২০২৫–২৬ অর্থবছরে ভারতের প্রবৃদ্ধি হবে ৬.৫%: ফিচ রেটিংস
Published: 20th, March 2025 GMT
ভারতের প্রবৃদ্ধিতে রপ্তানি খাতের অবদান তুলনামূলকভাবে কম। সে কারণে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের পণ্যে শুল্ক বাড়ালেও দেশটি বিশেষ ক্ষতির মুখে পড়বে না বলে মনে করছে ফিচ রেটিংস।
একই সঙ্গে আগামী দুই অর্থবছরের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে ফিচ রেটিংস। তারা বলেছে, ২০২৫-২৬ আর্থিক বছরে ভারতের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। পরের অর্থবছরে (পড়ুন ২০২৬-২৭) তা আরও কমে ৬ দশমিক ৩ শতাংশে নেমে আসতে পারে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভারতের প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ।
ভারতের চলতি আর্থিক বছর শেষ হবে আগামী ৩১ মার্চ। তার আগে আগামী দুই অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে ফিচ রেটিং, আগামী আর্থিক বছরের ক্ষেত্রে ফিচ জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার অপরিবর্তিত রেখেছে। তবে ২০২৬-২৭ অর্থবছরের পূর্বাভাস আগের তুলনায় ১০ ভিত্তি পয়েন্ট বাড়ানো হয়েছে।
চলতি মার্চ মাসে ‘ইকোনমিক আউটলুক রিপোর্ট’ প্রকাশ করেছে ফিচ রেটিং। সেখানে সমীক্ষক সংস্থাটি বলেছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই অতি আক্রমণাত্মক বাণিজ্য নীতি গ্রহণ করেছে ওয়াশিংটন। কিন্তু অবস্থানগত কারণে এতে খুব বেশি বিপদে পড়বে না নয়াদিল্লি।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বাজেট পেশ করেছেন ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। সেখানে আয়করে বিপুল ছাড়ের কথা ঘোষণা করেন তিনি। বিশ্লেষকদের একাংশের দাবি, এতে মানুষের হাতে অতিরিক্ত টাকা থাকবে। ফলে বাজারে ভোগ্যপণ্যের বিক্রি বাড়বে। ভারতের আর্থিক প্রবৃদ্ধিতে এটি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করছেন ফিচের সমীক্ষকেরা।
২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে শেষ হওয়া প্রান্তিকে ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ২ শতাংশ। ২০২৪-২৫ আর্থিক বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে যা ছিল ৫ দশমিক ৬ শতাংশ, গত সাতটি প্রান্তিকের মধ্যে যা সর্বনিম্ন।
সম্প্রতি ভারতের অর্থনীতি নিয়ে ‘মরগ্যান স্ট্যানলি’ বড় পূর্বাভাস দিয়েছে। তাদের দাবি, মাত্র তিন বছরের মধ্যেই বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হবে ভারত। অর্থাৎ ২০২৮ সালের মধ্যে নয়াদিল্লির জিডিপির আকার বার্ষিক ৫ দশমিক ৭০ লাখ কোটি ডলারে উঠবে।
২০২৩ সালে ভারতীয় অর্থনীতির আকার ছিল সাড়ে তিন লাখ কোটি ডলার। আগামী বছর সেটাই বেড়ে ৪ দশমিক ৭ লাখ কোটি ডলারে উন্নীত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতের জিডিপির আকার সেই অঙ্ক ছুঁয়ে ফেললে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি হয়ে উঠবে তারা। তখন ভারতের সামনে থাকবে মাত্র তিনটি দেশ। সেগুলো হলো—যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও জার্মানি। ২০২৮ সালের মধ্যে এই দৌড়ে বার্লিন পিছিয়ে পড়বে বলে স্পষ্ট করেছে মরগ্যান স্ট্যানলি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আর থ ক বছর র প রব দ ধ ৬ দশম ক বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রধান উপদেষ্টা একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ করেছেন: জামায়াতে ইসলামী
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠককে স্বাভাবিক বললেও, দুইজনের যৌথ বিবৃতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে জামায়াতে ইসলামী।
শনিবার জামায়াতের নির্বাহী পরিষদের বৈঠকের পর বিবৃতিতে দলটি বলেছে, ‘যৌথ বিবৃতি প্রদান বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির ব্যত্যয় বলে আমরা মনে করি। এর মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ করেছেন, যা তার নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন করেছে।’
দলের আমির ডা. শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে বিবৃতিতে বলা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, ‘১৩ জুন লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মাদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে, তাকে জামায়াত খুবই স্বাভাবিক মনে করে। ইতোমধ্যে প্রধান উপদেষ্টা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পৃথক পৃথকভাবে এবং যৌথভাবে বৈঠক করেছেন।’
লন্ডন বৈঠকের যৌথ বিবৃতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে জামায়াত বলেছে, ‘গত ৬ জুন জাতির উদ্দেশে ভাষণে ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেন প্রধান উপদেষ্টা। তার এই ঘোষণার পর লন্ডন সফরে একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিদেশে যৌথ প্রেস ব্রিফিং এবং বৈঠকের বিষয় সম্পর্কে যৌথ বিবৃতি প্রদান করা বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির ব্যত্যয় বলে জামায়াত মনে করে। এর মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ করেছেন, যা তার নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন করে।’
লন্ডন বৈঠকের যৌথ বিবৃতিতে মধ্য ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে। জামায়াত এ প্রসঙ্গে বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমরা মনে করি দেশে ফিরে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে এ ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টার অভিমত প্রকাশ করাই সমীচীন ছিল।’
জামায়াত ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের বিরোধী নয় বিবৃতিতে স্পষ্ট করা হয়। এতে বলা হয়েছে, ‘গত ১৬ এপ্রিল জামায়াত আমির দলীয় দৃষ্টিভঙ্গী তুলে ধরে জানিয়েছিলেন ২০২৬ সালের রসজানের পূর্বে ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হতে পারে।’
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘জামায়াত মনে করে সরকার প্রধান হিসেবে কোনো একটি দলের সঙ্গে যৌথ প্রেস ব্রিফিং নৈতিকভাবে কিছুতেই যথার্থ নয়। প্রধান উপদেষ্টা একটি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতি দেওয়ায় আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হওয়ার বিষয়ে জনগণের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যেখানে বাংলাদেশে অনেকগুলো রাজনৈতিক দল সক্রিয়ভাবে বিদ্যমান, সেখানে শুধু একটি দলের সঙ্গে আলাপে দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সঠিক বলে বিবেচিত হতে পারে না। জামায়াত আশা করে, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য বর্তমান অন্তর্বতীকালীন সরকার নিরপেক্ষ থেকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করবে এবং বিচার ও সংস্কারের ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত করবে। সরকারের নিরপেক্ষতা এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিয়ে যে সংশয় দেখা দিয়েছে তা নিরসনে প্রধান উপদেষ্টার ভূমিকা জাতির সামনে স্পষ্ট করার জন্য বাংলাদেশ জামায়াতের নির্বাহী পরিষদ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।’
এর আগে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকের দিন জামায়াত আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া না জানালেও দলটির শীর্ষস্থানীয় নেতারা সমকালকে বলেছিলেন, ‘জামায়াতই প্রথম বলেছে, রমজানের আগে নির্বাচন হওয়া উচিত। তাই নির্বাচনের যে নতুন সময়সীমা বলা হচ্ছে, এ নিয়ে আপত্তির কিছু নেই। কিন্তু সরকার যেভাবে শুধু বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করে সময়সীমা নির্ধারণ করেছে, তা অগ্রহণযোগ্য।’
জামায়াত নেতারা শুক্রবার রাতেই সমকালকে বলেছিলেন, যৌথ বিবৃতির মাধ্যমে বোঝানো হচ্ছে– সরকার এবং বিএনপি সমশক্তি। এর পর আর সরকারের নিরপেক্ষতা থাকে না। এ বক্তব্য ড. ইউনূসকে জানাবে জামায়াত।