কোনাবাড়ীতে বেতনের দাবিতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
Published: 13th, March 2025 GMT
বেতনের দাবিতে গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী এলাকার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে কোনাবাড়ী উড়ালসড়কের পাশে শুরু হওয়া এ কর্মসূচির কারণে মহাসড়কটিতে যান চলাচল ব্যাহত হয়।
পরে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে তাঁরা মহাসড়ক থেকে সরে গেলে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
পুলিশ ও কারখানাটির কয়েকজন শ্রমিকের সূত্রে জানা যায়, মহানগরীর কোনাবাড়ী এলাকার স্বাধীন গার্মেন্টস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকদের আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়, গত মাসের বেতন চলতি মাসের ২০ তারিখে দেওয়া হবে। একই সঙ্গে ২৭ মার্চ তাঁদের বোনাস দেওয়া হবে। কিন্তু চলতি মাসের বেতন কবে দেওয়া হবে, তা সিদ্ধান্ত হয়নি। গতকাল বুধবার শ্রমিকেরা কর্তৃপক্ষের কাছে সেই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে জানতে চান। কর্তৃপক্ষ জানায়, আজ এ ব্যাপারে তথ্য জানানো হবে। আজ সকালে শ্রমিকেরা কাজে যোগ দিয়ে বিষয়টি আবার জানতে চান। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোনো সিদ্ধান্ত না দেওয়ায় সকাল থেকেই কারখানাটিতে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা। একপর্যায়ে বেলা ১১টার দিকে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ নিয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের অবস্থান নেন।
কারখানার শ্রমিক আসাদুল ইসলাম জানান, কারখানা কর্তৃপক্ষ চলতি মাসের বেতন কবে দেবে, সেটি জানতে চাইলে নানা ধরনের কথাবার্তা বলে। সঠিক কোনো কথা বলছিল না। তাই বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিকেরা।
বিক্ষোভের একপর্যায়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেন কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, এতে প্রায় আধা ঘণ্টা মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার কিশোরের মৃত্যু
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার এক কিশোর ১২ দিন পর মারা গেছে। নিহত কিশোরের নাম মো. শিহাব (১৭)। সে উপজেলার বসন্তপুর গ্রামের মিজানুর রহমান রিপনের ছেলে। চলতি বছর এসএসসি পাস করেছে সে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে ছিল শিহাব। শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে তার মৃত্যু হয়।
এর আগে গত ২০ আগস্ট রাত আটটার দিকে তাকে নির্মম নির্যাতন করা হয়। রিপনের এক ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে শিহাব ছিল সবার বড়। প্রচণ্ড মারধরের পর থেকেই সে অচেতন অবস্থায় ছিল।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিহাব গত ২০ অক্টোবর পার্শ্ববর্তী বান্দুড়িয়া এলাকায় তার প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে যায়। সে তেঁতুলতলা বাঁকের কাছে গেলে তার প্রেমিকার আত্মীয়-স্বজনেরা তাকে তাড়া দেয়। শিহাব নিজেকে রক্ষা করতে রাতের অন্ধকারে মাঠের মধ্যে দৌড় দেয়। একপর্যায়ে শিহাব দিক হারিয়ে অন্ধকারের মধ্যে পুকুরে ঝাঁপ দেয়।
সেসময় কিছু ব্যক্তিও পুকুরে নেমে শিহাবকে মারধর শুরু করে। এরপর তাকে পুকুর থেকে তুলে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটান।
একপর্যায়ে শিহাব জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে ঢলে পড়ে। এরপর লাঠি দিয়ে শিহাবকে আরো পিটিয়ে ফেলে রেখে যায় প্রেমিকার আত্মীয়রা। পরে স্থানীয় লোকজন ও পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন। মাথায় গুরুত্বর আঘাত থাকায় তার জ্ঞান ফেরেনি। তাই তাকে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল।
শিহাবকে নির্যাতনের ঘটনায় তার বাবা রিপন গত ২৪ অক্টোবর রাতে রতন আলী (৩২), মো. কানন (২২), সুজন আলী (৩২), ইয়ার উদ্দীন (৩২), মো. শরীফ (৩৫), মো. রাব্বি (২৫), মো. হালিম (৩০) এবং মো. কলিম (৩২) নামের নয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরো আট থেকে নয়জনকে অজ্ঞাত আসামি করে গোদাগাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেন। তবে শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুর পর্যন্ত এদের কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি থানা-পুলিশ।
গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, “প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে শিহাব হামলার শিকার হয়েছিল। তার মৃত্যুর খবর শুনেছি। ময়নাতদন্তের পর মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। হামলার ঘটনায় আগে করা মামলাটি এখন হত্যা মামলায় রূপান্তর হবে। আসামিদের গ্রেপ্তারে সব ধরনের চেষ্টা চলছে।”
ঢাকা/কেয়া/এস