শিশু যৌন নিপীড়ন ধাপাচাপা দিতে সাংবাদিককে আইনজীবীর চাপ
Published: 11th, March 2025 GMT
মানিকগঞ্জে এক বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়ে তিন বছরের শিশু যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়ার ঘটনা ধামাচাপা দিতে সাংবাদকিকে চাপ প্রয়োগ করার অভিযোগ উঠেছে টাঙ্গাইল জজ কোর্টের আইনজীবী চিত্তরঞ্জন দাস নুপুরের বিরুদ্ধে।
সোমবার (১০ মার্চ) রাতে যৌন নিপীড়নের বিষয়ে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে খোঁজ নিতে যান কয়েকটি মিডিয়ার সাংবাদিকরা। এর সত্যতা পেয়ে সাংবাদিকরা যখন ফিরে যাচ্ছিলেন সেসময় আইনজীবী চিত্তরঞ্জন দাস নুপুর মুঠোফোনে ডিবিসি টেলিভিশনের সাংবাদিক সোহেল তালুকদারকে ফোন করে নিউজ না করতে চাপ প্রয়োগ করেন।
ফোনে আইনজীবী চিত্তরঞ্জন দাস নুপুর বলেন, “নারী শিশু কোর্টের বিচারক অথবা টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপারকে বলে বিষয়টি মীমাংসা করা হবে। কোন মামলা যাতে না হয়, সেই বিষয়টিও আমি দেখছি।” বিষয়টি এত সহজে মীমাংসা করা যায় কিনা উল্টো প্রশ্ন করলে বিভিন্ন আইন দেখানোর চেষ্টা করেন তিনি।
এদিকে ঘটনার শাস্তি দাবি করলেও অস্বস্তি প্রকাশ করে সাংবাদিকদের সামনে আসেনি শিশুটির মা ও বাবা।
এর আগে গত শুক্রবার (৭ মার্চ) মানিকগঞ্জে বিয়ের দাওয়াতে গিয়ে ওই শিশু ১৪ বছরের এক স্কুলছাত্রের মাধ্যমে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়। বিষয়টি ওই শিশুর মা টের পেয়ে টাঙ্গাইল চলে আসেন। রবিবার (৯ মার্চ) শিশুটিকে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে শিশুকে চিকিৎসক দেখার পর সোমবার (১০ মার্চ) উন্নত চিকিৎসার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে শিশুটিকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে ভর্তি করা হয়।
শিশুরটি মা বলেন, “বিয়ের অনুষ্ঠানের রাতে শিশুটির সাথে অন্যায় কাজ করা হয়। পরে মেয়ে আমাকে জানায় সে গোপনাঙ্গে ব্যাথা অনুভব করছে। পরে ঘটনার বিস্তারিত জানতে পারি আমার মেয়ের সাথে আমাদেরই আত্মীয়ের ১৪ বছরের একটি ছেলে খারাপ কাজ করেছে। বিষয়টি নিয়ে পারিবারিকভাবেও অশান্তিতে আছি।”
এ বিষয়ে ডিবিসি টেলিভিশনের সাংবাদিক সোহেল তালুকদার বলেন, “বিজ্ঞ আইনজীবী ধর্ষকের পক্ষে একজন গণমাধ্যমকর্মীকে সংবাদ না করার জন্য হুমকি দিতে পারেন এটাই বিষ্মিত করেছে। তিনি এই ঘটনা মীমাংসা করতে পারেন কি না এমন কথায় ওই আইনজীবি বলেন, আদালতের জজ ও পুলিশ সুপারের সাথে কথা বলে সমাধান করবেন তিনি।”
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে দায়িত্বরত নার্সরা জানায়, শিশুটির সাথে খুবই অন্যায় করা হয়েছে। ধর্ষণের আলামত সংগ্রহের জন্য সোয়াব টেস্ট করা হয়েছে।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাধায়ক ডা.
ঢাকা/কাওছার/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আইনজ ব ব ষয়ট
এছাড়াও পড়ুন:
বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষা ২৮ জুন অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীদের সুবিধার জন্য লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির পরামর্শ প্রকাশ করা হচ্ছে। আজ পঞ্চম পর্বে থাকছে বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ বিষয়ে প্রস্তুতির পরামর্শ। পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী রিয়াজুর রহমান।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ মূলত আইনজীবীদের পেশাজীবনের অনুসরণীয় বিধিমালা। এ আইন থেকে আইনজীবী তালিকাভুক্তি লিখিত পরীক্ষায় দুটি প্রশ্ন আসবে। উত্তর দিতে হবে একটি। নম্বর থাকবে ১০।
প্রশ্নপত্রের মানবণ্টন দেখেই বোঝা যাচ্ছে আইনটি কেমন হতে পারে। মূলত বার কাউন্সিলের গঠন, আইনজীবী হওয়ার যোগ্যতা এবং একজন আইনজীবী হিসেবে সমাজের প্রতি, মক্কেলের প্রতি, সহকর্মীদের প্রতি যেসব দায়িত্ব পালন করতে হবে, তা এ আইনে বলা হয়েছে। বাস্তবধর্মী ও পেশাজীবনে অতি চর্চিত একটি আইন হলো বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২। এ আইন থেকে বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনা করলে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব।
যেমন বার কাউন্সিল কীভাবে গঠিত হয়, বার কাউন্সিলের কার্যবালি কী, সদস্যরা কীভাবে নির্বাচিত হন, কতগুলো কমিটি রয়েছে, কমিটির কাজ কী কী—এগুলো পড়তে হবে। অনেকেই আছে বার কাউন্সিল ও বার অ্যাসোশিয়েশনের মধ্যে পার্থক্য বোঝেন না। এটি ভালো করে রপ্ত করতে হবে। এমন প্রশ্ন হরহামেশা পরীক্ষায় আসে।
এ ছাড়া বার ট্রাইব্যুনালের গঠন ও কার্যাবলি, আইনজীবীদের পেশাগত অসদাচরণের জন্য কী কী ধরনের শাস্তি রয়েছে, বার কাউন্সিল কি আইনজীবীদের বিরুদ্ধে সুয়োমোটো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে—বিষয়গুলো কোনোভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না। অনুচ্ছেদ ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩২ এবং বিধি ৪১, ৪১ক ও ৫০–এ এসব বিষয়ে বিস্তারিত বলা আছে। সেগুলো ভালো করে পড়তে হবে। অনুসন্ধান করার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা, একজন আইনজীবী হিসেবে আরেক আইনজীবীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়েরের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তর জানতে হবে। এসব বিষয় থেকে নিয়মিত প্রশ্ন আসে।
পেশাগত বিধি অংশে রচনামূলক প্রশ্ন আসতে পারে। যেমন পেশাগত বিধি এবং নীতিমালার আলোকে আদালতের প্রতি, মক্কেলের প্রতিসহ আইনজীবীদের প্রতি ও জনসাধারণের প্রতি একজন আইনজীবীর দায়িত্ব ও কর্তব্য পর্যালোচনা করতে বলা হয়। বর্তমান ঢাকা বারসহ বেশ কয়েকটি বার অ্যাসোশিয়েশনে এডহক কমিটি রয়েছে। এডহক বার কাউন্সিলের গঠন ও ফাংশনস সম্পর্কে প্রশ্ন আসতে পারে। এগুলো ভালো করে পড়তে হবে।
অনেক সময়ে আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরসংক্রান্ত মুসাবিদা করতে দেওয়া হয়। তাই এই মুসাবিদা নিয়মিত অনুশীলন করবেন। মনে রাখবেন, মামলার মুসাবিদা ও আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগের মুসাবিদার ধরন কিন্তু এক নয়। তাই যেকোনো ভালো একটি বই থেকে ফরমেটটি দেখে নেবেন এবং অনুশীলন করবেন। একই সঙ্গে বিগত কয়েক বছরের প্রশ্ন সমাধান করবেন। এ আইন থেকে বিগত বছরের প্রশ্ন রিপিটও হয়।
একটি বিষয় মনে রাখবেন, আইনটি সহজ বলে অবহেলা করার সুযোগ নেই। কারণ, কৃতকার্য হওয়ার জন্য এই ১০ নম্বর অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে।