সাত কলেজ নিয়ে শিগগিরই যৌক্তিক সমাধান আসবে: ইউজিসি চেয়ারম্যান
Published: 24th, March 2025 GMT
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজ নিয়ে যে সমস্যাগুলো ছিল সেখানে প্রতিটি ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা পেয়েছি। আশা করছি, শিগগিরই খুব সুন্দর একটি যৌক্তিক সমাধান আসবে।
আজ সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারস্থ হোটেল লা ভিঞ্চি হোটেলে শিক্ষা বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন এডুকেশন রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ইরাব)-এর ইফতার মাহফিলে এসব কথা বলেন তিনি।
ইরাবের উদ্দেশ্যে ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, আপনারা হলেন ঐক্যের প্রতীক। এখানে আমরা ইউজিসির সবাই আছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যবৃন্দসহ সবাই একটি টিম। আমি মনে করি, ইউজিসির যদি কোনো সফলতা থাকে এর কারণ আমরা সবাই একসঙ্গে আছি। আমাদের ভুল ধরিয়ে দেবেন, সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবেন। আমরা আপনাদেরই একটি অংশ। আমাদের তরফ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা থাকবে।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থাকাকালে দেখতাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (ডুজা) ডাকে দল-মত নির্বিশেষে সবাই একসঙ্গে হতো। এতে প্রত্যেকটি ছাত্রসংগঠন, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাই উপস্থিত থাকতেন। এখানেও এমন একটি সহাবস্থানের পরিবেশ দেখছি।
অনুষ্ঠানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড.
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ইরাবের সাবেক সভাপতি সাব্বির নেওয়াজ। এছাড়া অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহাম্মদ, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির, সহ-সভাপতি এইচ এম আবু জাফর, ডা. তৌহিদুর রহমান আউয়াল, মাউশির উপপরিচালক (সাধারণ প্রশাসন) মো. শাহজাহান, ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এম এম বাদশা, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের আন্তর্জাতিক সম্পাদক মুতাসিম বিল্লাহ শাহেদী, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পাবলিক রিলেশন অ্যাসোসিয়েশনের (পকুরোয়া) সভাপতি মনিরুল ইসলাম রিন্টু প্রমুখ।
ইরাব সভাপতি ফারুক হোসাইনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সোলাইমান সালমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ইরাব সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলাম বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েরা বৈষম্যহীন ও দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার সুযোগ এনে দিয়েছে এবং আমরা সেই সুযোগটা কাজে লাগাতে চাই। আপনারাও (সাংবাদিক) দেশ গড়ার কাজে অংশীদার হবে।
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ইরাবে যারা সাংবাদিক রয়েছেন, তারা সব সময় গঠনমূলক সমালোচনাসহ সংবাদ প্রকাশ আমাদেরকে সমৃদ্ধ করে। সেই জায়গায় তাদের অবদান প্রশংসনীয়।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ বলেন, ৫ আগস্টের পর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় যে অবস্থায় ছিল সেখানে থেকে আজকের যে উত্তরণ, সেই জায়গায় আসতে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করেছেন সাংবাদিকরা। আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া কোনোভাবেই এটাকে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হতো না।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইউজ স র ল ইসল ম উপ চ র য অন ষ ঠ ন সহয গ ত হ ম মদ আম দ র ইউজ স
এছাড়াও পড়ুন:
৭ উপাচার্যের অংশগ্রহণে গোবিপ্রবিতে শিক্ষা সমাপনী
গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (গোবিপ্রবি) নবম ব্যাচের (নবনীতক ৯) শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষা সমাপনী-২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থীদের বিদায় বেলায় এক মঞ্চে আসীন হন দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতিমান সাত উপাচার্য।
বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুর ১২টায় একাডেমিক ভবন প্রাঙ্গণে আনন্দঘন পরিবেশে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর ছাড়াও অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী, খুলনা কৃষি বিশ্বিবদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল আহসান, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী, পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এসএম আব্দুল আওয়াল, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আতিয়ার রহমান ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুসলেহ উদ্দিন তারেক।
আরো পড়ুন:
নতুনবাজারের সেই রনির বুলেটের যন্ত্রণা আজো থামেনি
শিশু ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন, মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা
এক মঞ্চে একইসঙ্গে এতজন উপাচার্যকে পেয়ে সমাপনী ব্যাচসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “এভাবে একসঙ্গে পুরো সেশনের শিক্ষা সমাপনী আয়োজনের আইডিয়াটি অত্যন্ত চমৎকার। এতে করে একটি ব্যাচের একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে প্রবেশ ঘটে। যেখানে সবার একসঙ্গে পরীক্ষা হয়, রেজাল্ট প্রকাশ হয় এবং কোনো সেশন জট থাকে না। আমি এই আইডিয়াটি আমার নিজ বিশ্ববিদ্যালয়েও বাস্তবায়নের চেষ্টা করব।”
খুলনা কৃষি বিশ্বিবদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল আহসান বলেন, “আমরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগণ এখানে এসেছি সংহতি জানানোর জন্য। আমি নবম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের জীবনে সফলতা কামনা করছি।”
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী বলেন, “শিক্ষার্থীদের বিসিএস দেওয়া, বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করা বা ব্যবসা করার লক্ষ্য থাকে। তবে জীবনে কোনো না কোনো কিছু করতেই হবে। এক্ষেত্রে অবসর বলে কোনো শব্দ থাকা উচিত নয়।”
পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, “আমি যখন দেশের বাইরে পড়াশোনা করতাম, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে আমি কখনোই দেখিনি। আর বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্চে কখনো একসঙ্গে সাতজন উপাচার্যকেও বসতে দেখিনি, এটা অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর করে দেখিয়েছেন।”
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুল আওয়াল বলেন, “আমরা যদি আন্তর্জাতিক পরিপ্রেক্ষিতে চিন্তা করি, আমাদের চাকরি খোঁজার পাশাপাশি এমন কিছু করার মানসিকতা রাখতে হবে, যা দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে।”
রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আতিয়ার রহমান বলেন, “শিক্ষা সমাপনী মানেই সব সম্পর্ক ছিন্ন করা নয়। বিশ্বে এমন অনেক নজির আছে, যেখানে অ্যালামনাই থেকে উপাচার্য নিয়োগ হয়েছে। তাই নিজেকে বিস্তৃত পরিসরে মেলে ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ উজ্জ্বল করার দায়িত্ব নিতে হবে।”
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুসলেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “নিজেকে চেনাই সবচেয়ে বড় শিক্ষা। আর শিক্ষার্থীদের কর্মজীবনই বলে দেবে, তারা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে কতটা জ্ঞান অর্জন করেছে।”
প্রধান অতিথিরি বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর আগত উপাচার্যদের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, “শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্যই আমাদের এই প্রয়াস। একইসঙ্গে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি তুলে ধরাও আমাদের লক্ষ্য। আমরা জানিয়ে দিতে চাই, গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চায় এবং অচিরে দাঁড়াবেই।”
তিনি বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে ইউজিসির দুইটি হিট প্রকল্প পেয়েছি এবং ভবিষ্যতে আরো পাব। আমরা আশা করছি, বি ক্যাটাগরি থেকে আগামী অর্থবছরের আগেই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়টি এ ক্যাটাগরিতে উন্নীত হবে।”
গোবিপ্রবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সোহেল হাসানের সভাপতিত্বে এতে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাজমুল আহসানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক, সব অনুষদের ডিন, বিভাগীয় সভাপতি ও প্রাধ্যক্ষগণ, দপ্তর প্রধানগণ, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, জুলাই শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করা হয়।
শিক্ষা সমাপনী উপলক্ষে বুধবার ছাত্রদের কালার ফেস্ট ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা এবং আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সন্ধ্যায় একটি কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছে।
ঢাকা/রিশাদ/মেহেদী