আলোকে ধরা যায় না, স্পর্শ করা যায় না, শুধু দেখা যায়। এবার ইতালির সিএনআর ন্যানোটেকের একদল বিজ্ঞানী আলোকে প্রথমবারের মতো সুপারসলিড বা কিছুটা কঠিন আকারে রূপান্তরের দাবি করেছেন। নেচার সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আলোর নতুন এই রূপকে ঘর্ষণমুক্ত প্রবাহ ও কাঠামোবদ্ধ আকারে তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। এর ফলে সুপারসলিডিটি সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের জানার নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে। এর আগে শুধু আলট্রাকোল্ড অ্যাটম কনডেনসেট দিয়ে এমন অবস্থা তৈরি করা সম্ভব হয়েছিল।
সুপারসলিড অবস্থা পদার্থের বিশেষ অবস্থা, যা তরলের মতো প্রবাহিত হয়, তবে তার মধ্যে কঠিন–সদৃশ গঠন থাকে। বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত শুধু খুব বেশি ঠান্ডা গ্যাসের মধ্যে এ ধরনের অবস্থা শনাক্ত করেছেন। নতুন গবেষণার তথ্যমতে, আলোকে এমন কঠিন রূপে আনা সম্ভব। এ বিষয়ে ইতালির সিএনআর ন্যানোটেকের বিজ্ঞানী আন্তোনিও জিয়ানফেট ও পাভিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ডেভিড নিগ্রো বলেন, এই আবিষ্কার সুপারসলিডিটি বোঝার শুরু মাত্র। সাধারণভাবে যখন কোনো তরল হিমায়িত হয়, তখন অণুর গতি ধীর হয়ে যায় এবং কঠিন আকারে নিজেদের সাজিয়ে রাখে।
নতুন এ গবেষণায় পরম শূন্যের কাছাকাছি তাপমাত্রা নিয়ে কাজ করা হয়েছে, যেখানে অদ্ভুত কোয়ান্টাম প্রভাব দেখা গেছে। পরম শূন্য হলো সর্বনিম্ন সম্ভাব্য তাপমাত্রা, যেখানে সব আণবিক গতি থেমে যায়। এটিকে শূন্য কেলভিন বা ২৭৩ দশমিক ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস হিসেবেও সংজ্ঞায়িত করা হয়। এই তাপমাত্রায় পরমাণু ন্যূনতম শক্তিতে থাকে ও পদার্থ অস্বাভাবিক আচরণ করে বোস–আইনস্টাইন ঘনীভূত হিসেবে রূপান্তরিত হয়। যদিও নিখুঁত শূন্য তাপমাত্রায় পৌঁছানো কঠিন।
পদার্থের সুপারসলিড অবস্থার তথ্য ১৯৬০–এর দশকে প্রথম ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল। বোস–আইনস্টাইন কনডেনসেট নামের ধারণার ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত নতুন এ গবেষণায় দেখা গেছে, খুবই কম তাপমাত্রায় আলোর কণা একক হিসাবে একেক রকম আচরণ করে থাকে। যখন অনেক বেশি আলোর কণা উপস্থিত হয়, তখন তারা অস্বাভাবিক আচরণ করে। তখন এমন নিদর্শন তৈরি করে, যা সুপারসলিড আচরণ করে এবং গুচ্ছ আকারে কঠিনরূপে পরিণত হয়। এদের আইসোএনার্জেটিক বলা হয়ে থাকে।
নতুন এ আবিষ্কারের বিষয়ে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ‘আমরা একটি ফোটোনিক সেমিকন্ডাক্টর প্ল্যাটফর্মে এই অবস্থা অর্জন করা যায় কি না, তার জন্য কাজ করছিলাম। ফোটোনিক সেমিকন্ডাক্টর প্ল্যাটফর্মে ফোটন ইলেকট্রনের অনুরূপভাবে পরিচালিত হয়। আমরা ফোটনকে সুপারসলিড হিসেবে আচরণ করে কি না, তা জানার চেষ্টা করেছি।’
সূত্র: ইকোনমিক টাইমস
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
অতিরিক্ত মোটা হওয়ায় যাত্রীকে তুলতে অস্বীকৃতি উবার চালকের
চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার জন্য সম্প্রতি রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠান উবারের একটি গাড়ি ডেকেছিলেন মাইকেল। গাড়িটি আসার পর দরজা খুলে ভেতরে ঢুকতে যেতেই বাধল বিপত্তি। ‘অতিরিক্ত মোটা’ হওয়ায় চালক তাঁকে গাড়িতে তুলতে অস্বীকৃতি জানান। যুক্তরাষ্ট্রে ঘটে যাওয়া এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
গেমিং প্ল্যাটফর্ম টুইচের জনপ্রিয় স্ট্রিমার মাইকেল। ওই প্ল্যাটফর্মে তাঁর ৬০ হাজারের বেশি সাবস্ক্রাইবার রয়েছে। তিনি তাঁর কল অব ডিউটি গেমপ্লের জন্য পরিচিত।
মাইকেল সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। ভিডিওর শিরোনামে তিনি লিখেছেন, ‘আমি মজা করছি না। আমার উবার চালক বলেছেন, আমি নাকি অনেক বেশি মোটা। তাই তাঁর গাড়িতে আমাকে নেওয়া সম্ভব নয়। এমনকি তিনি আমার দিকে বন্দুক তাক করার হুমকিও দিয়েছেন।’ মাইকেলের ওই ভিডিও পাঁচ কোটিবারের বেশি দেখা হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, মাইকেল উবারের গাড়িচালককে বলছেন, ‘আপনি এইমাত্র বললেন, আমি নাকি অনেক বেশি মোটা। আমি কিন্তু আপনার ভিডিও করছি।’ উত্তরে উবার চালক নারী বলেন, ‘এটা যুক্তি আর বাস্তবতার ব্যাপার। আর আমি এটা বলার অধিকার রাখি।’ কিন্তু বাক্যটি শেষ করার আগেই মাইকেল তাঁকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, ‘না, আপনি এটা বলতে পারেন না।’ তখন ওই নারী হাত উঁচিয়ে বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি পারি। এটা আমার গাড়ি। আপনি এখান থেকে চলে যান।’
বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে ওই উবার চালক বলেন, ‘আপনি কি চান, আমি আমার বন্দুকটা বের করি?’ এ কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গে মাইকেল গাড়ির দরজা বন্ধ করে সেখান থেকে চলে যান। এক্সে দেওয়া অন্য একটি পোস্টে মাইকেল বলেন, এ ঘটনার কারণে তিনি সেদিন চিকিৎসকের কাছে যেতে পারেননি।
উবারের নীতি অনুযায়ী, চালকেরা বৈধ কারণ ছাড়া কোনো যাত্রীকে গাড়িতে তুলতে অস্বীকৃতি জানাতে পারবেন না। ওজন, লিঙ্গ, বর্ণ কিংবা ধর্মের ভিত্তিতে কোনো যাত্রীর সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা সম্পূর্ণ নিষেধ।
এই ঘটনা ভাইরাল হওয়ার পর উবার চালকের আচরণের তীব্র সমালোচনা করেছেন অনেকে।