ভারতের প্রবৃদ্ধিতে রপ্তানি খাতের অবদান তুলনামূলকভাবে কম। সে কারণে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের পণ্যে শুল্ক বাড়ালেও দেশটি বিশেষ ক্ষতির মুখে পড়বে না বলে মনে করছে ফিচ রেটিংস।

একই সঙ্গে আগামী দুই অর্থবছরের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে ফিচ রেটিংস। তারা বলেছে, ২০২৫-২৬ আর্থিক বছরে ভারতের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। পরের অর্থবছরে (পড়ুন ২০২৬-২৭) তা আরও কমে ৬ দশমিক ৩ শতাংশে নেমে আসতে পারে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভারতের প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ।

ভারতের চলতি আর্থিক বছর শেষ হবে আগামী ৩১ মার্চ। তার আগে আগামী দুই অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে ফিচ রেটিং, আগামী আর্থিক বছরের ক্ষেত্রে ফিচ জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার অপরিবর্তিত রেখেছে। তবে ২০২৬-২৭ অর্থবছরের পূর্বাভাস আগের তুলনায় ১০ ভিত্তি পয়েন্ট বাড়ানো হয়েছে।

চলতি মার্চ মাসে ‘ইকোনমিক আউটলুক রিপোর্ট’ প্রকাশ করেছে ফিচ রেটিং। সেখানে সমীক্ষক সংস্থাটি বলেছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই অতি আক্রমণাত্মক বাণিজ্য নীতি গ্রহণ করেছে ওয়াশিংটন। কিন্তু অবস্থানগত কারণে এতে খুব বেশি বিপদে পড়বে না নয়াদিল্লি।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বাজেট পেশ করেছেন ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। সেখানে আয়করে বিপুল ছাড়ের কথা ঘোষণা করেন তিনি। বিশ্লেষকদের একাংশের দাবি, এতে মানুষের হাতে অতিরিক্ত টাকা থাকবে। ফলে বাজারে ভোগ্যপণ্যের বিক্রি বাড়বে। ভারতের আর্থিক প্রবৃদ্ধিতে এটি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করছেন ফিচের সমীক্ষকেরা।

২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে শেষ হওয়া প্রান্তিকে ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ২ শতাংশ। ২০২৪-২৫ আর্থিক বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে যা ছিল ৫ দশমিক ৬ শতাংশ, গত সাতটি প্রান্তিকের মধ্যে যা সর্বনিম্ন।

সম্প্রতি ভারতের অর্থনীতি নিয়ে ‘মরগ্যান স্ট্যানলি’ বড় পূর্বাভাস দিয়েছে। তাদের দাবি, মাত্র তিন বছরের মধ্যেই বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হবে ভারত। অর্থাৎ ২০২৮ সালের মধ্যে নয়াদিল্লির জিডিপির আকার বার্ষিক ৫ দশমিক ৭০ লাখ কোটি ডলারে উঠবে।

২০২৩ সালে ভারতীয় অর্থনীতির আকার ছিল সাড়ে তিন লাখ কোটি ডলার। আগামী বছর সেটাই বেড়ে ৪ দশমিক ৭ লাখ কোটি ডলারে উন্নীত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতের জিডিপির আকার সেই অঙ্ক ছুঁয়ে ফেললে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি হয়ে উঠবে তারা। তখন ভারতের সামনে থাকবে মাত্র তিনটি দেশ। সেগুলো হলো—যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও জার্মানি। ২০২৮ সালের মধ্যে এই দৌড়ে বার্লিন পিছিয়ে পড়বে বলে স্পষ্ট করেছে মরগ্যান স্ট্যানলি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আর থ ক বছর র প রব দ ধ ৬ দশম ক বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

তিন মাসে গৃহকর আদায় কমেছে ৩০ কোটি টাকা

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের গৃহকর এখনো চূড়ান্ত করতে পারেনি সিটি করপোরেশন। এ কারণে চলতি অর্থবছরে সিটি করপোরেশনকে গৃহকর পরিশোধ করেনি সংস্থাটি। এতে সিটি করপোরেশনের রাজস্ব আয়ে প্রভাব পড়েছে। গত অর্থবছরের তুলনায় এবার প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) গৃহকর আদায় কমেছে ৩০ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

একক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সিটি করপোরেশনকে সবচেয়ে বেশি গৃহকর পরিশোধ করে বন্দর কর্তৃপক্ষ। গত অর্থবছরে (২০২৪-২৫) দিয়েছিল ১৪৫ কোটি টাকা। এর আগের অর্থবছরগুলোতে পরিশোধ করত ৪৫ কোটি টাকা করে। কিন্তু সিটি করপোরেশন এবার ১৬০ কোটি টাকা দাবি করলেও বন্দরের মতে, বার্ষিক গৃহকর হচ্ছে ৪৫ কোটি টাকা। যা তারা একসঙ্গে আগেই পরিশোধ করেছে। এ নিয়ে দুই সংস্থার মধ্যে জটিলতা সৃষ্টি হয়।

চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে গৃহকর জটিলতা নিষ্পত্তির জন্য গত আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে কমিটি গঠন করা হয়। পাঁচ সদস্যের কমিটি যৌথ জরিপ করে গৃহকর চূড়ান্ত করার কথা। তবে আড়াই মাস পার হয়ে গেলেও গৃহকর চূড়ান্ত করা হয়নি। এ অবস্থায় আজ রোববার উভয় পক্ষ আবার গৃহকর নির্ধারণের বিষয়ে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে।

সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সরকারি-বেসরকারি খাত থেকে গৃহকর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪০ কোটি ৮০ লাখ টাকা। অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে অর্থাৎ ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গৃহকর আদায় হয়েছে ৭১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। আদায়ের হার ২১ শতাংশ। গত অর্থবছরে আয়ের পরিমাণ ছিল ১০২ কোটি ১৪ লাখ টাকা। সিটি করপোরেশনের ইতিহাসে গত বছরই সবচেয়ে বেশি গৃহকর আদায় হয়েছিল, যার পরিমাণ ছিল ৩০৯ কোটি ২৮ লাখ টাকা।

যৌথ জরিপ কমিটি গঠন করা হলেও এখনো বন্দরের গৃহকর চূড়ান্ত করা হয়নি। কীভাবে চূড়ান্ত করা হবে তা নিয়ে ইতিমধ্যে দুই দফা বৈঠক হয়েছে। রোববার আবার বসবে। এর মধ্যে কিসের ভিত্তিতে বন্দরের গৃহকর চূড়ান্ত করা হবে, তা নির্ধারণ করার কথা রয়েছে।এস এম সরওয়ার কামাল, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নিজস্ব রাজস্ব আয়ের প্রধান উৎস গৃহকর। আদায় কমে যাওয়ায় মোট রাজস্ব আয়েও তার প্রভাব পড়েছে। গত বছর যেখানে এই সময়ে গৃহকরসহ বিভিন্ন খাত থেকে আয় হয়েছিল ১৪২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এবার তার পরিমাণ মাত্র ১১৯ কোটি ৫১ লাখ টাকা।

গত অর্থবছরে সিটি করপোরেশন বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে বার্ষিক গৃহকর দাবি করে ১৬০ কোটি টাকা। ছাড় পাওয়ার পর বন্দর কর্তৃপক্ষ দুই দফায় ১৪৫ কোটি টাকা পরিশোধ করে। এবারও বন্দরের কাছে বার্ষিক ১৬০ কোটি টাকা দাবি করে চিঠি দেওয়া দিয়েছিল সিটি করপোরেশন।

এরপর গৃহকর নিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সিটি করপোরেশনের দ্বন্দ্বের বিষয়টি আবার সামনে আসে জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে। বন্দর কর্তৃপক্ষ সিটি করপোরেশনের দাবি অনুযায়ী গৃহকর পরিশোধ করেনি। উল্টো চিঠি দিয়ে জানায়, বন্দরের জন্য নির্ধারিত বার্ষিক গৃহকর ৪৫ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে (২০২৪-২৫) ১৪৫ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। অর্থাৎ ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নির্ধারিত গৃহকর পরিশোধের পরেও অতিরিক্ত থাকবে ৫৫ কোটি টাকা। গৃহকর নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হলে দুই সংস্থা পাঁচ সদস্যের যৌথ জরিপ কমিটি গঠন করে গত আগস্টে। এই কমিটি বন্দরের গৃহকর হার নির্ধারণ করবে।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নিজস্ব রাজস্ব আয়ের প্রধান উৎস গৃহকর। আদায় কমে যাওয়ায় মোট রাজস্ব আয়েও তার প্রভাব পড়েছে। গত বছর যেখানে এই সময়ে গৃহকরসহ বিভিন্ন খাত থেকে আয় হয়েছিল ১৪২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এবার তার পরিমাণ মাত্র ১১৯ কোটি ৫১ লাখ টাকা।

সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা এস এম সরওয়ার কামাল প্রথম আলোকে বলেন, যৌথ জরিপ কমিটি গঠন করা হলেও এখনো বন্দরের গৃহকর চূড়ান্ত করা হয়নি। কীভাবে চূড়ান্ত করা হবে তা নিয়ে ইতিমধ্যে দুই দফা বৈঠক হয়েছে। রোববার আবার বসবে। এর মধ্যে কিসের ভিত্তিতে বন্দরের গৃহকর চূড়ান্ত করা হবে, তা নির্ধারণ করার কথা রয়েছে।

সিটি করপোরেশনের তৎকালীন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের সময় বন্দরের বার্ষিক গৃহকর নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৬০ কোটি টাকা। কিন্তু অপসারিত মেয়র মোহাম্মদ রেজাউল করিম চৌধুরী বন্দরের আবেদনের পর গৃহকর ধার্য করেন ৪৫ কোটি টাকা। এই হারে গৃহকর পরিশোধ করে আসছিল বন্দর কর্তৃপক্ষ।

তবে বর্তমান মেয়র শাহাদাত হোসেন দায়িত্ব নেওয়ার পর ১৬০ কোটি টাকা করে গৃহকর আদায়ের জন্য তৎপর হন। এ জন্য গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর সিটি করপোরেশন বন্দর কর্তৃপক্ষকে বকেয়া ১১৫ কোটি টাকা পরিশোধের জন্য চিঠি দেন। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, সিটি করপোরেশন ও বন্দর কর্তৃপক্ষের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ এপ্রিল ১০০ কোটি টাকা পরিশোধ করে বন্দর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • টানা তিন মাস কমল দেশের পণ্য রপ্তানি
  • লরা উলভার্ট: হিমালয়ের চূড়ায় এক নিঃসঙ্গ শেরপা
  • বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক অলিম্পিক চ্যাম্পিয়নের মৃত্যু
  • বাজুসের নতুন সভাপতি এনামুল হক খান
  • শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা
  • যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন
  • টানা দুই মাস আড়াই বিলিয়ন ডলারের বেশি প্রবাসী আয় এসেছে
  • উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএসসি প্রোগ্রাম, জেএসসি ছাড়াও ভর্তি
  • তিন মাসে গৃহকর আদায় কমেছে ৩০ কোটি টাকা
  • ২০২৬ সালে বিশ্ববাজারে জিনিসপত্রের দাম আরও ৭% কমতে পারে, বাংলাদেশে কেন কমছে না