বরিশাল সিটি করপোরেশনে চাকরি ফিরে পেতে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের বিক্ষোভ
Published: 18th, March 2025 GMT
বরিশাল সিটি করপোরেশনের চাকরিচ্যুত পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা চাকরি ফিরে পাওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছেন। আন্দোলনকারী ব্যক্তিরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে দুই মাসের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের পাশাপাশি চাকরিতে পুনর্বহালে কর্তৃপক্ষ তাঁদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না করলে তাঁরা কঠোর আন্দোলনে যাবেন।
আন্দোলনকারী ব্যক্তিরা জানান, গত ১ জানুয়ারি বরিশাল সিটি করপোরেশনের ১৬০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে কোনো ধরনের নোটিশ না দিয়ে এবং বেতন-ভাতা বকেয়া রেখে চাকরিচ্যুত করেছে কর্তৃপক্ষ। এর পর থেকে তাঁরা চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে ধারাবাহিক আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে আসছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে সিটি করপোরেশনে শ্রমিক ইউনিয়ন ও হরিজন সম্প্রদায়ের শ্রমিকেরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন। বেলা ১১টায় তাঁরা এই দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি নগরের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে ফজলুল হক অ্যাভিনিউ এলাকায় সমাবেশ হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সিটি করপোরেশন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি হোসেন ঢালি। বক্তব্য দেন হরিজন সংঘের সভাপতি সানু লাল, শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য আবুল হোসেন। এতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র বরিশাল জেলা সভাপতি এ কে আজাদ, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট বরিশাল জেলার দপ্তর সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট বরিশাল মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক সুজন আহমেদ এবং ইজিবাইকের চালক সংগ্রাম পরিষদের দপদপিয়া ইউনিয়নের সভাপতি রমজান আকন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, দুই মাসের বেতন বকেয়া রেখে ১ জানুয়ারি সিটি করপোরেশনের ১৬০ জন শ্রমিককে বিনা নোটিশে চাকরিচ্যুত করায় ওই সব শ্রমিকেরা পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম দুর্দশায় পড়েছেন। সমাবেশে সিটি করপোরেশন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি হোসেন ঢালি বলেন, এক মাস আগে আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ও বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারের উপস্থিতিতে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ এবং ষাট বছরের ঊর্ধ্বের বয়সী শ্রমিকদের পরিবার-পরিজনকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এরপর এক মাস পার হলেও প্রশাসন এখনো প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
আন্দোলনকারী শ্রমিকদের একজন বলেন, ‘আমরা অল্প বেতনে চাকরি করে এত দিন পরিবার নিয়ে খেয়ে–না খেয়ে জীবনধারণ করতাম। এখন সেই সংস্থানটুকুও না থাকায় পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছি। আমরা এ জন্য অবিলম্বে আমাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন চাই। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’
বিষয়টি নজরে আনা হলে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল বারি বলেন, ‘সরকারি নিয়ম মেনেই শ্রমিকদের ছাঁটাই করা হয়েছে। তবে আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেছি এবং তাঁদের লিখিত আবেদন দেওয়ার জন্য বলেছি। কিন্তু তাঁরা কোনো আবেদন দেননি। আবেদন করলে আমরা তা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে বিবেচনার জন্য ব্যবস্থা নিতে পারি। এর বাইরে আপাতত কোনো কিছুই আমাদের করণীয় নেই।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বর শ ল স ট পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
জকসুসহ তিন দফা দাবি মেনে নিল প্রশাসন, ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ও সম্পূরক বৃত্তিসহ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি মেনে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের আশ্বাসে ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভেঙে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
বুধবার রাত দশটার দিকে প্রশাসনের পক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় অনশনরত শিক্ষার্থীদের ফলের রস খাইয়ে অনশন ভাঙানো হয়। শিক্ষার্থীদের অনশন ভঙ্গ করান করান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক ও সিন্ডিকেট সদস্য বিলাল হোসাইন।
এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক শেখ গিয়াসউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই মোতাবেক নির্বাচনের রূপরেখাও ঘোষণা করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আগামী জানুয়ারি থেকে আবাসন ভাতা পাবেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে বৃত্তির জন্য উপযুক্ত শিক্ষার্থীদের নভেম্বরের মধ্যে যাচাই-বাছাই করার কাজ শেষ করা হবে।
অনশনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ২৭ নভেম্বরের আগেই কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপন করা হবে। ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মানোন্নয়নে প্রশাসন কাজ করবে।
আরও পড়ুনতিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৪ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ১২ ঘণ্টা আগেএ সময় অনশনে বসা উদ্ভিদ বিজ্ঞানের বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। জকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে। আবাসন ভাতার জন্য প্রতিশ্রুত সময়ও দিয়েছে প্রশাসন। কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ কারণে আমরা অনশন ভেঙে আন্দোলন প্রত্যাহার করেছি।
সতর্ক করে দিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যদি প্রশাসন ঘোষিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবিগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সমস্ত দায় মাথায় নিয়ে সম্পূর্ণ প্রশাসনকে পদত্যাগ করতে হবে।
এর আগে তিন দফা দাবি আদায়ে গত মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন চারজন শিক্ষার্থী। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়। অনশনে বসা চার শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন বাগছাসের নেতা।
আরও পড়ুনজকসু নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা, ভোট ২৭ নভেম্বর২ ঘণ্টা আগে