সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ঈদের ছুটির সময়ে হলে থাকা ছাত্রীদের কোনো দুর্ঘটনার জন্য হল কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না জানিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল কর্তৃপক্ষ এমন নির্দেশনা দেয়। এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।

ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, হলের আবাসিক ছাত্রীদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে, পবিত্র ঈদুল ফিতরের পূর্ণাঙ্গ ছুটি চলার সময়ে যাঁরা হলে থাকবেন, সে সময় কোনো ধরনের ঘটনা ও দুর্ঘটনার জন্য হল কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। উল্লেখ্য যে ২৭ মার্চ থেকে আগামী ৬ এপ্রিল পর্যন্ত কোনো ছাত্রী হলে থাকতে পারবেন না। যদি কেউ একান্তই থাকতে ইচ্ছুক হন, তাহলে নিজ দায়িত্বে থাকবেন ও অবশ্যই ২০ মার্চের আগে হল অফিসে আবেদন করতে হবে। সেই সঙ্গে নিজেদের অভিভাবকের কাছ থেকে প্রত্যয়নপত্র আনতে হবে। প্রত্যয়নপত্র ছাড়া কোনো ছাত্রী এই বন্ধে হলে অবস্থান করতে পারবেন না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে কঠোর সমালোচনা করে পোস্ট ও মন্তব্য করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গ্রুপ ‘সাস্টিয়ান ভয়েস’-এ একাধিক শিক্ষার্থী বিজ্ঞপ্তির সমালোচনা করে পোস্ট দিয়েছেন।

বৃষ্টি আচার্য নামে ওই হলের এক শিক্ষার্থী বিজ্ঞপ্তিটিসহ পোস্ট দিয়ে লিখেছেন, ‘সব সময় পাহারাদার/গার্ড মামারা থাকা সত্ত্বেও হল কর্তৃপক্ষ ঈদের ছুটির সময়ে সেখানে অবস্থান করলে মেয়েদের কোনো রকম “ঘটনা/দুর্ঘটনার” দায় নেবেন না। অথচ বাসা দূরে হওয়ায় কিংবা পরীক্ষার প্রস্তুতি কারণে সব সময়ই কিছুসংখ্যক ছাত্রী হলে অবস্থান করেন। এ ছাড়া অনেক ডিপার্টমেন্টে ৯ এপ্রিল থেকে সেমিস্টার ফাইনাল শুরু, স্বাভাবিকভাবেই শিক্ষার্থীরা ৪ থেকে ৫ তারিখ আসতে চাইবেন। কিন্তু এর জন্যও নাকি অভিভাবকের প্রত্যয়নপত্র লাগবে!! এখন ওনারা (কর্তৃপক্ষ) যদি নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে না–ই পারেন, একটা আবাসিক হলের দায়িত্বে আছেন কেন? আর হুট করে এমন দায়সারা নোটিশ আসলে মেয়েদের মধ্যে উৎকণ্ঠা বাড়িয়ে তুলেছে।.

..’

এক পোস্টে মোহাম্মদ সজীব মোল্লা নামের এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘দায়িত্বই যদি না নিতে পারবে আর নিরাপত্তাই যদি না দিতে পারবে, তাহলে সেই পদে থাকার দরকার কী? ভাবতে অবাক লাগছে, এটা কি আদৌ বিশ্ববিদ্যালয়!’

এদিকে ভাইরাল বিজ্ঞপ্তিতে কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষর না থাকলেও সেটি সঠিক বলে নিশ্চিত করেছেন বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রাধ্যক্ষ সৈয়দা সুলতানা পারভীন। বিজ্ঞপ্তি ও শিক্ষার্থীদের আলোচনা-সমালোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হলের নিরাপত্তা ও সমস্যার বিষয়ে ছাত্রীরা যেভাবে ব্যাখ্যা করছে, বিষয়টি আসলে তেমন নয়। ছাত্রীদের সুবিধার জন্যই আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। ছাত্রীদের নিজেদের নিরাপত্তার বিষয়টি তাদের বোঝা উচিত। তবে বিজ্ঞপ্তিটিকে কেন্দ্র করে গুটি কয়েক ছাত্রী অযথাই বিষয়টিকে জটিল করেছে। তারা নিজেদের নিরাপত্তার বিষয়টি বুঝেনি।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য র ঘটন ব ষয়ট

এছাড়াও পড়ুন:

ইসির ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠন করার নির্দেশ

বিতর্কিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার ও সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে এ-সংক্রান্ত আলোচনা শেষে এমন নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ।

এই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, সফররাজ হোসেন ও মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে যে অতীতের তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজনে কর্মকর্তাদের ভূমিকা তদন্ত করা এবং তাঁদের জবাবদিহির আওতায় আনা প্রয়োজন।

জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই সনদ

বৈঠকে কমিশন সদস্যরা জুলাই সনদ তৈরির কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, বেশ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। শিগগিরই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সনদ চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘সবাই জুলাই সনদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আশা করি, আগামী জুলাই মাসের মধ্যে আমরা এটি জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারব।’

‘প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে’

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর লন্ডন সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, লন্ডনে বাংলাদেশি কমিউনিটির যাঁদের সঙ্গেই দেখা হয়েছে, তাঁরা সংস্কার নিয়ে জানতে চেয়েছেন। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা খুব আগ্রহী। তাঁরা বিস্তারিতভাবে ঐকমত্য কমিশনের কাজ নিয়ে তাঁর (প্রধান উপদেষ্টা) সঙ্গে আলোচনা করেছেন, মতামত দিয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যেখানেই গিয়েছি, সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, “আমরা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারব তো?” আমাদের প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। পোস্টাল ব্যালট এবং আর কী কী অপশন আছে, সেগুলো নিয়ে ভাবতে হবে, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ