তুরস্কের ইস্তাম্বুলের অন্তর্বর্তী মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন নুরি আসলান। তিনি কারাবন্দী মেয়র একরেম ইমামোগলুর মেয়াদের বাকি সময় দায়িত্ব পালন করবেন। গত সপ্তাহে দুর্নীতির অভিযোগে ইমামোগলুকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁকে এখন বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।

গতকাল বুধবার স্থানীয় সম্প্রচারমাধ্যম এনটিভি এবং তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম আনাদুলুর খবরে বলা হয়, ইস্তাম্বুলের পৌর সরকার নুরি আসলানকে অন্তর্বর্তী মেয়র নির্বাচিত করেছে। আসলান রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) সদস্য। ইমামোগলুও এই পার্টির নেতা।

প্রথম দফার ভোটে আসলান ১৭৩ ভোট পান। আর প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এ কে পার্টি) প্রার্থী জেইনেল আবিদিন ওকুল পান ১২৩ ভোট। কেউ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় ভোট দ্বিতীয় রাউন্ডে গড়ায়। এতে আসলান পান ১৭৭ ভোট। ওকুল পান ১২৫ ভোট।

আরও পড়ুনতুরস্কের প্রতিটি শহরে বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা বিরোধী দলীয় নেতার৫ ঘণ্টা আগে

দ্বিতীয় রাউন্ডেও কেউ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় ভোট গড়ায় তৃতীয় রাউন্ডে। নিয়ম অনুযায়ী এই রাউন্ডে কোনো প্রার্থী সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেই মেয়র নির্বাচিত হওয়ার বিধান রয়েছে। এই রাউন্ডে আবার আসলান পান ১৭৭ ভোট। ওকুল পান ১২৫ ভোট। ফলে আসলান অন্তর্বর্তী মেয়র নির্বাচিত হন।

বিজয়ের পর সারাচানে ইস্তাম্বুল পৌরসভা ভবনে সিএইচপির চেয়ারম্যান ওজগুর ওজেল বলেন, এরদোয়ান চেয়েছিলেন তাঁর বিশ্বস্ত ব্যক্তিকে মেয়র করতে। কিন্তু তা সফল হয়নি। এরদোয়ানের এজেন্ডা মুখ থুবড়ে পড়েছে।

এখন থেকে তুর্কিদের লড়াইয়ের ক্ষেত্র আরও বাড়ল জানিয়ে ওজেল বলেন, পুরো তুরস্কে আমাদের সংগ্রাম বেড়েছে।

কথা বলার সময় ওজেলের পাশে ছিলেন আসলান। নিজের দায়িত্বকে সাময়িক জানিয়ে আসলান জোর দিয়ে বলেন, ‘আমাদের মেয়র জনগণের প্রত্যক্ষ ভোট নির্বাচিত হয়েছিলেন। শিগগিরই তিনি আমাদের মধ্যে ফিরে আসবেন। চেয়ারম্যানকে সঙ্গে নিয়ে আমরা আমাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে যাব, মেয়র পদে তাঁকেই [ইমামোগলুকেই] ফিরিয়ে আনব।’

আরও পড়ুনরাজপথ থেকে সরকার পতনের ডাক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের১৭ ঘণ্টা আগেইস্তাম্বুলের কারাবন্দী মেয়র একরেম ইমামোগলুর মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ। ইস্তাম্বুলে, ২৬ মার্চ ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম দ র ত রস ক আসল ন

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ