নারীর প্রতি সহিংসতা ভয়াবহতায় রুপ নিয়েছে: মহিলা পরিষদ
Published: 19th, March 2025 GMT
বাংলাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতা ও ধর্ষণের ভয়াবহতা অতীতের সব মাত্রাকেও ছাড়িয়ে গেছে বলে মনে করে জাতীয় মহিলা পরিষদ। আজ বুধবার দুপুরে, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয় মহিলা পরিষদ আয়োজিত এক মানববন্ধনে পরিষদের নেত্রীরা এ মন্তব্য করেন।
এ সময় মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ–সভাপতি ড. মাখদুমা নার্গিস রত্না বলেন, ‘আমরা অতীতেও নারীর প্রতি সহিংসতা দেখেছি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে নারীরা যে মাত্রায় ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, তা অবর্ণনীয়। নারী নির্যাতনের এমন রুপ বাংলাদেশে আগে কখনো ছিল না বলে মনে করেন তিনি।
নারী নির্যাতনের সঠিক চিত্র গণমাধ্যমে তুলে ধরা হয় না অভিযোগ করে নারী নেত্রীরা বলেন, আছিয়ার ঘটনা আমাদের বিবেককে নাড়িয়ে দিয়ে গেছে। কিন্তু বাংলাদেশে প্রতিদিন অসংখ্য আছিয়া যৌন নির্যাতন ও প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছে, গণমাধ্যমে সেই খবর সঠিকভাবে প্রচার হচ্ছেনা।
মানববন্ধনে বিচার বিভাগের দীর্ঘসূত্রতা দূর করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে অন্তবর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান জাতীয় মহিলা পরিষদ পরিচালক জনা গোস্বামী।
এদিকে, ‘ধর্ষণ’ বিষয়ে সম্প্রতি ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারের বক্তব্যের সমালোচনা করেন মহিলা পরিষদের নেত্রীরা। তারা বলেন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষার সাথে জড়িতদের দায়িত্বশীলতার সাথে কথা বলতে হবে। ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতা একটি মারাত্নক ব্যাধি, তাই এটাকে রাজনৈতিকভাবে না জড়ানোর আহ্বান জানান তারা।
নারী নেত্রী ফেরদৌস জামান রত্নার সঞ্চালনায় মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন হেনা চৌধুরী। এ সময় মহিলা পরিষদের পরিচালক দীপ্তি শিকদার, রেহানা ইউনুস, কানিজ ফাতেমাসহ অন্যান্য নারী নেত্রীরা বক্তব্য রাখেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন, হুশিয়ারী
বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে শুধুমাত্র সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের জারি করা প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে নারায়ণগঞ্জে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা। সমাবেশ শেষে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হয়।
বুধবার (৩০ জুলাই) সকাল ১১টায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সিদ্ধিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদ আয়োজিত এই কর্মসুচিতে সিদ্ধিরগঞ্জের দেড় শতাধিক কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অংশ নেয়। শিক্ষার্থীদের হাতে " প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৫ এ বৈষম্য কেন? শিক্ষা উপদেষ্টা জবাব চাই" সহ বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত প্লেকার্ড শোভা পায়।
সিদ্ধিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদের সভাপতি মজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা বিল্লাল হোসেন রবিন, ঢাকা কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের সভাপতি জি এইচ ফারুক, বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন পরিচালক ঐক্য পরিষদের সভাপতি মো: সামসুজ্জামান, প্রধান সমন্বয়ক মো: সাইফুল ইসলাম রুবেল, মহাসচিব মো: সাখাওয়াত হোসেন খান, সিদ্ধিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ হোসেন ঢালী, শিক্ষক কাওসার আহমেদ, এসএম বিজয়, আল মামুন , তরিকুল ইসলাম, বাহাউদ্দিন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত ১৭ জুলাই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের জারি করা প্রজ্ঞাপনে শুধুমাত্র সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা হয়েছে। এতে দীর্ঘদিন ধরে এই পরীক্ষায় অংশ নেওয়া বেসরকারি, কিন্ডারগার্টেন ও এমপিও-বহির্ভূত বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত ও হতাশ হয়েছে।
বক্তারা আরও বলেন, “আজকের শিশু আগামীর ভবিষ্যৎ। অথচ কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত কোমলমতি শিশুদের বৃত্তি পরীক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে তাদের মৌলিক অধিকার হরণ করা হচ্ছে।”
তারা বলেন, দেশের প্রায় ৬০ হাজার কিন্ডারগার্টেনে প্রায় এক কোটি শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে, যাদের একটি বড় অংশ দীর্ঘ প্রস্তুতি নিয়ে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আশায় এগিয়ে এসেছে। এখন এই সিদ্ধান্ত তাদের স্বপ্ন ও শ্রমের প্রতি অবিচার।
বক্তারা অভিযোগ করেন, সরকার বৈষম্যহীন শিক্ষাব্যবস্থা গড়ার অঙ্গীকার করলেও বাস্তবে এই প্রজ্ঞাপন সেই প্রতিশ্রুতির পরিপন্থী। তারা প্রশ্ন তোলেন, “ই আই আই এন নম্বরধারী নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে যদি এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হয়, তবে কেন নিবন্ধিত কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না?”
বক্তারা আরও বলেন ইতোমধ্যেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন, প্রতিবাদ ও স্মারকলিপি প্রদানের মাধ্যমে এই বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
সমাবেশ থেকে অবিলম্বে প্রজ্ঞাপন বাতিল করে সরকারি ও বেসরকারি সব প্রাথমিক শিক্ষার্থীর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়। অন্যথায় কঠোর আন্দোলন গড়ে তোরা হবে।
মানববন্ধন ও সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন, ১নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি নেজাম উদ্দিন শাহীন, ২নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি জাকির উল্লাহ সুজুন, ৩নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি মো: আজহারুল ইসলাম, ৫নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি মো: শামীম, ৬নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি মো: জাবের হোসেন, ৮নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি মো: আল আমিন, ১০ নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি এড: মো: খোরশেদ আলম প্রমুখ।