রাজশাহীতে বিএনপির ২ গ্রুপের সংঘর্ষে আহত রিকশাচালকের মৃত্যু
Published: 11th, March 2025 GMT
রাজশাহীতে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের সময় ছুরিকাঘাতে আহত হওয়া রিকশাচালক গোলাম হোসেন রকি (৪৮) মারা গেছেন।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ২ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
রামেক হাসপাতালের মুখপাত্র ডা. শংকর কে বিশ্বাস এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ওই সংঘর্ষের সময় রিকশাচালক গোলাম হোসেনের বুকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছিল। এছাড়া তার মাথায় আঘাত ছিল। ঘটনার পর থেকেই তার জ্ঞান ফেরেনি। সন্ধ্যার পর তিনি মারা গেছেন।
তবে এ ব্যাপারে কিছু জানা নেই বলে জানিয়েছেন নগরের বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক হাসান। তিনি বলেন, ‘‘সংঘর্ষে এ রকম কেউ আহত হয়েছিল বলে আমার জানা নেই। সে মারা গেছে বলেও কেউ আমাকে জানায়নি। দেখি, খোঁজ নিয়ে দেখি।’’
এর আগে গত শুক্রবার (৭ মার্চ) সন্ধ্যায় নগরের দড়িখড়বোনা এলাকায় বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। আগের দিন রাতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতার ফ্ল্যাটে অভিযান এবং তার ভাইকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়ান বিএনপির দুই গ্রুপের নেতাকর্মীরা। প্রায় চার ঘণ্টা ধরে চলে ওই সংঘর্ষ। তখন ককটেল ফাটানো হয়, গুলিরও শব্দ শোনা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রিকশাচালক গোলাম হোসেন ওই রাতে রিকশা রেখে হেঁটে ভাড়া বাসায় যাচ্ছিলেন। তখন একটি গ্রুপ তাকে আরেক গ্রুপের লোক ভেবে ছুরিকাঘাত করে। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
নিহত গোলাম হোসেনের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার সাহেবপাড়ায়। রাজশাহী নগরের দড়িখড়বোনা মহল্লায় তিনি স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন। শহরে রিকশা চালিয়ে তিনি সংসার চালাতেন।
গোলাম হোসেনের মৃত্যুর ব্যাপারে কথা বলতে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈসা ও সদস্য সচিব মামুনুর রশিদকে ফোন করা হলে তারা ধরেননি। তাই তাদের সঙ্গে কথা বলা যায়নি।
ঢাকা/কেয়া/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ র স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমল ৭৫ পয়সা
রাজশাহীতে হিমাগারে আলু সংরক্ষণে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সোমবার আলুচাষি, ব্যবসায়ী ও হিমাগারমালিকদের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হিমাগারে প্রতি কেজি আলু রাখার জন্য ভাড়া দিতে হবে ৫ টাকা ৫০ পয়সা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে শ্রমিকের খরচ ৫০ পয়সা। সেই হিসাবে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমেছে ৭৫ পয়সা।
এর আগে গত মার্চে সরকার প্রতি কেজি আলু রাখার ভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর পর থেকে এ নিয়ে রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা বাড়তি ভাড়ায় আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। এ নিয়ে কয়েক দফা তাঁরা রাজপথে আন্দোলনও করেছেন। অন্যদিকে হিমাগারমালিকদের দাবি ছিল, প্রতি কেজি আলুর ভাড়া ৮ টাকা করা হোক।
রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন এবং রাজশাহী জেলা আলুচাষি ও আলু ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজশাহীতে হিমাগার থেকে বাড়তি ভাড়া না দিলে আলু ছাড়া হবে না। এর প্রতিবাদে ঈদের পর নতুন করে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা আন্দোলন করে আসছেন। তাঁদের দাবি, আলু রাখার খরচ আগের বছরের মতো চার টাকা করতে হবে। এ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তাঁরা। হিমাগার মালিকপক্ষ এ নিয়ে আলোচনায় বসার তাগিদ দিয়ে আসছিল।
এরই মধ্যে আলুচাষিনেতারা ১৪ জুন সেনাবাহিনীর কাছে এ নিয়ে একটি অভিযোগ দেন। পরে বিষয়টি আমলে নিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আজ দুপুরে সভা ডাকা হয়। সভায় সব পক্ষের সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয় যে এ বছর সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সার বদলে ৫ টাকা ৫০ পয়সা ও শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা রাখা হবে। আর পেইড বুকিংয়ের ক্ষেত্রে শুধু শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে আলু রাখা চাষি ও ব্যবসায়ীদের। পরে বিকেলে ক্যান্টনমেন্টে হওয়া এই সিদ্ধান্ত প্রশাসনিকভাবে পাস করার জন্য রাজশাহী জেলা প্রশাসকের দপ্তরে সভা হয়।
সভায় আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, হিমাগার মালিক সমিতি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি, পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল মঙ্গলবার রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে নতুন ভাড়ার বিজ্ঞপ্তি সব হিমাগারে প্রচার করা হবে।
এ ব্যাপারে সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এবার আলুর দাম কম। আবার এ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘাতের আশঙ্কা ছিল। এ নিয়ে একটি অভিযোগ পান তাঁরা। পরে দুই পক্ষকে নিয়ে সভা হয়। সভায় সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত বিকেলে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আরেকটি সভার মাধ্যমে পাস হয়েছে।
রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মিঠু আহমেদ বলেন, শুরু থেকেই তাঁরা বাড়তি ভাড়ার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। কয়েক দিন ধরে তাঁরা হিমাগার থেকে আলু নিতে পারছিলেন না। হিমাগারগুলোয় বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছিল। এ নিয়ে আন্দোলনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীকেও অবহিত করেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত একটি ভালো সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রহমান সিডস স্টোরেজের ব্যবস্থাপক আবদুল হালিম বলেন, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি কেজি আলু রাখতে খরচ পড়বে ৫ টাকা ৫০ পয়সা আর শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা। এ ছাড়া যাঁরা আগে থেকেই টাকা দিয়ে অগ্রিম বুকিং দিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে আলুর কেজিপ্রতি শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে।
রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, নতুন সিদ্ধান্ত সব হিমাগারমালিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হবে।
আরও পড়ুনরাজশাহীতে হিমাগারে ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশ১৫ জুন ২০২৫