ছিনতাইকারী সন্দেহে জনতার ধাওয়ায় তিনজনের নদীতে ঝাঁপ, সাঁতরে ওঠার পর গণপিটুনিতে নিহত ১
Published: 21st, March 2025 GMT
রাজধানীর পুরান ঢাকার সোয়ারীঘাট এলাকায় আজ শুক্রবার ভোরে ছিনতাইকারী সন্দেহে গণপিটুনিতে এক যুবক নিহত হয়েছেন। তাঁর নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন চকবাজার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. গোলাম সরোয়ার। তিনি বলেন, গণপিটুনিতে গুরুতর আহত আছেন দুই যুবক।
পুলিশ বলছে, আজ ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে চকবাজার থানার কেরানীগঞ্জ ফেরিঘাট এলাকায় এক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা ও মালামাল ছিনতাই করার সময় স্থানীয় বাসিন্দারা চার যুবককে ধাওয়া দেন। ধাওয়া খেয়ে একজন পালিয়ে যান। অন্য তিনজন নদীতে ঝাঁপ দেন। তাঁরা সাঁতরে চকবাজার থানার সোয়ারীঘাটের চম্পাতলী ঘাট এলাকায় ওঠেন। এ সময় স্থানীয় জনতা তাঁদের গণপিটুনি দেন। এতে তিনজন গুরুতর আহত হন। তিনজনের বয়স ২৫ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। পরে পুলিশ খবর পেয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করে।
চকবাজার থানার এসআই গোলাম সরোয়ার বলেন, আহত তিনজনকে উদ্ধার করে প্রথমে পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে তাঁদের আজ সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে একজনকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত অন্য দুজন এখন পুলিশি প্রহরায় এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
নিহত ব্যক্তির বয়স ২৫ বছর হতে পারে বলে অনুমান পুলিশের। এসআই গোলাম সরোয়ার বলেন, নিহত যুবকের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চকব জ র থ ন র গণপ ট ন ত নজন
এছাড়াও পড়ুন:
কুষ্টিয়ার সাবেক এসপি তানভীর আরেক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় বিএনপি কর্মী কুদরত আলীকে গুলি করে হত্যা মামলার আসামি কুষ্টিয়ার সাবেক পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাতকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
সোমবার (২৮ জুলাই) দুপুর ১টা ৪১ মিনিটে কড়া নিরাপত্তায় কারাগার থেকে এস এম তানভীর আরাফাতকে কুষ্টিয়া আদালতে আনা হয়। এরপর দৌলতপুর আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তফা পারভেজের আদালতে হাজিরা করা হয়। এরপর তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে ১টা ৫১ মিনিটে আদালত থেকে তাকে আবার কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ২৬ ডিসেম্বর বিএনপির আরেক কর্মী সুজন মালিথাকে গুলি করে হত্যা মামলার প্রধান আসামি এই পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর থেকে তিনি কুষ্টিয়া কারাগারে আছেন।
আরো পড়ুন:
মেহেরপুরে হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড
গজারিয়ায় প্রতিপক্ষের গুলিতে ‘শুটার’ মান্নান নিহত
উপপুলিশ কমিশনার এস এম তানভীর আরাফাত সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি অফিসে সংযুক্ত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি খুলনার খালিশপুর উপজেলায়। কুষ্টিয়ায় চাকরিকালে বিতর্কিত ছিলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। কুষ্টিয়া জেলায় আসার পর থেকে নানা কর্মকান্ডে সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। এমনকি, তখন এ সব কর্মকাণ্ডের জন্য তাকে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়। বিভাগীয় শাস্তিও পেতে হয়।
নিহত বিএনপি কর্মী কুদরত আলীর ছেলে বাদী হয়ে ২০২৪ সালের ২ অক্টোবর দৌলতপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, কুদরত আলী বিএনপির সক্রিয় সমর্থক ছিলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে তিনি দলের সঙ্গে আছেন। এ কারণে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ও কিছু সুবিধাভোগী পুলিশ সদস্য কুদরত আলীকে মিথ্যা মামলায় আটক ও হত্যার পরিকল্পনা করে। এই ষড়যন্ত্রের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ পরিদর্শক নিশিকান্ত সরকার, এসআই রোকনুজ্জামান, এসআই মেহেদী হাসান, এসআই শাহজাহান, এএসআই আনিচুর রহমান, পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আহমেদসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা কুদরত আলীকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। ২০২০ সালের ২৩ জুলাই রাত ২টার দিকে ১০-১২ জন পুলিশ কুদরত আলীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। ২৫ জুলাই তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তার বুকের ডান দিকে ও বাম দিকে দুটি গুলির চিহ্ন, দুই হাতে, পিঠে, মুখে ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন ছিল।
বাদী মামলায় দাবি করেন, কুদরত আলীকে গুম করে নির্যাতন ও গুলি করে হত্যা করে লাশ হাসপাতালের মর্গে রেখে চলে যায়।
দৌলতপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ জানান, দৌলতপুর থানার একটি মামলায় এস এম তানভীর আরাফাতকে গ্রেপ্তারের আবেদন করা হয়েছিল। সেই আবেদন আদালত মঞ্জুর করেছেন।
২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির কর্মী সুজন মালিথাকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে কুষ্টিয়া সাবেক এসপি এস এম তানভীর আরাফাতের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। গত ২৯ সেপ্টেম্বর নিহত সুজনের রাজনৈতিক বড় ভাই সুজন হোসেন (৪২) বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় মোট ১৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
নিহত সুজন মালিথা কুষ্টিয়া সদর উপজেলার টাকিমারা গ্রামের ইসমাইল মালিথার ছেলে।
ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল