লালমনিরহাট শহরের বিডিআর রোডে লালমনিরহাট শিশু পার্কসংলগ্ন মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্মারক মঞ্চের ম্যুরালে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট, ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ, স্বাধীনতা যুদ্ধ, মুজিবনগর সরকার গঠন, স্বাধীন ভূখণ্ডে নব রবির উদয়, ৭১ এর গণহত্যা, বিজয়ে উচ্ছ্বসিত বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাতজন বীরশ্রেষ্ঠ, পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণ, জাতীয় পতাকা হাতে উল্লসিত জনতা ইত্যাদি।

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে গতকাল বুধবার জেলা প্রশাসন সেই ম্যুরালটি কাপড় দিয়ে ঢেকে রেখেছিল। এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে টিআইবির অনুপ্রেরণায় গঠিত লালমনিরহাট সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক)।

এ বিষয়ে লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবের চেতনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রতীয়মান না হওয়ায় ম্যুরালটি কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। তিনি আর কিছু বলতে রাজি হননি।

সনাকের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, মুক্তিযুদ্ধের কার্যক্রম পরিচালনায় ৬ নম্বর সেক্টর হিসেবে চিহ্নিত লালমনিরহাটে ২০২৪ সালর ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস এবং গতকাল ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে প্রশাসনের এমন কর্মকাণ্ড মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সম্পূর্ণ পরিপন্থী।

লালমনিরহাট সম্মিলিত সাংস্কৃতিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুফী মোহাম্মদ তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘লালমনিরহাট শিশু পার্কসংলগ্ন মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্মারক মঞ্চে স্থাপিত ম্যুরাল স্মৃতিস্মারকটি যদি চলমান সময়ের জন্য অনুপযুক্ত হয়, প্লিজ! কর্তৃপক্ষ, ম্যুরালটি ধ্বংস করে দিন, তবু সারা বছর সবার জন্য উন্মুক্ত রেখে বিশেষ বিশেষ দিনে কাপড় দিয়ে ঢেকে সার্কাস করবেন না।’

লালমনিরহাট সনাকের সভাপতি বীর প্রতীক ক্যাপ্টেন (অব.

) আজিজুল হক অসুস্থতার কারণে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্মারক মঞ্চের ম্যুরালে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরা হয়েছে। এমন একটি ম্যুরাল ২০২৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর ও গতকাল ২৬ মার্চ কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য হতে পারে না।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

জাতিসংঘ স্থায়ী মিশনে জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে বিশেষ অনুষ্ঠান

জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও নিউ ইয়র্কস্থ বাংলাদেশের কনস্যুলেট জেনারেল কর্তৃক যৌথভাবে আয়োজিত এই বিশেষ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) এই বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, যুবসমাজ শুধু আমাদের ভবিষ্যৎই নয়, বাংলাদেশে তারা আমাদের ‘বর্তমান’। এক বছর আগে, তাদের হাত ধরেই সমতা, স্বচ্ছতা এবং ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনের দাবি সার্বজনীন জন-আকাঙ্ক্ষায় রূপ নেয়।

আরো পড়ুন:

জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের অফিস খোলার সিদ্ধান্ত সরকারের বড় অসতর্কতা: মঞ্জু

গাজাকে নিশ্চিহ্ন করার কোনো ন্যায্যতা থাকতে পারে না: গুতেরেস

তৌহিদ হোসেন আরো বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে শুরু হওয়া এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান লক্ষ্য- সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য ব্যাপক প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার। 

তিনি তার বক্তব্যে বিগত এক বছরে বর্তমান সরকারের গৃহীত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপগুলোর কথা তুলে ধরেন।

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতাকে বৈশ্বিক বাস্তবতার সঙ্গে অত্যন্ত সঙ্গতিপূর্ণ মন্তব্য করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন বলেন, তারুণ্যের প্রতি আস্থা রাখলে তারা জাতি গঠনের কেন্দ্রে দাঁড়াতে পারে।  তিনি বলেন, যারা এক সময় মিছিলের অগ্রভাগে ছিল, আজ তারা নীতিনির্ধারণে অংশ নিচ্ছে, আর আগামী দিনের দিকনির্দেশনা ঠিক করতে সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিচ্ছে।  বাংলাদেশে তারুণ্যের নেতৃত্ব জাতিসংঘের যুববিষয়ক নীতি ও কার্যক্রমের সঙ্গে দৃঢ়ভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে তিনি উল্লেখ করেন।

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার সফল গণআন্দোলনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জাতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠানমালার আলোকে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের মিলনায়তনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে জুলাই গণঅভ্যুত্থান সম্পর্কিত তথ্যচিত্র এবং পোস্টার, দেয়াললিখন ও আলোকচিত্র প্রভৃতির প্রদর্শনীর মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনৈতিক নবযাত্রায় যুব সমাজের অনন্য অবদানকে উদযাপন করা হয়। বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, জাতিসংঘের কর্মকর্তাবৃন্দসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণে এই বিশেষ আয়োজনে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি এবং জাতিসংঘের ইয়ুথ অফিসের প্রতিনিধি ড. সুধা বালাকৃষ্ণণ বক্তব্য রাখেন।

ড. বালাকৃষ্ণণ তার বক্তব্যে বলেন, জাতিসংঘ সমাজ পরিবর্তনে যুবসমাজের সত্যিকারের অংশগ্রহণকে সর্বদাই উৎসাহিত করে থাকে। বাংলাদেশে রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় পরিবর্তনের অগ্রভাগে থাকা যুবশক্তি তাই অন্যান্য সমাজের জন্যও অনুপ্রেরণার উৎস হতে পারে।

উল্লেখ্য, ফিলিস্তিন সমস্যার দুই-জাতি-ভিত্তিক সমাধানের লক্ষ্যে জাতিসংঘের একটি উচ্চ-পর্যায়ের সভায় অংশগ্রহণের জন্য পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বর্তমানে নিউ ইয়র্কে অবস্থান করছেন।

ঢাকা/হাসান/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পিডিবির ভুলে ২৪৫ কোটি টাকা জরিমানা দিতে হলো বাংলাদেশকে
  • জুলাইয়ের ৩০ দিনে রেমিট্যান্স ২৩৬ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে
  • নির্বাচনের রোডম্যাপে কবে যাত্রা শুরু করবে বাংলাদেশ
  • ভারতের ৬ প্রতিষ্ঠানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
  • এ দেশে খুচরা ব্যাংকিং বন্ধ করে দিচ্ছে এইচএসবিসি
  • রাবিপ্রবির ১০ শিক্ষার্থীর সনদ-ছাত্রত্ব বাতিল
  • জন্মহার বাড়াতে চীনের নতুন উদ্যোগ, শিশুদের জন্য মা-বাবা পাবেন ভাতা
  • সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ১২ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা
  • ‘রাষ্ট্রীয় শোক’ প্রত্যাখ্যান
  • জাতিসংঘ স্থায়ী মিশনে জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে বিশেষ অনুষ্ঠান