নওগাঁয় ডাকাতির পর পুলিশের ধাওয়া খেয়ে ট্রাক উল্টে এক ডাকাত নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও দুই ডাকাত।

বৃহস্পতিবার ভোর ৪টার দিকে নওগাঁ শহর বাইপাস সড়কের শিবপুর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

নিহত ডাকাতের নাম পরিচয় জানা যায়নি। আহত দুই ডাকাত হলেন, রুবেল হোসেন ও মাসুদ রানা। আহত অবস্থায় আটক দুই ডাকাত মাসুদ ও রুবেলকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে পুলিশি হেফাজতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মহাদেবপুর উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামের একটি বাড়িতে ডাকাতির চেষ্টাকালে বাড়ির লোকজনের চিৎকারে গ্রামবাসী বেরিয়ে এলে ডাকাতরা ট্রাক নিয়ে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে মহাদেবপুর থানা পুলিশ এবং নওগাঁ সদর থানা পুলিশ নওহাটার মোড়, আব্দুল জলিল পার্কসহ ৬টি স্থানে বেরিকেট দেয়। এবং ডাকাতদের ধাওয়া করে। ডাকাতরা ওই ছয়টি স্থানের বেরিকেট ভেঙে পালিয়ে যাবার সময় নওগাঁ শহর বাইপাস সড়কের শিবপুর এলাকায় তাদের ট্রাক উল্টে যায়। এতে ঘটনাস্থলে তিনজন গুরুতর আহত হন।  আহত তিনজনকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে একজন মারা যান। ডাকাতদের ওই ট্রাক থেকে একটি গরু ও দুটি ছাগল উদ্ধার করা হয়েছে ।

নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, আহত দুই ডাকাত মাসুদ ও রুবেলকে আটক করা হয়েছে। তাদের সদর হাসপাতালে পুলিশের হেফাজতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আর নিহত ডাকাতের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। তাদের বাড়ি বগুড়া এবং নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর ও রানীনগর থানায় বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বলেও জানান ওসি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন হত

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা

‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’

এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন। 

এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী  বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’

প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ