নওগাঁয় মোকামে কেজিতে ৩ থেকে ৪ টাকা বেড়েছে সরু চালের দাম
Published: 17th, March 2025 GMT
দেশের অন্যতম বড় চালের মোকাম নওগাঁয় এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারিতে দেশে উৎপাদিত সরু চালের দাম কেজিতে তিন থেকে চার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর খুচরায় বেড়েছে কেজিতে চার থেকে পাঁচ টাকা পর্যন্ত। সরু চাল খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেজি। তবে দেড় মাস ধরে স্থিতিশীল রয়েছে মোটা চালের দাম। এ ছাড়া ভারত থেকে আমদানি করা কাটারি চালের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরু চাল হিসেবে পরিচিত জিরাশাইল (জিরা) ও কাটারিভোগ (কাটারি) ধানের আমদানি বর্তমানে বাজারে নেই বললেই চলে। চাহিদার তুলনায় যে সামান্য ধান আমদানি হচ্ছে, তা বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। স্থানীয় বাজারে দুই থেকে তিন সপ্তাহের ব্যবধানে জিরাশাইল ও কাটারিভোগ ধানের দাম মণপ্রতি ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ধানের মূল্যবৃদ্ধির কারণে চালের দামও বেড়েছে।
ধান-চাল উৎপাদনে প্রসিদ্ধ জেলা হিসেবে পরিচিত নওগাঁয় চালের দাম বাড়লে বা কমলে সারা দেশের বাজারে তার প্রভাব পড়ে। নওগাঁর সবচেয়ে বড় চালের মোকাম শহরের আলুপট্টি এলাকার বিভিন্ন আড়তে খোঁজ নিয়ে যায়, বিভিন্ন মিল গেটে ৫০ কেজির প্রতি বস্তা জিরাশাইল ও কাটারিভোগ চালের দাম এক সপ্তাহের ব্যবধানে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর পাইকারিতে কেজিতে চালের দাম বেড়েছে দুই থেকে তিন টাকা। এক সপ্তাহ আগে মানভেদে প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) জিরাশাইল চালের দাম ছিল ৩ হাজার ৭০০ থেকে ৩ হাজার ৭৫০ টাকা। বর্তমানে সেই দাম বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার ৮৫০ টাকা। একইভাবে কাটারিভোগ চালের প্রতি বস্তা এক সপ্তাহ আগে ৩ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে তা ৩ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার ৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে মোটা চাল হিসেবে পরিচিত স্বর্ণা-৫ ও গুটি স্বর্ণা চালের বাজার দেড় মাস ধরে স্থিতিশীল রয়েছে। প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) স্বর্ণা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৬০০ টাকায়। রনজিত ও ঊনপঞ্চাশ জাতের চাল প্রতি বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৯০০ থেকে ৩ হাজার টাকায়।
পাইকারি বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় খুচরা বাজারে সরু চাল হিসেবে পরিচিত জিরাশাইল ও কাটারিভোগ চালের দাম কেজিতে চার থেকে পাঁচ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। সোমবার সকালে নওগাঁ পৌর ক্ষুদ্র চালবাজারে খোঁজ নিয়ে যায়, প্রতি কেজি জিরাশাইল বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮২ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে এই চাল বিক্রি হয়েছে ৭৬ থেকে ৭৮ টাকা কেজি দরে। এ ছাড়া প্রতি কেজি কাটারিভোগ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে দাম ছিল ৭৮ থেকে ৮০ টাকা। প্রায় দেড় মাস ধরে স্থিতিশীল থাকা মোটা চাল হিসেবে পরিচিত স্বর্ণা চাল খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা কেজি দরে। প্রতি কেজি ঊনপঞ্চাশ ও রনজিত চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। এ ছাড়া ভারত থেকে আমদানি করা কাটারি চাল বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭২ টাকা কেজি দরে। এই চালের বাজারদর এক মাস ধরে স্থিতিশীল রয়েছে।
নওগাঁ পৌর ক্ষুদ্র চালবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মকবুল হোসেন বলেন, ‘দেশে উৎপাদিত জিরা ও কাটারি চালের দাম বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর পাইকারিতে ৭৫ থেকে ৭৮ টাকা কেজি দরে চাল কিনে ক্যারিং (পরিবহন) খরচ, দোকান ভাড়া ও কর্মচারীর খরচ যোগ হয়ে খুচরায় আমাদের প্রতি কেজি জিরা ও কাটারি চাল ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে।’
পাইকারিতে মূল্যবৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে নওগাঁ জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার প্রথম আলোকে বলেন, শুধু দেশে উৎপাদিত জিরা ও কাটারি চালের দাম কেজিতে তিন থেকে চার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। কারণ জিরা ও কাটারি ধান বর্তমানে শর্ট আইটেম। বাজারে কাটারি ও জিরা ধানের আমদানি নেই। চাহিদার তুলনায় আমদানি কমে যাওয়ায় প্রতি মণ (৪০ কেজি) জিরা ও কাটারি ধানের দাম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে। এ কারণে পাইকারিতে দেশে উৎপাদিত জিরা ও কাটারি চালের দামও কিছুটা বেড়েছে। তবে ভারত থেকে আমদানি করা কাটারি চাল ও দেশে উৎপাদিত মোটা চালের বাজারদর স্থিতিশীল রয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উৎপ দ ত ১০০ থ ক পর চ ত ৫০ ক জ স বর ণ ৮০ থ ক আমদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকায় জামায়াতসহ ৭ দলের বিক্ষোভ আজ, কোথায়, কখন, কোন দল
ফেব্রুয়ারিতে জুলাই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ কয়েক দফা দাবিতে রাজধানী ঢাকায় আজ বৃহস্পতিবার একযোগে বিক্ষোভ মিছিল করবে জামায়াতে ইসলামীসহ সাতটি দল।
বিক্ষোভের আগে বায়তুল মোকাররম, জাতীয় প্রেসক্লাবসহ আশপাশের এলাকায় দলগুলো সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করবে। বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব কর্মসূচি চলবে।
প্রায় অভিন্ন দাবিতে সাতটি দল তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। আজ প্রথম দিনে রাজধানী ঢাকায়, আগামীকাল শুক্রবার বিভাগীয় শহরে এবং ২৬ সেপ্টেম্বর সব জেলা ও উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি রয়েছে দলগুলোর।
জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) এই কর্মসূচি পালন করবে। সাতটি দলের কেউ ৫ দফা, কেউ ৬ দফা, কেউ ৭ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করলেও সবার মূল দাবি প্রায় অভিন্ন। দাবিগুলো হচ্ছে
জুলাই সনদের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন এবং তার ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান, জাতীয় সংসদের উভয় কক্ষে (কেউ কেউ উচ্চকক্ষে) সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতি চালু করা
অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা
বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সব জুলুম, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।
সাড়ে চারটায় জামায়াতআজ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ ফটকের সামনে সমাবেশের পর বিক্ষোভ মিছিল করবে জামায়াত। সমাবেশে দলের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর কমিটির নেতারা বক্তব্য দেবেন। জামায়াতের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।
জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদ প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ ফটক থেকে মিছিল বের হয়ে পুরানা পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেসক্লাব ও মৎস্য ভবনের পাশ দিয়ে শাহবাগ পর্যন্ত যেতে পারে।
বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ ফটক থেকে মিছিল বের হয়ে পুরানা পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেসক্লাব ও মৎস্য ভবনের পাশ দিয়ে শাহবাগ পর্যন্ত যেতে পারে।জোহরের পর ইসলামী আন্দোলনজোহর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তরে প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল করবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। মিছিলে নেতৃত্ব দেবেন দলের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম। ইসলামী আন্দোলনের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা যৌথভাবে এ কর্মসূচির আয়োজন করেছে।
জোহর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তরে প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল করবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।আসরের পর বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসআসর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর ফটকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করবে মাওলানা মামুনুল হকের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। গতকাল এক বিবৃতিতে দলের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ কর্মসূচিতে সবাইকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
এ ছাড়া খেলাফত মজলিস বেলা তিনটায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে। এতে দলের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন।
একই সময়ে, একই জায়গায় মিছিল করবে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনও। বিকেল চারটায় একই জায়গায় বিক্ষোভ করবে বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি।
আসর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর ফটকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করবে মাওলানা মামুনুল হকের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস।জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) বিকেল সাড়ে চারটায় বিজয়নগর পানির ট্যাংকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করবে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, রাজধানীর মধ্য এলাকায় একযোগে সাতটি দলের বিক্ষোভের কর্মসূচি ঘিরে নেতা-কর্মীদের সমাগমে সড়কে যানজটের সৃষ্টি হতে পারে। এ জন্য নগরবাসী দুর্ভোগের সম্মুখীন হতে পারেন। যদিও আজ ও আগামীকাল সকালে বিসিএস পরীক্ষা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের জন্য এই সাত দল কর্মসূচি বিকেলে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) বিকেল সাড়ে চারটায় বিজয়নগর পানির ট্যাংকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করবে।