সাতকানিয়ায় সীমানা নিয়ে বিরোধের জেরে নিহত ১
Published: 22nd, March 2025 GMT
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ভিটে-বাড়ির সীমানা বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে সুবীর চক্রবর্তী (৩৫) নামে এক দর্জি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তার বড় ভাই প্রবীর চক্রবর্তী (৩৮) আহত হয়েছেন। আহত প্রবীর পেশায় একজন পল্লী চিকিৎসক।
শুক্রবার রাতে সাতকানিয়া উপজেলার পুরানগড় ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ফকিরখীল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত দুই ভাইকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুবীর চক্রবর্তীকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রতিপক্ষের হামলায় আহত প্রবীর চক্রবর্তী জানান, ঘটনার রাতে তারা দুই ভাই দোকান বন্ধ করে মোটরসাইকেলে বাড়ির পাশের এক মহোৎসবে যাচ্ছিলেন। ফকিরখীল এলাকায় পৌঁছালে দীপক দাসের নির্দেশে রূপক দাস, দীপ্ত দাস, সুমিত দাস ও অলক দাসসহ ১০-১২ জন তাদের পথরোধ করে।
প্রবীর আরও বলেন, প্রথমে আমাদের সঙ্গে তর্কাতর্কি হয়। এরপর তারা লাঠি, দা ও ছুরি দিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। রূপক আমাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করতে গেলে আমি হাত দিয়ে ঠেকিয়ে দিই। পরে ভাইকে পালিয়ে যেতে বলি, কিন্তু রূপক ভাইয়ের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বুকের ওপর উঠে ছুরিকাঘাত করতে থাকে। চিৎকার করলে এলাকাবাসী এগিয়ে আসে, কিন্তু ততক্ষণে সুবীর নিস্তেজ হয়ে পড়ে।
স্থানীয়রা জানান, সুবীর ও প্রবীর চক্রবর্তীর পরিবারের সঙ্গে রূপক দাসদের পরিবারের দীর্ঘদিনের ভিটে-বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। ২০২৩ সালে আদালত সুবীরদের পক্ষে রায় দিয়ে লাল নিশান উড়িয়ে তাদের জায়গা বুঝিয়ে দেয়। তবে পুরনো শত্রুতা থেকেই দ্বন্দ্ব চলতে থাকে। ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে বড় ধরনের সংঘর্ষ হয়। এতে উভয়পক্ষের কয়েকজন আহত হন। সেই ঘটনার পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছিল।
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প রব র
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?