মাগুরার শিশুটির বোনের শ্বশুর আদালতে দিলেন জবানবন্দি
Published: 15th, March 2025 GMT
মাগুরার সেই শিশু ধর্ষণের মামলায় দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন শিশুটির বোনের শ্বশুর। শনিবার (১৫ মার্চ) বিকেলে মাগুরা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সব্যসাচী রায় তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পুলিশ ও আদালত সূত্রে এতথ্য জানা গেছে।
পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, সাতদিনের রিমান্ডে থাকা মামলার মূল অভিযুক্ত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে চাইলে আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাকে আদালতে উপস্থাপন করেন। বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করেন বিচারক। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আসামি একাই এ ঘটনায় জড়িত বলে স্বীকার করেছেন। তবে, কখন ও কীভাবে এই ঘটনা, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।
আরো পড়ুন:
মুন্সীগঞ্জে ‘ধর্ষণে’ ব্যর্থ হয়ে ছুরিকাঘাত, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার
জামায়াতের ইফতার মাহফিলে বিএনপির বাধা, মামলা
মাগুরা সদর থানার ওসি মো.
এই ঘটনায় শিশুটির মায়ের করা মামলায় প্রধান অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি, তার স্ত্রী ও দুই ছেলেকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, অন্য তিন আসামি এখনো রিমান্ডে আছেন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
গত ১ মার্চ শিশুটি শ্রীপুরের নিজ বাড়ি থেকে পৌরসভার একটি গ্রামে বড় বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যায়। ৬ মার্চ সকাল ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেওয়া হয়। ১৩ মার্চ দুপুরে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় শিশুটি। এর আগে ৮ মার্চ মাগুরা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ ও ধর্ষণের মাধ্যমে আহত করার অভিযোগে মামলা করেন শিশুটির মা। মামলায় শিশুটির বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, চার মাস আগে মাগুরা পৌর এলাকার এক তরুণের সঙ্গে শিশুটির বড় বোনের বিয়ে হয়। ওই বাড়িতে বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুর থাকতেন। বিয়ের পর থেকে বড় মেয়েকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন তার শ্বশুর। বিষয়টি পরিবারের অন্য সদস্যরা জানতেন। এ নিয়ে ঝগড়াও হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে গত ১ মার্চ বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যায় আট বছরের শিশুটি।
এজাহারে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বাদী উল্লেখ করেন, ৫ মার্চ রাত ১০টার দিকে খাবার খেয়ে বড় বোন ও তার স্বামীর সঙ্গে একই কক্ষে ঘুমায় শিশুটি। দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে বড় বোন ঘুম থেকে জেগে দেখেন, ছোট বোন পাশে নেই, মেঝেতে পড়ে আছে। তখন শিশুটি বড় বোনকে জানায়, তার যৌনাঙ্গে জ্বালাপোড়া হচ্ছে। বড় বোন মনে করে, শিশুটি ঘুমের মধ্যে আবোলতাবোল বকছে।
এরপর সকাল ৬টার দিকে শিশুটি বোনকে আবার জ্বালাপোড়ার কথা বলে। কারণ জিজ্ঞাসা করলে, সে বোনকে জানায়, রাতে দুলাভাই (বোনের স্বামী) দরজা খুলে দিলে তার বাবা (শ্বশুর) তার মুখ চেপে ধরে তাঁর কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করেন। সে চিৎকার করতে গেলে তার গলা চেপে ধরা হয়। পরে তাকে আবার বোনের কক্ষের মেঝেতে ফেলে রেখে যায়।
ঢাকা/শাহীন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
তালাকপ্রাপ্ত নারীর ঘরে আটক পুলিশ সদস্য বললেন, ‘কালিমা পড়ে বিয়ে করেছি’
রাজশাহীতে তালাকপ্রাপ্ত এক নারীর ঘর থেকে পুলিশের এক কনস্টেবলকে আটক করেছেন স্থানীয়রা। পরে তাকে পুলিশে দেওয়া হয়েছে। বুধবার (৩০ এপ্রিল) মধ্যরাতে নগরীর তালাইমারি বাদুড়তলা এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।
ওই পুলিশ কনস্টেবলের নাম টি এম নাসির উদ্দিন। তিনি পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের বেইজড ওয়ারলেস অপারেটর। বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) দুপুর পর্যন্ত তিনি নগরীর মতিহার থানায় ছিলেন।
ওই কনস্টেবলের বাড়ি সিরাজগঞ্জে। সেখানে তার স্ত্রী-সন্তান আছে। যে নারীর ঘরে তাকে পাওয়া গেছে তার স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে।
কনস্টেবল নাসির দাবি করেন, আগের স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর তিনি ওই নারীকে কালেমা পড়ে বিয়ে করেছেন।
মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুল মালেক বলেন, ‘‘তালাকপ্রাপ্ত নারী তার মায়ের বাড়িতেই থাকতেন। সেখানে রাতে আমাদের কনস্টেবল যান। তখন স্থানীয়রা দুজনকে ঘরে আটকে রেখে থানায় খবর দেন। আমরা গিয়ে তাদের থানায় এনেছি।’’
ওসি বলেন, ‘‘কনস্টেবল দাবি করেছেন, তিনি কালেমা পড়ে ওই নারীকে বিয়ে করেছেন। আগের স্ত্রীও বিষয়টি অবগত। তবে, বিয়ের কোনো রেজিস্ট্রি নেই। এখন তিনি রেজিস্ট্রি করে নিতে চাচ্ছেন। দুজনে থানায় আছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।’’
‘‘এক্ষেত্রে, কনস্টেবল নাসিরের আগের স্ত্রীর কোনো আপত্তি থাকলে তিনি আইনি পদক্ষেপ নিতে পারবেন।’’- যোগ করেন ওসি আবদুল মালেক।
রাজশাহী রেঞ্জের পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ শাহজাহান মিয়া বলেন, ‘‘বিষয়টা আমার জানা নাই। এ রকম হয়ে থাকলে অবশ্যই বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
ঢাকা/কেয়া/রাজীব