মাগুরার সেই শিশু ধর্ষণের মামলায় দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন শিশুটির বোনের শ্বশুর। শনিবার (১৫ মার্চ) বিকেলে মাগুরা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সব্যসাচী রায় তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পুলিশ ও আদালত সূত্রে এতথ্য জানা গেছে।

পুলিশ ও আদালত  সূত্রে জানা গেছে, সাতদিনের রিমান্ডে থাকা মামলার মূল অভিযুক্ত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে চাইলে আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাকে আদালতে উপস্থাপন করেন। বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করেন বিচারক। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আসামি একাই এ ঘটনায় জড়িত বলে স্বীকার করেছেন। তবে, কখন ও কীভাবে এই ঘটনা, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।

আরো পড়ুন:

মুন্সীগঞ্জে ‘ধর্ষণে’ ব্যর্থ হয়ে ছুরিকাঘাত, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার

জামায়াতের ইফতার মাহফিলে বিএনপির বাধা, মামলা

মাগুরা সদর থানার ওসি মো.

আইয়ুব আলী সন্ধ্যায় বলেন, “আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে চাইলে তাকে আদালতে উপস্থাপন করা হয়। তিনি আদালতে কী বলেছেন, এটা আনুষ্ঠানিকভাবে জানা যায়নি।

এই ঘটনায় শিশুটির মায়ের করা মামলায় প্রধান অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি, তার স্ত্রী ও দুই ছেলেকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, অন্য তিন আসামি এখনো রিমান্ডে আছেন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

গত ১ মার্চ শিশুটি শ্রীপুরের নিজ বাড়ি থেকে পৌরসভার একটি গ্রামে বড় বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যায়। ৬ মার্চ সকাল ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেওয়া হয়। ১৩ মার্চ দুপুরে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় শিশুটি। এর আগে ৮ মার্চ মাগুরা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ ও ধর্ষণের মাধ্যমে আহত করার অভিযোগে মামলা করেন শিশুটির মা। মামলায় শিশুটির বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে আসামি করা হয়।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, চার মাস আগে মাগুরা পৌর এলাকার এক তরুণের সঙ্গে শিশুটির বড় বোনের বিয়ে হয়। ওই বাড়িতে বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুর থাকতেন। বিয়ের পর থেকে বড় মেয়েকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন তার শ্বশুর। বিষয়টি পরিবারের অন্য সদস্যরা জানতেন। এ নিয়ে ঝগড়াও হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে গত ১ মার্চ বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যায় আট বছরের শিশুটি।

এজাহারে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বাদী উল্লেখ করেন, ৫ মার্চ রাত ১০টার দিকে খাবার খেয়ে বড় বোন ও তার স্বামীর সঙ্গে একই কক্ষে ঘুমায় শিশুটি। দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে বড় বোন ঘুম থেকে জেগে দেখেন, ছোট বোন পাশে নেই, মেঝেতে পড়ে আছে। তখন শিশুটি বড় বোনকে জানায়, তার যৌনাঙ্গে জ্বালাপোড়া হচ্ছে। বড় বোন মনে করে, শিশুটি ঘুমের মধ্যে আবোলতাবোল বকছে।

এরপর সকাল ৬টার দিকে শিশুটি বোনকে আবার জ্বালাপোড়ার কথা বলে। কারণ জিজ্ঞাসা করলে, সে বোনকে জানায়, রাতে দুলাভাই (বোনের স্বামী) দরজা খুলে দিলে তার বাবা (শ্বশুর) তার মুখ চেপে ধরে তাঁর কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করেন। সে চিৎকার করতে গেলে তার গলা চেপে ধরা হয়। পরে তাকে আবার বোনের কক্ষের মেঝেতে ফেলে রেখে যায়।

ঢাকা/শাহীন/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বড় ব ন

এছাড়াও পড়ুন:

চাকসু নির্বাচন আয়োজনে বাজেট কত, খরচ যেসব খাতে

দীর্ঘ ৩৫ বছর পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের আয়োজন হতে যাচ্ছে। এ নির্বাচনে ভোট দেবেন প্রায় ২৭ হাজার শিক্ষার্থী। ইতিমধ্যে ১ হাজার ১৬২ শিক্ষার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। ফলে এত দিনের প্রত্যাশিত আয়োজন ও বিপুলসংখ্যক ভোটার সামনে রেখে নির্বাচনী বাজেট কত দাঁড়াবে, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে।

নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ভোটকেন্দ্র থেকে ফলাফল ঘোষণা—সব ধাপেই প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবস্থা রাখা হবে। এ জন্য ক্যাম্পাসজুড়ে বসানো হবে সিসিটিভি ক্যামেরা, যাতে ভোট গ্রহণ ও গণনাপ্রক্রিয়া নিয়ে পরবর্তী সময়ে কোনো অভিযোগ উঠলে প্রমাণ রাখা যায়। ফলাফল তাৎক্ষণিকভাবে শিক্ষার্থীদের দেখাতে স্থাপন করা হবে ১৪টি এলইডি স্ক্রিন (পর্দা)। দরপত্রের মাধ্যমে এসব পর্দা বসানো হবে। খরচ হবে প্রায় ১০ লাখ টাকা।

এ ছাড়া ব্যালট পেপার ও ব্যালট বাক্স তৈরি, ওএমআর মেশিনে ফলাফল গণনা, বুথ স্থাপন, পরিবহন, নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা, দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক–কর্মচারীদের সম্মানী—সব মিলিয়েই বাজেট ধরা হয়েছে।

বাজেটের বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা চাহিদা অনুযায়ী খরচ করবেন। আপাতত ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকার একটা প্রাথমিক হিসাব রাখা হয়েছে। এটি আরও বাড়তে পারে। কেননা শেষ পর্যন্ত কতজন প্রার্থী হবেন, কয়টি ব্যালট পেপার ছাপাতে হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। অবশ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে (ডাকসু) এক কোটি টাকার বেশি খরচ হয়েছে।

আগামী ১২ অক্টোবর ভোট গ্রহণ করা হবে। ভোটারের নিরাপত্তা, অংশগ্রহণ ও আস্থা নিশ্চিত করা ছাড়া বিকল্প নেই। এ জন্যই খরচের প্রতিটি খাত খুঁটিয়ে পরিকল্পনা করা হচ্ছে। অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা বলছেন, নির্বাচন আয়োজনে কত টাকা খরচ হবে, তা ভোট গ্রহণের পর প্রকাশ করা উচিত। এতে স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে না।

চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম হলো শাটল ট্রেন। প্রতিদিন ১ জোড়া শাটল ৯ বার যাওয়া-আসা করে। তবে ভোটের দিন প্রতি ঘণ্টায় ট্রেন থাকবে। এটির জন্য আলাদা বরাদ্দ নির্ধারণ করা হবে।

নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ১৮ সেপ্টেম্বর। প্রার্থীর প্রাথমিক তালিকা প্রকাশিত হবে ২১ সেপ্টেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৩ সেপ্টেম্বর। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হবে ২৫ সেপ্টেম্বর।

রং করা হচ্ছে চাকসু ভবন। গতকাল দুপুরে

সম্পর্কিত নিবন্ধ