সিদ্ধিরগঞ্জের পশ্চিমধনকুন্ডা শান্তিবাগ এলাকায় টিনশেড বাসায় গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ মো. সোহাগ (৩০) নামে আরও একজন মারা গেছেন। তিনি জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এ নিয়ে বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪ জনে।

গতকাল সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) বেড নম্বর-১৩-এ চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। চিকিৎসকরা জানান, সোহাগের ৪০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল।

সোমবার (৩ মার্চ) ভোর রাতের দিকে গ্যাস বিস্ফোরণে দুটি পরিবারের দগ্ধ নারী ও শিশুসহ ৮ জনকে উদ্ধার করে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছিল।

জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক ডা.

শাওন বিন রহমান বলেন, গ্যাসলাইন বিস্ফোরণ হয়ে দুই পরিবারের নারী শিশুসহ ৮ জন এসেছিল। তাদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। একটি পরিবারে ছিল সোহাগ, রুপালী ও তাদের দেড় বছরের সন্তান সুমাইয়া। তারা কেউ বেঁচে নেই। অপরদিকে আরেকটি পরিবারে ছিল মো. হান্নান, তার স্ত্রী নুরজাহান আক্তার লাকী, ছেলে সাব্বির মেয়ে সামিয়া ও জান্নাত। এ পরিবারের প্রধান হান্নান মারা গেছেন।

তিনি আরও জানান, চিকিৎসাধীন আছেন সাব্বির (২৭ শতাংশ দগ্ধ), নুরজাহান লাকি (২২ শতাংশ), সামিয়া (৯ শতাংশ) ও জান্নাত (৩ শতাংশ)। দগ্ধদের মধ্যে অনেকের শ্বাসনালি পুড়ে গেছে।

সোহাগের বড় ভাই রুবেল বলেন, আমার ছোট ভাই ও তার স্ত্রী ও তাদের সন্তান সুমাইয়া কেউ বেঁচে রইল না।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ আগ ন প ড় ম ত য পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ