ঈদে হলের ছাত্রীদের দায় না নেওয়ার বিজ্ঞপ্তি, আলোচনা-সমালোচনা
Published: 19th, March 2025 GMT
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ঈদের ছুটির সময়ে হলে থাকা ছাত্রীদের কোনো দুর্ঘটনার জন্য হল কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না জানিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল কর্তৃপক্ষ এমন নির্দেশনা দেয়। এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, হলের আবাসিক ছাত্রীদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে, পবিত্র ঈদুল ফিতরের পূর্ণাঙ্গ ছুটি চলার সময়ে যাঁরা হলে থাকবেন, সে সময় কোনো ধরনের ঘটনা ও দুর্ঘটনার জন্য হল কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। উল্লেখ্য যে ২৭ মার্চ থেকে আগামী ৬ এপ্রিল পর্যন্ত কোনো ছাত্রী হলে থাকতে পারবেন না। যদি কেউ একান্তই থাকতে ইচ্ছুক হন, তাহলে নিজ দায়িত্বে থাকবেন ও অবশ্যই ২০ মার্চের আগে হল অফিসে আবেদন করতে হবে। সেই সঙ্গে নিজেদের অভিভাবকের কাছ থেকে প্রত্যয়নপত্র আনতে হবে। প্রত্যয়নপত্র ছাড়া কোনো ছাত্রী এই বন্ধে হলে অবস্থান করতে পারবেন না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে কঠোর সমালোচনা করে পোস্ট ও মন্তব্য করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গ্রুপ ‘সাস্টিয়ান ভয়েস’-এ একাধিক শিক্ষার্থী বিজ্ঞপ্তির সমালোচনা করে পোস্ট দিয়েছেন।
বৃষ্টি আচার্য নামে ওই হলের এক শিক্ষার্থী বিজ্ঞপ্তিটিসহ পোস্ট দিয়ে লিখেছেন, ‘সব সময় পাহারাদার/গার্ড মামারা থাকা সত্ত্বেও হল কর্তৃপক্ষ ঈদের ছুটির সময়ে সেখানে অবস্থান করলে মেয়েদের কোনো রকম “ঘটনা/দুর্ঘটনার” দায় নেবেন না। অথচ বাসা দূরে হওয়ায় কিংবা পরীক্ষার প্রস্তুতি কারণে সব সময়ই কিছুসংখ্যক ছাত্রী হলে অবস্থান করেন। এ ছাড়া অনেক ডিপার্টমেন্টে ৯ এপ্রিল থেকে সেমিস্টার ফাইনাল শুরু, স্বাভাবিকভাবেই শিক্ষার্থীরা ৪ থেকে ৫ তারিখ আসতে চাইবেন। কিন্তু এর জন্যও নাকি অভিভাবকের প্রত্যয়নপত্র লাগবে!! এখন ওনারা (কর্তৃপক্ষ) যদি নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে না–ই পারেন, একটা আবাসিক হলের দায়িত্বে আছেন কেন? আর হুট করে এমন দায়সারা নোটিশ আসলে মেয়েদের মধ্যে উৎকণ্ঠা বাড়িয়ে তুলেছে।.
এক পোস্টে মোহাম্মদ সজীব মোল্লা নামের এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘দায়িত্বই যদি না নিতে পারবে আর নিরাপত্তাই যদি না দিতে পারবে, তাহলে সেই পদে থাকার দরকার কী? ভাবতে অবাক লাগছে, এটা কি আদৌ বিশ্ববিদ্যালয়!’
এদিকে ভাইরাল বিজ্ঞপ্তিতে কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষর না থাকলেও সেটি সঠিক বলে নিশ্চিত করেছেন বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রাধ্যক্ষ সৈয়দা সুলতানা পারভীন। বিজ্ঞপ্তি ও শিক্ষার্থীদের আলোচনা-সমালোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হলের নিরাপত্তা ও সমস্যার বিষয়ে ছাত্রীরা যেভাবে ব্যাখ্যা করছে, বিষয়টি আসলে তেমন নয়। ছাত্রীদের সুবিধার জন্যই আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। ছাত্রীদের নিজেদের নিরাপত্তার বিষয়টি তাদের বোঝা উচিত। তবে বিজ্ঞপ্তিটিকে কেন্দ্র করে গুটি কয়েক ছাত্রী অযথাই বিষয়টিকে জটিল করেছে। তারা নিজেদের নিরাপত্তার বিষয়টি বুঝেনি।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকায় অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে শনিবার
ঢাকায় দুই দিনব্যাপী অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে আগামী শনিবার। এতে অটোমোবাইল, কৃষি যন্ত্রপাতিসহ হালকা প্রকৌশল খাতের ২৬টি স্টল থাকবে। পাশাপাশি শিল্পের সহায়ক প্রতিষ্ঠানের স্টল থাকবে আরও ১২টি। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
বাংলাদেশ অটোমোবাইলস অ্যাসেম্বলার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ও অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সহযোগিতায় এই প্রদর্শনীর আয়োজন করছে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)। ঢাকার তেজগাঁও শিল্প এলাকায় এডিসন প্রাইম ভবনের ছাদে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। এই ভবনেই বিসিআইয়ের কার্যালয় অবস্থিত।
আজ বৃহস্পতিবার বিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দুই দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী নিয়ে বিস্তারিত জানান চেম্বারটির সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী। আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী, বিসিআইয়ের পরিচালক মো. শাহেদ আলম, এস এম শাহ আলম, জিয়া হায়দার প্রমুখ।
বিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, হালকা প্রকৌশল খাতে বাংলাদেশে বর্তমানে ছোটবড় প্রায় ৫০ হাজার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই খাতে কাজ করেন ১০ লাখ মানুষ। হালকা প্রকৌশল খাতে স্থানীয় বাজার ১২ বিলিয়ন ডলারের হলেও দেশীয় উৎপাদকেরা অর্ধেক পূরণ করতে পারছেন। তা ছাড়া হালকা প্রকৌশল খাতের বৈশ্বিক বাজারের আকার প্রায় ৮ ট্রিলিয়ন ডলার। তিনি আরও বলেন, তৈরি পোশাক খাত আর বেশি মূল্য সংযোজন করতে পারবে না। ফলে আমাদের অর্থনীতিকে টেকসই করতে হলে আমাদের অন্য খাতে যেতে হবে। সে ক্ষেত্রে হালকা প্রকৌশল খাত পারে বড় সম্ভাবনার।
অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, প্রতিবছর কৃষিজমি কমছে। কৃষকের বয়স বাড়ছে, তার কারণ তরুণেরা খুব কম কৃষিকাজে আসছেন। বিশ্বের অনেক দেশেই মোট জনগোষ্ঠীর ১০ শতাংশের কম কৃষিকাজে নিয়োজিত। ১০ শতাংশ মানুষ বাকি ৯০ শতাংশের জন্য খাদ্য জোগান দিচ্ছে। সে কারণে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। বাংলাদেশেও কৃষিকাজে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। তবে বড় অংশই আমদানি করতে হচ্ছে।
আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে ১২০০ থেকে ১৫০০ কোটি টাকার কৃষি যন্ত্রপাতির বাজার আছে। তার মধ্যে দেশীয় কোম্পানিগুলো সরবরাহ করছে মাত্র ৪০০ থেকে ৪৫০ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ। নীতিসহায়তা পেলে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়বে বলে মন্তব্য করেন তিনি।