প্রস্তাব পেয়ে দ্বিতীয়বার ভাবিনি: মিলা
Published: 8th, March 2025 GMT
দীর্ঘদিন নিজেকে আড়াল করে রেখেছিলেন কণ্ঠশিল্পী মিলা। অবশেষে নন্দিত সংগীত পরিচালক শওকত আলী ইমনের আহ্বানে ফিরলেন গানের ভুবনে। বিরতি ভাঙলেন প্লেব্যাকের মধ্য দিয়ে। ‘ইনসাফ’ নামের নতুন একটি সিনেমার জন্য গাইলেন ভিন্নধাঁচের একটি গান।
‘প্রেম পুকুরে বরশি ফেলে আনবোরে ধরে’–এমন কথায় সাজানো মিলার নতুন গানটি লিখেছেন সুদীপ কুমার দ্বীপ। সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন শওকত আলী ইমন।
প্লেব্যাকের মধ্য দিয়ে মিলার নতুন যাত্রা শুরু নিয়ে সুরকার ইমন বলেন, ‘অনবদ্য গায়কীর মধ্য দিয়ে যে শিল্পী অগণিত শ্রোতা হৃদয় জয় করেছেন, তাঁর আড়ালে চলে যাওয়ার বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিলাম না। পাশ্চাত্য সংগীতের মিশেলে এখন যে আধুনিক গান তৈরি হচ্ছে, তা মিলার মতো শিল্পীর কণ্ঠে বেশি মানানসই। তার প্রমাণ অনেকে আগেই পেয়েছেন সংগীতপ্রেমীরা। আমার সুরেও মিলা চারটি গান গেয়েছেন, সেগুলো শ্রোতাদের মাঝে দারুণ সাড়া ফেলেছে। সেসব ভেবেই আবার মিলাকে প্লেব্যাকে ফিরিয়ে আনা। আশা করছি, তার গাওয়া ‘ইনসাফ’ সিনেমার এন্ড টাইটেল গানটি অনেকের ভালো লাগবে।’
মিলার কথায়, ‘‘শওকত আলী ইমন কত বড় মাপের সুরকার তা নতুন করে বলার প্রয়োজন পড়ে না। তাঁর সৃষ্টির আলাদা একটা বৈশিষ্ট্য আছে। যখনই তাঁর সুরে গান গাওয়ার সুযোগ হয়েছে তা লুফে নিয়েছি। তাই এবারও যখন প্লেব্যাকের জন্য প্রস্তাব এলো, তখন এ নিয়ে দ্বিতীয়বার ভাবিনি। আনন্দ নিয়েই ‘ইনসাফ’ সিনেমার প্লেব্যাক করেছি। ভক্তরা আমার কণ্ঠে যে ধরনের গান শুনতে চান, ‘প্রেম পুকুরে’ তেমনই একটি ভিন্নধাঁচের আয়োজন। গানটি অনেকের প্রত্যাশা অনেকটা পূরণ করবে বলেই আমার বিশ্বাস।”
এদিকে প্লেব্যাকের পাশাপাশি একক গানের আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত সময় পারছেন মিলা। অন্যদিকে শওকত আলী ইমনও ব্যস্ত নানা ধরনের সংগীতায়োজনে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
দেড়শ বছর টিকে আছে বালিকান্দি চামড়ার হাট
প্রায় দেড়শ বছর আগে মৌলভীবাজারের বালিকান্দি গ্রামে গড়ে ওঠে চামড়ার হাট। কোরবানির ঈদ এলেই মনু নদী তীরবর্তী গ্রামের এ হাটে চামড়া কেনাবেচা চলে দীর্ঘ রাত পর্যন্ত। ক্রেতা-বিক্রেতা, শ্রমিকের আনাগোনায় উৎসবমুখর থাকে বালিকান্দি বাজার।
মৌলভীবাজার জেলায় চামড়া কেনাবেচার একমাত্র হাট বালিকান্দি বাজার। জল ও স্থলপথে যোগাযোগ সহজ হওয়ায় এটি দ্রুত বিভিন্ন এলাকায় পরিচিতি লাভ করে। স্থানীয় বাজারে চা স্টলের মালিক আব্দুল করিম জানান, তারা বাপ-দাদার আলোচনায় শুনেছেন, চার-পাঁচ পুরুষ আগে এ ব্যবসার যাত্রা শুরু। এক সময় খুব জমজমাট ছিল এ হাট। তিনিও এক সময় চামড়া কেনাবেচায় জড়িত ছিলেন। ব্যবসায় লস খাওয়ায় চায়ের দোকান দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন এখন।
জানা যায়, ১৮৬০ থেকে ১৮৭০ সালের দিকে এ বাজারের যাত্রা। এখন এ ব্যবসার প্রতি মানুষের আগ্রহ কমে গেছে। ট্যানারি মালিকরা টাকা আটকে রাখায় সর্বস্বান্ত হয়েছেন অনেক ব্যবসায়ী। চামড়া বেচাকেনা যখন জমজমাট ছিল, তখন ঈদকেন্দ্রিক বাজার সরব থাকত।
স্থানীয়রা জানান, অতীতে ঈদকেন্দ্রিক মৌসুমি ব্যবসায়ীসহ শতাধিক মানুষ চামড়া কেনাবেচা করতেন। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা মাংস ছিলে লবণ লাগিয়ে বড় পুঁজির ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করতেন। বড় ব্যবসায়ীরা আগেকার দিনে ঢাকার হাজারীবাগ এবং নাটোরে ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করতেন। শওকত মেম্বার, সানুর মিয়া, আনোয়ার মিয়া, মো. তারণ, মিন্টু মিয়া, সুলেমান মিয়ারা তাদের আদি পুরুষের ব্যবসার ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন।
গত ৭ জুন ঈদের দিন সন্ধ্যায় সরেজমিন বালিকান্দি চামড়ার বাজারে যেতে দেখা যায় চামড়াবোঝাই ছোট-বড় ট্রাক-পিকআপ, টমটম, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভিড়ে জ্যাম লেগে গেছে। ফাঁড়ি রাস্তায় যেতে হয়েছে বালিকান্দি বাজারে। সেখানে শামিয়ানা টানিয়ে সড়কের পাশে, কোথাও সড়কের অংশজুড়ে চলছে চামড়া থেকে মাংস সরানোর কাজ। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এ কাজ করছেন।
চামড়া ব্যবসায়ী সুলেমান মিয়া জানান, ঈদের সময় বালিকান্দি বাজারে এখনও ১৫ থেকে ১৬ হাজার চামড়া কেনাবেচা হয়। এতে এক দিনে ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকার বেচাকেনা হয়। এবার গরুর আকারভেদে দেড়শ থেকে ৬০০ টাকা দরে চামড়া কেনাবেচা হয়েছে। চামড়া বিক্রি করতে আসা মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা তাফাজ্জুল বিন ফারুকী রাজনগরী জানান, চামড়া ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দেড়শ-দুইশ টাকায় প্রতি পিস চামড়া কিনেছেন। এতে ট্রাক ভাড়া ও অন্যান্য খরচ ওঠানো কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শওকত মিয়া মেম্বার সমকালকে জানান, ব্যবসার মজা শেষ হয়ে গেছে ২০১৩ সাল থেকে। আগে ঈদ এলেই ট্যানারি মালিকরা বকেয়া পরিশোধ করে দিতেন। এখন বছরের পর বছর যাওয়ার পরও পাওনা টাকা পরিশোধ করেন না। গত বছরের পাওনা ৫৫ লাখ টাকার মাঝে এবার ঈদের আগের দিন ট্যানারি মালিক মাত্র ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন। এ বছর চার হাজারের বেশি চামড়ায় লবণ লাগিয়ে রেখেছেন। আরও কিছু লবণযুক্ত চামড়া কেনার জন্য দাম-দর চলছে। তিনি জানান, এ বছর বড় গরু কোরবানি দেওয়ার সংখ্যা খুব কম। ছোট চামড়ার সংখ্যাই বেশি।