দুই পুলিশ হত্যা মামলার প্রধান আসামিসহ গ্রেপ্তার ৩
Published: 11th, March 2025 GMT
কুষ্টিয়ার কুমারখালীর পদ্মা নদীতে দুর্বৃত্তদের হামলায় পুলিশের দুই সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) হত্যা মামলার প্রধান আসামি ইয়ারুল শেখসহ (৪০) তিনজনকে গ্রেপ্তার করে করেছে পু্লিশ। সোমবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
আসামি ইয়ারুল শেখ উপজেলার কয়া ইউনিয়নের বেড় কালোয়া গ্রামের মৃত বদর উদ্দিন শেখের ছেলে। অপর দুজন হলেন- উপজেলার সদকী ইউনিয়নের বাটিকামারা এলাকার মিন্টু শেখের ছেলে সাগর হোসেন (২১) ও নন্দলালপুর ইউনিয়নের সোন্দাহ গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে তুহিন হোসেন (৩৬)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৮ অক্টোবর ভোরে কুমারখালী থানার উপপরিদর্শক নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে ছয় পুলিশ সদস্য, স্থানীয় দুই ইউপি সদস্য ও দুই মাঝি পদ্মার ওপারে চর সাদীপুর এলাকায় আসামি ধরতে যাচ্ছিলেন। এ সময় কয়েকটি নৌকায় থাকা জেলেরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে কুমারখালী থানার এএসআই সদরুল আলম, এএসআই মুকুল হোসেন নদীতে ডুবে নিখোঁজ হন। ঘটনার পরদিন সদরুল হাসানের এবং দুদিন পর মুকুল হোসেনের মরদেহ নদী থেকে উদ্ধার করে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসদের ডুবুরি দল।
এ ঘটনায় কর্তব্যরত অবস্থায় পুলিশের ওপর হামলা ও হত্যার অভিযোগে জেলেদের নেতা ইয়ারুলকে প্রধান করে আট জনের নামে কুমারখালী থানায় মামলা করেন উপপরিদর্শক নজরুল ইসলাম। মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় আরও ২০-২৫ জনকে।
তবে স্থানীয় লোকজন ও জেলেদর ভাষ্য, স্থানীয় ইউপি সদস্যদের সহযোগিতায় কয়েকজন পুলিশ সদস্য নৌকা নিয়ে পদ্মা নদীতে যান। এ সময় তারা জেলেদের মাছ নেওয়ার চেষ্টা করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কয়েকটি নৌকার লোকজন এক হয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়।
নিহত মুকুল হোসেন মেহেরপুর সদর উপজেলার কালা চাঁদপুর গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে। আর সদরুল হাসান পাবনার আতাইকুলা থানার কাজীপুর এলাকার আব্দুল ওহাবের ছেলে। এ ঘটনায় সমকালে একাধিক সংবাদ প্রকাশ হয়।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন ও দেড় শ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে সাবেক সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী ও অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ বুধবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থার উপপরিচালক মো. আজিজুল হক বাদী হয়ে মামলাটি করেন। দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ১ হাজার ১৯০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তা নিজের দখলে রেখেছেন। এ ছাড়া আসাদুজ্জামান নূরের নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৯টি হিসাবে ১৫৮ কোটি ৭৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
দুদকের অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ২০০৩-০৪ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত আসাদুজ্জামান নূরের বৈধ আয় ছিল ৩২ কোটি ৯৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৮ টাকা। এ সময়ে তাঁর পারিবারিক ব্যয় ছিল ৯ কোটি ৩২ লাখ ২৫ হাজার ৭৬১ টাকা। সে অনুযায়ী নিট সঞ্চয় দাঁড়ায় ২৩ কোটি ৬৪ লাখ ৫৭ হাজার ৯২৭ টাকা। অথচ তাঁর অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২৯ কোটি ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৭ টাকা। এতে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার উৎস পাওয়া যায়নি বলে দুদক জানিয়েছে।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূরের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ৮৫ কোটি ৭২ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৩ টাকা জমা এবং ৭৩ কোটি ৫ লাখ ৮১ হাজার ৩০৫ টাকা উত্তোলন হয়েছে। এসব লেনদেনের উৎস অস্পষ্ট।
২০০১ সালে নীলফামারী-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আসাদুজ্জামান নূর। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের পর সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের বিরুদ্ধে একে একে মামলা ও গ্রেপ্তার শুরু করে দুদক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর বেইলী রোডে নিজ বাসা থেকে আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেপ্তার করা হয়।