জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস সংরক্ষণে নতুন ওয়েবসাইট উদ্বোধন
Published: 25th, March 2025 GMT
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘটনাপ্রবাহ সংরক্ষণ ও জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করতে নতুন একটি ওয়েবসাইট উদ্বোধন করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) বিকালে সচিবালয়ের তথ্য অধিদপ্তরে (পিআইডি) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি ওয়েবসাইটটির (inauguration.julyuprising.com) আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। তথ্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে এটি তৈরি করা হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘটনাপ্রবাহ সংবাদপত্রে প্রকাশিত বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে সময়ানুক্রমিকভাবে এই ওয়েবসাইটে উপস্থাপন করা হয়েছে।
তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “এই ওয়েবসাইট থেকে গণমাধ্যমের ভূমিকা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে এবং গবেষণার ক্ষেত্রেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
তিনি আরো বলেন, ওয়েবসাইটে আন্দোলন-সম্পর্কিত সম্পাদকীয়, শহীদ ও আহতদের সংবাদের পাশাপাশি ভিডিও কনটেন্ট যুক্ত করার জন্য তথ্য অধিদপ্তরকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে এই ওয়েবসাইট তৈরির উদ্যোগ একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আন্দোলনের ইতিহাস জানতে পারবে।” তিনি ওয়েবসাইটটিকে আরও তথ্যসমৃদ্ধ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সভাপতির বক্তব্যে প্রধান তথ্য অফিসার মো.
ওয়েবসাইটটিতে চারটি ক্যাটাগরিতে তথ্য আপলোড করা হয়েছে:
স্ক্যান নিউজপেপার: গণঅভ্যুত্থানকালীন বিভিন্ন সংবাদপত্রের সম্পূর্ণ স্ক্যান কপি।
নিউজ ক্লিপিং: আন্দোলন চলাকালীন প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদনের ক্লিপিং।
ফটো অ্যালবাম: পত্রিকায় প্রকাশিত ও অন্যান্য উৎস থেকে সংগৃহীত আন্দোলন-সম্পর্কিত স্থিরচিত্র।
রিজিওনাল নিউজপেপার: বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের পত্রিকার স্ক্যান কপি।
ঢাকা/আসাদ/এনএইচ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ল ই গণঅভ য ত থ ন র
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে মামলা মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ মির্জা ফখরুলের
গণঅভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে মামলা মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নে দলীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গণসংযোগের সময় দেওয়া বক্তব্যে এই আহ্বান রাখেন তিনি।
শেখ হাসিনার শাসন আমলে বিএনপি নেতাকর্মীদের নির্যাতনের শিকার হওয়ার কথা তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল। গুম, খুন, ভিত্তিহীন মামলা, লুটপাট, টাকা পাচার, বাকস্বাধীনতা হরণ ও ভোট চুরিসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।
আরো পড়ুন:
জুলাই গণহত্যা: শেখ হাসিনাসহ ৪০৮ জনের বিরুদ্ধে আরেক মামলা
হাসিনা-রেহানাসহ ২২ জনের গ্রেপ্তার-সংক্রান্ত প্রতিবেদন ১২ মে
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমাদের নেতাকর্মীদের গুম করা হয়েছে। লাখ লাখ নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে, তাদের ঘরে থাকতে দেননি আপনি। আমরা তো কোথাও পালিয়ে যাইনি। আদালতে মিথ্যা মামলা আইনের মাধ্যমে ফেইস (মোকাবিলা) করেছি। উকিল ধরে জামিন নিয়েছি। আপনি (শেখ হাসিনা) পালিয়ে আছেন কেন? আপনিও মামলা লড়েন। আপনি দেশে এসে দাড়ান না দেখি।”
জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা অনেকে মনে করেন শেখ হাসিনা আবারো দেশে ফিরে আসবেন। তিনি তো ১৫ বছর দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার বাবা শেখ মুজিবুর রহমান একজন বিখ্যাত মানুষ ছিলেন। তার তো দেশ থেকে পালানোর কথা ছিল না। তিনি পালালেন কেন? কারণ তিনি একজন ডাইনি ছিলেন। জনগণের ওপর এমন নির্যাতন করেছেন যে, তিনি পালাতে বাধ্য হয়েছেন। জনগণ যদি সেদিন তাকে পেত, তাহলে ছিঁড়ে খেত।”
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, “হাসিনা দেশে ফিরে রাজনীতি করলে আমাদের কিছু করতে হবে না, জনগণই তাকে দেখে নেবে।”
আওয়ামী লীগের শাসনামলের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “বিএনপির নেতাকর্মীরা যেন আওয়ামী লীগের মতো অন্যায় না করে; এতে মানুষ ভালোবাসবে না। দলের কোনো নেতাকর্মীরা অন্যায় করলে যেন জেলার নেতারা তাদের শক্ত হাতে দমন করেন; তারা যেন অন্যায়কারীদের পুলিশের হাতে তুলে দেন। তাই অপকর্ম বন্ধ করুন, না হলে আওয়ামী লীগের মতো অবস্থা হবে।”
ত্রোদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দৃষ্টি রেখে জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। মির্জা ফখরুলসহ দলটির শীর্ষ নেতারা সভা-সমাবেশ করছেন। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা, না রাখা নিয়ে ব্যাপক মতপার্থক্য রয়েছে; সেই সঙ্গে আইনি ঝক্কিও সামনে আসছে।
গণহত্যার দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একাধিক মামলায় আসামি করা হয়েছে শেখ হাসিনাকে। এ ছাড়া কয়েক শত ফৌজদারি মামলায় তিনি আসামি। অনেক মামলায় তাকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। তবে ভারতের আশ্রয়ে থাকা শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর কোনো নিশ্চয়তা এখনো তৈরি হয়নি।
গণঅভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ছোট বোন রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। সেদেশে উচ্চনিরাপত্তা শৃঙ্খলে বসবাস করছেন বলে আন্তর্জাতিক সাংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়ে থাকে। সেখান থেকে দেশে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে অনলাইনে তার কথোপকথনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যা নিয়ে অস্বস্তির কথা ভারতকে জানিয়ে রেখে অন্তর্বর্তী সরকার।
ঢাকা/মঈনুদ্দীন/মাসুদ