কুমিল্লা নগরীর অশোকতলার একটি বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আজ শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে নয়তলা ভবনের পার্কিংয়ে রাখা জেনারেটর বিস্ফোরণে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে পাঁচজন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন উদ্ধারকর্মীরা। আহতদের কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ওই ভবনের বাসিন্দারা বলেন, নয়তলা ওই ভবনের প্রথম তলায় স্বপ্নের শোরুম, দ্বিতীয় তলায় অগ্রণী ব্যাংক, তৃতীয় তলায় কোচিং সেন্টার বাকিগুলো আবাসিক ফ্ল্যাট। ভবনের আগুনে এসময় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে খবর পেয়ে বিকাল ৫টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ভবনের দ্বিতীয় তলার অগ্রণী ব্যাংকের ম্যানেজার সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রচণ্ড ধোঁয়ায় ব্যাংকের এসিগুলো নষ্ট হয়ে যায়। বিদ্যুৎ না থাকায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বলা যাচ্ছে না।
ভবনের প্রথম তলায় স্বপ্নের এরিয়া ম্যানেজার এয়ার হোসেন জানান, আন্ডারগ্রাউন্ডে জেনারেটরে আগুন লেগেছে। ধোয়ায় প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় ছড়িয়ে পড়েছে। ওপরে একটি কোচিং সেন্টার আছে। হুড়াহুড়ি করে নামতে গিয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে।
ভবনে বসবাস করা কামরুল ইসলাম বলেন, আগুনের খবর পেয়ে আতঙ্কে সপরিবার বাসা থেকে বের হয়ে যাই। ধোয়ায় পুরো এলাকা অন্ধকার হয়ে পড়ে। হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে অনেকেই আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরাও ঘটনাস্থলে আসে।
ফায়ার সার্ভিস কুমিল্লার সহকারী পরিচালক ইকবাল হোসেন সমকালকে বলেন, ঘটনার পর দুটি ইউনিট ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে আগুনের সূত্রাপাত জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা লিস্ট করা হচ্ছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’
গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।
বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’
গণজমায়েতে র্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।