রাজধানীর গুলশানে পুলিশ প্লাজা সংলগ্ন শুটিং ক্লাবের সামনে সুমন মিয়া (৩০) নামে এক যুবককে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সুমন মহাখালী টিভি গেট এলাকায় ইন্টারনেট সংযোগের ব্যবসা করতেন। অনেকেই তাঁকে ‘টেলি সুমন’ নামে ডাকেন। তাঁর বাড়ি রংপুরে মিঠাপুকুর উপজেলায়। 
 
সুমনের স্ত্রীর বড় ভাই বাদশা মিয়া রুবেল জানান, স্ত্রী ও দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে মিরপুর ভাসানটেক এলাকায় থাকতেন সুমন। মহাখালী টিভি গেট এলাকায় ‘প্রিয়জন’ নামে তাঁর ইন্টারনেটের ব্যবসা রয়েছে। আগে মহাখালী টিভি গেট এলাকায় থাকতেন তিনি। সুমন বনানী থানা যুবদলের কর্মী ছিলেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো.

ফারুক বলেন, গুলশানের পুলিশ প্লাজার সামনে দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় পাঁচ থেকে ছয় দুর্বৃত্ত সুমনের বুকে, পেটে ও মাথায় গুলি করে চলে যায়। পরে তাঁকে উদ্ধার করে রাত ১১টার দিকে ঢামেক হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। 

সুমনের স্বজন বাদশার দাবি, টিভি গেট এলাকায় ‘একে-৪৭ গ্রুপের’ রুবেল নামে এক ব্যক্তি ডিসের ব্যবসা করেন। তার সঙ্গেই সুমনের ব্যবসা নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিল। তিনি মাঝেমধ্যে সুমনকে হত্যার হুমকি দিতেন। ওই গ্রুপের লোকজন তাঁকে গুলি করে থাকতে পারে। 

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, গুলির পরই সুমন ঘটনাস্থলে মারা যান। গুলি করা একজনের পরনে সাদা শার্ট ও কালো প্যান্ট ছিল। সিসিটিভির ফুটেজ দেখে তার পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

ডিএমপির মুখপাত্র উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, গুলশানে গুলির ঘটনা শুনেই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় একজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। পুলিশের আরেক কর্মকর্তা বলেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শনাক্ত করতে পুলিশের একাধিক দল কাজ শুরু করেছে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস য় গ ট এল ক র ব যবস এল ক য স মন র

এছাড়াও পড়ুন:

সবাই ভেবেছিলেন কিশোরী ডুবে গেছে, ১০ দিন পর ফোন করে জানাল সে গাজীপুরে আছে

১০ দিন আগে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল করতে গিয়েছিল কিশোরী সোহানা খাতুন। বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নদীতে অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান পায়নি। তবে গত বুধবার রাতে মাকে ফোন করেছে সোহানা; জানিয়েছে সে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।

নিখোঁজ হওয়া কিশোরীর নাম সোহানা খাতুন। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রাম কারিগর পাড়ায়। তার বাবা গোলাম মওলা ও মা শিরিনা খাতুন।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯ জুলাই দুপুরে বাড়ির পাশের মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল ও কাপড় ধুতে গিয়েছিল সোহানা। দীর্ঘ সময়েও না ফেরায় তার মা নদীর ধারে যান; দেখেন, সোহানার কাপড় পড়ে আছে। এরপর স্বজন ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। খবর পেয়ে ওই রাতে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল নদীতে উদ্ধার অভিযান চালায়। পরদিন খুলনা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ১২ ঘণ্টা অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান না পেয়ে অভিযান স্থগিত করে। ২১ জুলাই এক কবিরাজ এনে নদীতে খোঁজার চেষ্টাও করেন সোহানার বাবা–মা।

এমন অবস্থায় বুধবার রাতে হঠাৎ সোহানা তার মায়ের ফোনে কল দিয়ে জানায়, সে ঢাকার গাজীপুরে তার প্রাক্তন স্বামীর কাছে রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সোহানার বাবা গোলাম মওলা। তিনি বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম, মেয়ে নদীতে ডুবে গেছে। সবাই মিলে খোঁজাখুঁজি করেছি। এমনকি কবিরাজও এনেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ বুধবার আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে জানায়, সে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে। আমরা বিষয়টি গতকাল রাতে পুলিশকে জানিয়েছি।’ বিষয়টি বুঝতে না পেরে সবাইকে কষ্ট দেওয়ার জন্য তিনি ক্ষমা চান।

স্থানীয় লোকজন জানান, প্রায় দুই বছর আগে খালাতো ভাই কুতুব উদ্দিনের সঙ্গে পালিয়ে যায় সোহানা এবং দুজন বিয়ে করে। তবে বনিবনা না হওয়ায় তিন মাস আগে সোহানা তাকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসে। নদীতে নিখোঁজ হওয়ার ‘নাটক’ করে সে পালিয়ে গেছে।

এ বিষয়ে কুমারখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিরুল ইসলাম বলেন, শুরুতে পরিবারের লোকজন জানিয়েছিল, নদীতে গোসলে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে সোহানা। গতকাল আবার তার বাবা জানিয়েছে, মেয়ে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ