ঈদ মানেই আনন্দ। সে আনন্দ প্রিয়জনের সঙ্গে ভাগাভাগি করলে তা হয়ে যায় দ্বিগুণ। স্মার্টফোন উদ্ভাবনের প্রযুক্তি ব্র্যান্ড টেকনো ঈদ অফার ঘোষণা করেছে। স্মার্টফোনে রয়েছে বিশেষ মূল্যছাড়। ইতোমধ্যে ব্র্যান্ডের ক্যামন ও স্পার্ক সিরিজের সাশ্রয়ী দামে বিশেষ ফিচার ও ডিউরেবিলিটি দিয়ে গ্রাহককে পরিষেবা দিয়েছে। বিশেষ করে ব্র্যান্ডের ক্যামন ৩০ (১২ জিবি), ক্যামন ৩০ এস, স্পার্ক ৩০ আর স্পার্ক ৩০ সি মডেল রয়েছে বিশেষ সুবিধা। ঈদের খুশি জমবে বেশি ট্যাগলাইনে আসন্ন ঈদুল ফিতরে উল্লিখিত মডেলের যে কোনো ক্রয়ে মিলবে বিশেষ উপহার। যার মধ্যে থাকছে ইলেকট্রিক বাইক, ফ্যান্টম ভি ফোল্ড টু, ফ্যান্টম ফ্লিপ বা নগদ সর্বোচ্চ তিন হাজার টাকা পর্যন্ত ক্যাশব্যাক জেতার সুযোগ। বিশেষ অফার শেষ হবে ৩১ মার্চ। উপহারে আগ্রহী হলে পছন্দের স্মার্টফোন মডেলের রিটেইল কোড সংগ্রহ করতে হবে।
ঈদুল ফিতর উৎসবকে আনন্দময় করতে ‘ঈদের খুশি’ প্রচারণা ঘোষণা করেছে প্রযুক্তি ব্র্যান্ড ইনফিনিক্স। বিশেষ প্রচারণায় ব্র্যান্ডটি ক্যাশব্যাক, নিশ্চিত উপহার ও বিশেষ সারপ্রাইজ জেতার সুযোগ দেবে।
ব্র্যান্ডের নির্দিষ্ট মডেলের স্মার্টফোনে আগ্রহীরা এমন অফার পাবেন। ইতোমধ্যে ঈদ আনন্দে ব্র্যান্ডটি বিশেষ প্রচারণা শুরু করেছে, যা শেষ হবে ১ এপ্রিল। ঈদ সামনে রেখে অনেকেই পুরোনো ফোন বদলে নতুন স্মার্টফোন কেনার পরিকল্পনা করেন। ব্র্যান্ডের বিশেষ অফারে এবার গ্রাহক পছন্দের ডিভাইস কেনার সঙ্গে নিশ্চিত ক্যাশব্যাক ও পুরস্কার জেতার সুযোগ পাবেন। ব্র্যান্ডের নোট ৪০এস, হট ৫০ প্রো প্লাস, হট ৫০ প্রো, হট ৫০ আই এবং স্মার্ট নাইন– নির্দিষ্ট মডেলের যে কোনোটি কিনলেই গ্রাহক অফারে অংশ নিতে পারবেন।
নোট ৪০এস মডেলের সঙ্গে থাকবে ওয়্যারলেস ম্যাগনেটিক চার্জার, আর হট ৫০ প্রো ও হট ৫০ আই স্মার্টফোনে পাবেন বাজেটবান্ধব দামে প্রিমিয়াম ফিচার। বাজেটের মধ্যে পারফরম্যান্সের জন্য সুপরিচিত হট ৫০ আই এবং স্মার্ট-নাইন মডেলে থাকছে বিশেষ সুযোগ।
ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে বিজয়ীরা জিততে পারেন নতুন স্মার্টফোন বা কক্সবাজার ভ্রমণে কাপল টিকিট। অফারে অংশগ্রহণে কেনা পণ্যের সঙ্গে থাকা কিউআর কোড স্ক্যান করলেই মিলবে নিশ্চিত অফারের সুযোগ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আনন দ
এছাড়াও পড়ুন:
প্রার্থনার সুরে শেষ হলো ‘ফাতেমা রানীর’ তীর্থোৎসব
পাহাড়ের আঁকাবাঁকা প্রায় দুই কিলোমিটারেরও বেশি উঁচুনিচু ঢালু পথ পাড়ি দিয়ে আলোক শোভাযাত্রা করে করলেন হাজারো খৃষ্ট ভক্ত। মা মারিয়ার আশীর্বাদপ্রাপ্ত শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ‘বারোমারি সাধু লিওর খ্রিষ্টধর্মপল্লি’ তে ছিলো এ বছরের আয়োজন।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকাল থেকে শুরু হয় ক্যাথলিক খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ‘ফাতেমা রানীর’ তীর্থোৎসব। দুই দিনব্যাপী এই তীর্থোৎসব শেষ হয়েছে গতকাল শুক্রবার জীবন্ত ক্রুশের পথ ও পবিত্র মহাখ্রিষ্টযাগের মধ্যে দিয়ে।
এ উৎসবে শুধু ক্যাথলিক খ্রিষ্টানই নন, অন্য ধর্মাবলম্বীরাও প্রতিবছর অংশ নেন। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। উৎসবের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভ্যাটিকান সিটির রাষ্ট্রদূত কেভিন এস র্যান্ডেল।
এসময় জেলা প্রশাসক (ডিসি) তরফদার মাহমুদুর রহমান ও পুলিশ সুপার (এসপি) আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আয়োজক কমিটি জানায়, প্রতিবছর অক্টোবর মাসের শেষ বৃহস্পতি ও শুক্রবারে এই তীর্থযাত্রার আয়োজন করা হয়। প্রধান পৌরহিত্যকারী ন্যুনসিওকে বরণ, তীর্থের জুবিলী উদজাপন, পুর্নমিলন সংস্কার, পবিত্র খিষ্টযাগ, জপমালার প্রার্থন, আলোক শোভাযাত্রা, সাক্রান্তের আরাধনা, নিরাময় অনুষ্ঠান, ব্যক্তিগত প্রার্থনা ও নিশি জাগরণের মধ্য দিয়ে প্রথম দিনের অনুষ্ঠান শেষ হয়। শুক্রবার সকাল আটটায় জীবন্ত ক্রুশের পথ অতিক্রম এবং সকাল ১০টায় মহাখ্রিষ্টযোগের মধ্য দিয়ে শেষ হয় এবারের তীর্থোৎসব।
১৯৪২ সালে ৪২ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয় বারোমারি সাধু লিওর ধর্মপল্লি। ১৯৯৮ সালে প্রয়াত বিশপ ফ্রান্সিস এ গোমেজ স্থানটিকে ‘ফাতেমা রানীর তীর্থস্থান’ হিসেবে ঘোষণা করেন। তখন থেকেই প্রতিবছর আয়োজিত হয়ে আসছে এই ধর্মীয় উৎসব। এ বছর প্রায় ৩০-৪০ হাজার দেশি-বিদেশি রোমান ক্যাথলিক তীর্থযাত্রী অংশ নিয়েছেন উৎসবে। সার্বিকভাবে উৎসব এলাকা ছিল আলো, প্রার্থনা ও শান্তির আবহে মোড়ানো।
রংপুর থেকে আসা তীর্থযাত্রী রিপন আরেং বলেন, “সবাই যখন মোমবাতি প্রজ্বলন করে প্রার্থনা করতে করতে পাহাড়ি আকাঁবাঁকা পথ অতিক্রম করছিলেন, তখন পাহাড় আলোয় আলোকিত হয়ে উঠেছিল। তীর্থে আমরা মা মারিয়ার কাছে প্রার্থনা করতে এসেছি।”
চট্টগ্রাম থেকে আসা রীতা নকরেক বলেন, “পুত্রবধূর সন্তান হচ্ছিল না। গতবার মানত করার পর এবার নাতী পেয়েছি। তাই এবার নাতীকে নিয়ে আবার এসেছি।”
গাজীপুর থেকে পরিবারের সঙ্গে আসা শিক্ষার্থী ঝর্ণা আরেং বলেন, “মারিয়ার কাছে এলে মনে একধরনের শান্তি পাই। আমরা প্রার্থনা করি যেন জীবনের দুঃখ-কষ্ট দূর হয়। প্রতিবছর এই সময়টার অপেক্ষায় থাকি।”
শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, “আমরা এই তীর্থযাত্রাকে নিরাপদ ও ঝুঁকি মুক্ত রাখতে তিন স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থায় রেখেছি। পাঁচ শতাধিক পুলিশ পোশাকে এবং সাদা পোশাকে দ্বায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও র্যাব, বিজিবি, এপিবিএন ও সেচ্ছাসেবক কাজ করছেন। যে কোন ঝুঁকি মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুত আছি।”
শেরপুর জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, “উৎসবটি দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ব্যবস্থাপনায়। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন দীর্ঘ ১৫ দিন ধরে সহযোগীতা করে আসছে। এবারের তীর্থযাত্রায় সারাদেশের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে তাদের উৎসব পালন করেছে।”
ময়মনসিংহ ধর্মপ্রদেশের বিশপ পনেন পল কুবি সিএসসি বলেন, “এ উৎসবের মাধ্যমে বিশ্ব মানবতার কল্যাণে প্রার্থনা করা হয়েছে। ধর্মীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এ তীর্থে দেশ-বিদেশের হাজারো মানুষ সমবেত হয়েছেন। তাঁরা দুই দিনব্যাপী তীর্থে নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন। মা ফাতেমা রানীর কাছে দেশ ও মানবজাতির কল্যাণে প্রার্থনা শেষে যার যার বাড়ি ফিরে যাবেন।”
ঢাকা/তারিকুল/এস