প্রেমে রাজি না হওয়ায় কিশোরীকে ধর্ষণ, মামলা তুলে না নেওয়ায় বাবাকে হত্যার অভিযোগ
Published: 12th, March 2025 GMT
বরগুনা সদর উপজেলায় সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। গত ৫ মার্চ ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে বরগুনা সদর থানায় এই মামলা করেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে মামলার একমাত্র আসামি সীজিব চন্দ্র রায়কে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। এরপর থেকেই বাদীকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিয়ে আসছিলেন অভিযুক্তের বাবা শ্রীরাম চন্দ্র রায়। কিন্তু, বাদী মামলা তুলে নেননি। এজন্য তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে নিজ বাড়ির পেছন থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহতের স্ত্রী বলেন, ‘‘গত রাতে বাড়ি ফিরতে দেরি হওয়ায় স্বামীর মোবাইলে করি। সে সময় বাড়ির পেছন থেকে তার মোবাইলের রিংটোনের শব্দ ভেসে আসছিল। দ্রুত সেখানে গিয়ে দেখি, তার মরদেহ পড়ে আছে।’’
আরো পড়ুন:
কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: তিন জনের যাবজ্জীবন, দুই শিশুর ১০ বছরের দণ্ড
বিরামপুরে দুই শিশুকে ধর্ষণচেষ্টা, গ্রেপ্তার ১
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘‘গত ৪ মার্চ আমার সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়েকে ধর্ষণ করে সীজিব চন্দ্র রায়। পরদিন এ ঘটনায় ওর বাবা বাদী হয়ে মামলা করেন। পুলিশ ওই দিনই সীজিবকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। এরপর থেকেই মামলা তুলে নিতে হুমকি দিয়ে আসছিল সিজীবের বাবা শ্রীরাম চন্দ্র রায়। মামলা তুলে না নেওয়ায় তাকে হত্যা করেছে শ্রীরাম।’’
বাদীপক্ষের আইনজীবী বাবুল দাস বলেন, ‘‘আদালতে আজ ধর্ষণ মামলার তারিখ ধার্য ছিল। এর আগে, বাদীকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিয়ে আসছিলেন শ্রীরাম চন্দ্র রায়। আজ তার মরদেহ পাওয়া গেল।’’
বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবদুল হালিম এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ধর্ষণ মামলার বাদীকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। তবে, এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অভিযুক্ত শ্রীরাম চন্দ্র রায়সহ ৪ জনকে আটক করেছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।’’
ঢাকা/ইমরান/রাজীব
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেমের টানে চীনা যুবকের বাংলাদেশে এসে বিয়ে
মাদারীপুরে মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের প্রেমের টানে চীনের নাগরিক শি তিয়ান জিং বাংলাদেশে এসেছেন। বিয়ে করে বর্তমানে মাদারীপুরে শশুরবাড়িতে আছেন। ভিনদেশি যুবককে দেখার জন্য ওই বাড়িতে মানুষ ভিড় করছেন।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুরের সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের উত্তর মহিষেরচর এলাকার বাসিন্দা সাইদুল হোসেনের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (১৯)। সুমাইয়া মাদারীপুর শহরের সরকারি সুফিয়া মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। তারা তিন বোন। সুমাইয়া বড়। মেঝ সাদিয়া আক্তার (১২) মাদ্রাসায় পড়ে। ছোট বোন আরিফা (৬)।
চীনের সাংহাই শহরের সি জিং নিং এর ছেলে শি তিয়ান জিং (২৬)। তারা দুই ভাই। বড় শি তিয়ান জিং। তার চীনের সাংহাই শহরে রেস্টুরেন্টের ব্যবসা আছে।
আরো পড়ুন:
‘একজন ছেলে মানুষ আমাদের পরিবারের বৌ হয়েছিল’
এক বিয়ের বরযাত্রী খেয়ে ফেলল অন্য বিয়ের খাবার
শি তিয়ান জিংকে টিকটকে দেখেন সুমাইয়া। এরপর ইউচ্যাটের মাধ্যমে কথা আদান-প্রদান হয়। উভয়ই গুগলের মাধ্যমে লেখা অনুবাদ করে মনের ভাব আদান- প্রদান করেন। এক পর্যায় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। মাত্র চার মাসের প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে গত ২৪ জুলাই চীন থেকে বাংলাদেশ আসেন শি তিয়ান জিং। এরপর এক দিন ঢাকার একটি হোটেলে থাকেন। ২৬ জুলাই মাদারীপুর সদর উপজেলার মহিষেচরের সুমাইয়ার বাড়িতে আসেন।
সুমাইয়া, সুমাইয়ার বাবা সাইদুল ইসলাম ও তার দুইজন আত্মীয় মিলে ঢাকা থেকে শি তিয়ান জিংকে মাদারীপুরে নিয়ে আসেন। বাংলা ভাষায় কথা বলতে না পারায় মোবাইলে অনুবাদ করে কথা আদান-প্রদান করেন শি তিয়ান জিং। এরপর ২৭ জুলাই তারা বিয়ে করেন। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে সুমাইয়ার বাড়িতে মানুষ ভিড় করতে থাকে।
সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘‘টিকটক দেখে আমি ওর ভক্ত হই। এরপর ইউচ্যাটের মাধ্যমে কথা হয়। পরে দুজনেই প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। মাত্র চার মাসের প্রেমের সূত্র ধরে চীন থেকে বাংলাদেশ আমার কাছে চলে আসবে, তা কখনো ভাবিনি। ও প্লেনে উঠার সময় বলেছে, আমি বাংলাদেশে আসছি। আমি বিশ্বাস করিনি। যখন ইন্ডিয়া এসে আমাকে জানায়, তখন বিশ্বাস করেছি।’’
সুমাইয়া আক্তার আরো বলেন, ‘‘ও ওর মা-বাবাকে আমার কথা বলেছে। তারাও মুসলিম। ওর মা বলেছেন, আমাকে বিয়ে করে চীনে নিয়ে যেতে। তাই শি তিয়ান জিং বাংলাদেশে এসে আমাকে বিয়ে করেছেন।’’
সুমাইয়া বলেন, ‘‘এরই মধ্যে পাসপোর্ট করতে দিয়েছি। শি তিয়ান জিং এক মাস বাংলাদেশে থাকবে। এর মধ্যে আমার কাগজপত্র রেডি করা হবে। তারপর ও আমাকে চীনে নিয়ে যাবে। আমিও চীনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’’
শি তিয়ান জিং বলেন, ‘‘বাংলাদেশ আমার ভালো লেগেছে। তবে অনেক গরম। আর অনেক মানুষ আমাকে দেখতে আসে। তাই আমার ভয় লাগে। আমি ভালোবেসে চীন থেকে এখানে এসেছি। সুমাইয়াকে বিয়ে করেছি। এখন ওর কাগজপত্র রেডি করে চীনে নিয়ে যাবো। আমার পরিবার সব জানে। তারাই সুমাইয়াকে চীনে নিয়ে যেতে বলেছেন।’’
সুমাইয়ার বাবা সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘‘শি তিয়ান জিং আমাদের এখানে আছে। ও খুব ভালো ছেলে। খুবই অমায়িক। কোনো অহংকার নেই। এক মাস থাকবে এবং আমার মেয়েকে নিয়ে যাবে। আমরা খুব খুশি।’’
পাঁচখোলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রুবেল হাওলাদার জানান, প্রথমে আদালতের মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়। পরে সামাজিকভাবে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বিয়ে হয়। চীনে ওই ছেলের ব্যবসা আছে। কিছু দিনের মধ্যে সুমাইয়াকে চীনে নিয়ে যাবে।
ঢাকা/বকুল