রাজশাহীতে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের সময় রিকশাচালককে ছুরি মেরে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুরে নগরের বোয়ালিয়া থানায় মামলা করেন নিহত রিকশাচালক গোলাম হোসেনের (৪৮) স্ত্রী পরিবানু বেগম। মামলায় ছয় জনকে আসামি করা হয়েছে।

বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক হাসান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মামলায় ছয় জনের নাম উল্লেখ করার পাশাপাশি অজ্ঞাত আরও ১৫-১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান ওসি।

তবে মামলার এজাহারভুক্ত ছয় আসামিরও নাম জানাতে চাননি ওসি মোস্তাক হাসান। মামলার কপি আদালতে পাঠানো হলে সেখান থেকে আসামিদের নাম জেনে নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

গত ৬ মার্চ নগরের কাদিরগঞ্জ এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতার ফ্ল্যাটে অভিযান ও তার ভাইকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়াকে কেন্দ্র করে পরদিন সন্ধ্যায় বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। দড়িখড়বোনা ও আশপাশের এলাকায় প্রায় চার ঘণ্টা ধরে চলা ওই সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। গুলি ছোড়া হয়। পুড়িয়ে দেওয়া হয় তিনটি মোটরসাইকেল।

মহাজনের রিকশা জমা করে এই রণক্ষেত্রের ভেতর দিয়ে হেঁটে বাসায় যাচ্ছিলেন গোলাম হোসেন। তখনই একপক্ষ অপর পক্ষের লোক ভেবে রিকশাচালক গোলামকে ছুরি মারে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত মঙ্গলবার রাতে তিনি মারা যান।

ছয় বছর বয়সে বাবা-মাকে হারিয়ে রাজশাহীর এতিমখানায় ঠাঁই হয়েছিল কুমিল্লার গোলাম হোসেনের। তারপর বিয়ে, ঘর, সংসার- সবই হয়েছিল এই শহরে। তিনি দড়িখড়বোনা এলাকায় রেললাইনের পাশে দুই হাজার টাকা ভাড়ার একটি টিনের ঘরে স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন।

ঢাকা/কেয়া/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

‘বিএনপিকে ল্যাং মারতে গিয়ে নিজেদের ঠ্যাং যেন না ভেঙে যায়’


একটি দল অহেতুক জাতীয় নির্বাচনকে প্রলম্বিত করতে নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি করছে। বিএনপির ছত্রচ্ছায়ায় রাজনীতি করলেও তারা এখন বিএনপিকে ল্যাং মারতে সচেষ্ট। জনগণ স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য ১৫ বছর আন্দোলন বা জুলাই-আগস্টে রক্ত দেয়নি। বিএনপিকে ল্যাং মারতে গিয়ে গণতন্ত্রের ক্ষতি করলে জনগণ ক্ষমা করবে না। বিএনপিকে ল্যাং মারতে গিয়ে নিজেদের ঠ্যাং যেন না ভেঙে যায়।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে মহান মে দিবস উপলক্ষে ময়মনসিংহ জেলা শ্রমিক দল আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।
সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, নির্বাচিত শাসন ও গণতন্ত্র ছাড়া শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা বা তাঁর সমস্যার সমাধান হবে না। বিগত ১৫ বছর হাসিনার ফ্যসিবাদবিরোধী আন্দোলনসহ জুলাই-আগস্টে গণ–অভ্যুত্থানে শ্রমজীবী মানুষের অবদান রয়েছে। গণ–অভ্যুত্থানে শ্রমজীবী মানুষের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে বিএনপি কাজ করবে। জনগণের রায়ে বিএনপি সরকার পরিচালনার সুযোগ পেলে সর্বনিম্ন মজুরি ৩০ হাজার টাকা নির্ধারণসহ শ্রমিকের অধিকার বাস্তবায়ন করবে।
ময়মনসিংহ রেলস্টেশনের কৃষ্ণচড়া চত্বরে জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি আবু সাঈদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মফিদুল হকের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ, ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকির হোসেন, উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার, দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর মাহমুদ, সদস্যসচিব রোকনুজ্জামান সরকার প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সমাবেশের পর একটি শোভাযাত্রা নগরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার কৃষ্ণচূড়া চত্বরে এসে শেষ হয়। পরে একই মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।
সমাবেশে এমরান সালেহ প্রিন্স অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আগামী ডিসেম্বরে নির্বাচনের লক্ষ্যে অবিলম্বে রোডম্যাপ ঘোষণার আহ্বান জানিয়ে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে বিএনপি সমর্থন করছে। কিন্তু নির্বাচন বিলম্বিত হলে জনগণ অধৈর্য হয়ে পড়লে বিএনপি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে নামতে দ্বিধা করবে না। তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি শ্রমিক, কৃষক, মেহনতিবান্ধব রাজনৈতিক দল। বিএনপি মেহনতি মানুষের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে রাজনীতি করে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ জিয়াউর রহমান নিজেকে শ্রমিক পরিচয় দিতে গর্ব করতেন। সে পরিচয়ে আমরাও গর্বিত, অমরা একজন শ্রমিকের প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলের কর্মী, আমরাও শ্রমিক।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ