য বলে সমালোচনা করেছেন। তাদের অভিযোগ, সরকার প্রধান বিরোধী নেতাদের দমন করে গণতন্ত্রকে ক্ষুণ্ন করছে। প্রধান দুই বিরোধী নেতার মধ্যে একজন কারাগারে রয়েছেন এবং অন্যজনকে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
বিরোধী চাদেমা দলের একজন মুখপাত্র শুক্রবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে প্রায় ৭০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে তানজানিয়ার একটি কূটনৈতিক সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, কমপক্ষে ৫০০ জন মারা যাওয়ার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ কম্বো থাবিত এই সহিংসতাকে ‘এখানে-সেখানে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “পরিস্থিতি মোকাবেলায় নিরাপত্তা বাহিনী খুব দ্রুত ও দৃঢ়তার সাথে কাজ করেছে।”
প্রধান দুই বিরোধী দলীয় নেতার মধ্যে চাদেমা দলের টুন্ডু লিসুকে নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রদোহের অভিযোগ আটক করা হয়, যদিও তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং এসিটি-ওয়াজালেনডো দলের নেতা লুহাগা এমপিনাকে আইনি কৌশল খাটিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি।
১৬টি প্রান্তিক দল, যাদের কারোরই ঐতিহাসিকভাবে উল্লেখযোগ্য জনসমর্থন ছিল না, তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
সামিয়ার ক্ষমতাসীন দল সিসিএম, দেশটির রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করেছে। স্বাধীনতার পর থেকে কখনও কোনো নির্বাচনে সিসিএম হারেনি।
নির্বাচনের আগে, মানবাধিকার সংস্থাগুলো বিরোধী ব্যক্তিত্বদের জোরপূর্বক গুম, নির্যাতন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরকারের নিন্দা জানিয়েছিল।
প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলির মৃত্যুর পর ২০২১ সালে তানজানিয়ার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে সামিয়া ক্ষমতায় আসেন।
ঢাকা/ফিরোজ