জিমেইলে একসঙ্গে একাধিক ই-মেইল মুছে ফেলবেন যেভাবে
Published: 20th, March 2025 GMT
দৈনন্দিন কাজের জন্য প্রতিদিন অসংখ্য ই-মেইল আদান-প্রদান করেন অনেকেই। এসব ই-মেইলের অ্যাটাচমেন্টে ছবি, ভিডিও ও পিডিএফ ফাইল থাকায় গুগল অ্যাকাউন্টে অনেক জায়গা দখল করে রাখে। এর ফলে প্রয়োজনের সময় জিমেইল ইনবক্স থেকে গুরুত্বপূর্ণ ই-মেইল খুঁজে পেতে বেশ সমস্যা হয়। শুধু তা-ই নয়, গুগল অ্যাকাউন্টে বিনা মূল্যে সর্বোচ্চ ১৫ গিগাবাইট পর্যন্ত তথ্য জমা রাখার সুযোগ থাকায় অপ্রয়োজনীয় ই–মেইল জমতে থাকলে দ্রুতই গুগল ক্লাউডের জায়গার সংকট দেখা দেয়। তবে চাইলেই জিমেইলের ইনবক্সে থাকা অপ্রয়োজনীয় ই-মেইলগুলো একসঙ্গে মুছে ফেলে এ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। জিমেইলে একসঙ্গে একাধিক ই-মেইল মুছে ফেলার পদ্ধতিগুলো দেখে নেওয়া যাক—
নির্দিষ্ট ঠিকানা থেকে আসা সব ই-মেইল মুছে ফেলানিজেদের পণ্য বা সেবার প্রচারণার জন্য একই ই-মেইল ঠিকানা থেকে নিয়মিত ই-মেইল পাঠিয়ে থাকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। ই-মেইলগুলো একসঙ্গে মুছে ফেলার জন্য জিমেইলের ওপরে থাকা সার্চ বক্সে নির্দিষ্ট ই-মেইল ঠিকানা লিখতে হবে। এরপর এন্টার চাপলে জিমেইলের ইনবক্সে প্রেরকের পাঠানো সব ই-মেইল দেখা যাবে। এবার ওপরে থাকা চেক বক্স থেকে ই-মেইলগুলো নির্বাচন করে ডিলিট বাটনে ক্লিক করলেই নির্দিষ্ট ঠিকানা থেকে আসা সব ই-মেইল মুছে যাবে।
আরও পড়ুনজিমেইলে ই-মেইল শিডিউল করে রাখবেন যেভাবে১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫নির্দিষ্ট তারিখের আগের ই-মেইল মুছে ফেলানির্দিষ্ট তারিখের আগের সব ই-মেইল একসঙ্গে মুছে ফেলা যায় জিমেইলে। এ জন্য জিমেইলে প্রবেশ করে ওপরে থাকা সার্চ বক্সে ইংরেজিতে Before: লিখে প্রথমে বছর এরপর মাস এবং শেষে নির্দিষ্ট দিন উল্লেখ করতে হবে। অর্থাৎ ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগের ই-মেইলগুলো মুছে ফেলার জন্য Before: 2022/12/31 লিখে এন্টার বাটনে ক্লিক করলেই জিমেইলের ইনবক্সে শুধু পুরোনো ই-মেইলগুলো দেখা যাবে। এবার ওপরে থাকা চেক বক্স থেকে ই-মেইলগুলো নির্বাচন করে ডিলিট বাটনে ক্লিক করতে হবে।
আরও পড়ুনজিমেইলের এই পাঁচ সুবিধার কথা জানেন তো০২ জুলাই ২০২৪রিড বা আনরিড ই-মেইল মুছে ফেলাপড়া হয়েছে বা পড়া হয়নি, এমন ই-মেইল মুছে ফেলতে সার্চ বক্সে ইংরেজিতে label: read অথবা label: unread লিখলেই জিমেইলের ইনবক্সে নির্দিষ্ট ই-মেইলগুলো দেখা যাবে। এবার ওপরে থাকা চেক বক্স থেকে ই-মেইলগুলো নির্বাচন করে ডিলিট বাটনে ক্লিক করলে একসঙ্গে সব ই-মেইল মুছে যাবে।
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: একসঙ গ র জন য র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
মিরাজ বীরত্বে দারুণ প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখলো বাংলাদেশ
পরাজয়ের গ্লানি থেকে গর্বের গাঁথায় ফেরার গল্প যখন লেখা হয়, সেখানে একজন নায়ক থাকেন। এইবার সেই নায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। সিলেটের লজ্জাজনক হার ভুলিয়ে দিয়ে চট্টগ্রামে দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশ যেন ঘুরে দাঁড়াল মেঘ ফুঁড়ে রোদ ওঠার মতো। অলরাউন্ড মিরাজের ব্যাটে-বলে দ্যুতি ছড়ানো আর তাইজুল ইসলামের ঘূর্ণিতে বিধ্বস্ত জিম্বাবুয়ে। ইনিংস ও ১০৬ রানের বিশাল জয়ে দুই ম্যাচের সিরিজ শেষ হলো ১-১ সমতায়।
প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়েকে কোনো সুযোগই দেয়নি বাংলাদেশ। তাইজুল ও নাঈম ইসলামের নির্ভুল বোলিংয়ে মাত্র ২২৭ রানে গুটিয়ে যায় সফরকারীরা। এরপর ব্যাট হাতে পাল্টা জবাব দেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। সাদমান ইসলামের ধারাবাহিকতা আর মিরাজের সংগ্রামী সেঞ্চুরিতে দল পৌঁছে যায় ৪৪৪ রানে। নেয় ২১৭ রানের লিড।
সাদমান তুলে নেন দারুণ এক সেঞ্চুরি, কিন্তু ম্যাচের মূল চিত্রনাট্য লিখলেন মিরাজ। টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় শতকে তিনি ছিলেন নির্ভার, নিবেদিত এবং নিখুঁত। ১৪৩ বলের ইনিংসে ১১টি চার ও একটি ছক্কায় সাজানো তার ১০৪ রানের মহাকাব্যিক ইনিংস শুধু দলীয় সংগ্রহে রানের সংযোজন ছিল না, ছিল প্রতিরোধ আর প্রতিশোধের প্রতীক।
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশের বিপক্ষে দারুণ বোলিং করে মুজারাবানির ইতিহাস
ইনিংস ব্যবধানে জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে বদলা নিলো বাংলাদেশ
তাইজুলের সঙ্গে অষ্টম উইকেটে গড়েন ৬৩ রানের জুটি। এরপর তানজিম হাসান সাকিবের সঙ্গে নবম উইকেটে যোগ করেন আরও ৯৬ রান। তানজিম নিজেও খেলেন ৪১ রানের কার্যকর ইনিংস। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে মিরাজ যখন আউট হন, তখন স্কোরবোর্ডে বাংলাদেশ—৪৪৪।
প্রথমবারের মতো টেস্ট খেলতে নামা জিম্বাবুয়ের মাসেকসা ১১৫ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট নিয়ে রেখেছিলেন আলোচনার খোরাক।
দ্বিতীয় ইনিংসে জিম্বাবুয়ের ইনিংস যেন শুরুই হলো পতনের ধ্বনি বাজিয়ে। মাত্র ৮ রানেই পড়ল ২ উইকেট। তাইজুল প্রথমে বোল্ড করলেন ব্রিয়ান বেনেটকে। এরপর এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেললেন নিক ওয়েলচকে। স্কোর যখন ৬৯, তখন উইকেট ৫টি। এরপর নাম মাত্র প্রতিরোধ গড়ে বেন কুরান ও ক্রেইগ আরভিন। কুরান করেন সর্বোচ্চ ৪৬ রান, আরভিন ২৫। বাকিরা যেন শুধুই আনুষ্ঠানিকতা সারলেন। ১১১ রানে অলআউট হয়ে লজ্জার হার বরণ করে নেয় জিম্বাবুয়ে।
মিরাজ বল হাতেও রচনা করলেন অনন্য মহাকাব্য। ২১ ওভারে ৮ মেডেনসহ মাত্র ৩২ রানে শিকার ৫ উইকেট। এটি তার ক্যারিয়ারের ১৩তম পাঁচ উইকেট শিকার। তাকে দারুণ সহায়তা দেন তাইজুল, ৩টি উইকেট নেন ৪২ রানে। নাঈম ইসলামের ঝুলিতে যায় ১ উইকেট।
একই ম্যাচে সেঞ্চুরি ও ফাইফার, এমন কীর্তির সাক্ষী হওয়া সবসময় ঘটে না। মেহেদী হাসান মিরাজ সেই বিরল অর্জনের মালিক হয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন। শুধু এখানেই শেষ নয়, দুই টেস্টে মোট ১৫ উইকেট ও একটি দুর্দান্ত সেঞ্চুরির সুবাদে সিরিজ সেরার পুরস্কারও উঠেছে তার হাতেই।
চট্টগ্রামে এই জয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ শুধু সিরিজে সমতা ফেরায়নি, সিলেটের ক্ষতচিহ্নও কিছুটা মুছে দিয়েছে। মিরাজের ব্যাট-বলের বীরত্বে লেখা হলো এক প্রত্যাবর্তনের মহাকাব্য—যেখানে বাংলাদেশের ক্রিকেট আবারও প্রমাণ করেছে, তারা হার মানে না, হারিয়ে দিতে জানে।
ঢাকা/আমিনুল