ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের সপ্তম রাউন্ডের ম্যাচে লড়াইটা ছিল শেয়ানে শেয়ানে। ৬ ম্যাচ থেকে ১০ পয়েন্ট করে নিয়ে টেবিলের শীর্ষ দুই দল আবাহনী লিমিটেড ও গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স আজ শুক্রবার (২১ মার্চ, ২০২৫) মুখোমুখি হয়। এই ম্যাচে যারা জয় পাবে তারাই পয়েন্ট টেবিলের টেবিলের শীর্ষে অবস্থান নিবে। আবাহনীকে অবশ্য শীর্ষস্থান থেকে টলানো যায়নি।
বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি) ৪ নম্বর মাঠে গাজী গ্রুপ আগে ব্যাট করতে নেমে ৩৫.
এই জয়ে ৭ ম্যাচের ৬টিতে জিতে ও ১ টিতে হেরে ১২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে আছে আবাহনী। সমান ম্যাচ থেকে ৫ জয় ও ২ হারে ১০ পয়েন্ট নিয়ে গাজী গ্রুপ আছে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে।
আরো পড়ুন:
বৃথা গেল সোহানের সেঞ্চুরি, মোহামেডানের আরও একটি জয়
ঈদের আগে লিগে ফিরবেন মাহমুদউল্লাহ
মুমিনুল হকের ঘূর্ণি জাদুতে গাজী গ্রুপ আজ দিশেহারা হয়। মুমিনুল ৬.১ ওভার বল করে ৩৮ রান দিয়ে ৪টি উইকেট নেন। ২টি করে উইকেট নেন মাহফুজুর রাব্বি, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও রাকিবুল হাসান।
ব্যাট হাতে গাজী গ্রুপের সেরা ছিলেন এনামুল হক বিজয়। তিনি আজ ৬টি চার ও ৩ ছক্কায় ৬৮ রানের ইনিংস খেলেন। ওয়াসি সিদ্দিকী ২ চার ও ২ ছক্কায় করেন ৪২ রান। এছাড়া আব্দুল গাফ্ফার সাকলাইন ২৭ ও সাদিকুর রহমান করেন ১৬ রান। তাতে গাজী গ্রুপের রান ১৯৯ পর্যন্ত যায়।
রান তাড়া করতে নেমে ১৬ রানেই দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান জিসান আলম (১০) ও পারভেজ হোসেন ইমনের (৬) উইকেট হারায় আবাহনী। এরপর অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও মো. মিথুন তৃতীয় উইকেটে ১৩১ রানের জুটি গড়ে দলের জয়ের ভিত গড়ে দেন।
১৪৭ রানের মাথায় মিথুন ফেরেন ৫ চার ও ৪ ছক্কায় ৭৬ রানের ইনিংস খেলে। ১৪৮ রানের মাথায় শান্তও ফেরেন। তিনি ৪ চারে ৪৩ রান করেন।
এরপর অবশ্য আবার উইকেট মিছিল শুরু হয় আবাহনীর। কিন্তু সৈকতের ১৮, মুমিনুল হকের ২৪ ও মাহফুজুরের অপরাজিত ৮ রানের ইনিংসে ভর করে ২ উইকেট হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করে আবাহনী।
বল হাতে গাজী গ্রুপের শেখ জীবন ৮ ওভারে ৪৬ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নেন। ২টি করে উইকেট নেন লিওন ইসলাম ও মো. আবু হাসিম। বল হাতে ৪ উইকেট ও ব্যাট হাতে ২৪ রান নিয়ে ম্যাচসেরা হন আবাহনীর মুমিনুল হক।
ঢাকা/আমিনুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উইক ট ন ন উইক ট হ
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।