হামজার চোট ও চেইন রিঅ্যাকশন২০২২ সালের ১১ ডিসেম্বর। ইংল্যান্ডের ওয়াটফোর্ডের ভিকারেজ রোডে সেই দিনটার কথা কি মনে আছে হামজা চৌধুরীর! বাংলাদেশের ফুটবলের নতুন সেনসেশন তখন ধারে খেলছেন ইংলিশ ফুটবলের দ্বিতীয় স্তর চ্যাম্পিয়নশিপের দল ওয়াটফোর্ডে। ভিকারেজ রোডে সে দিন হামজার দলের প্রতিপক্ষ ছিল হাল সিটি। লেস্টার থেকে ধারে ওয়াটফোর্ডে যাওয়া হামজা ম্যাচের শুরুর দিকেই বলের দখল নিতে গিয়ে প্রতিপক্ষের দিমিত্রিওস পেলকাসের সঙ্গে সংঘর্ষে মারাত্মকভাবে আহত হন। ওই ঘটনায় হামজা ও পেলকাস দুজনই আর খেলা চালিয়ে যেতে পারেননি। এরপর যা হলো, সেটি অবিশ্বাস্যই। ১৫ মিনিটে হামজার বদলি হিসেবে নামলেন জোসেফ হাঙ্গবো। বাজে খেলায় সেই হাঙ্গবোকে উঠিয়ে ওয়াটফোর্ড কোচ স্লাভেন বিলিচ ৭১ মিনিটে নামালেন রেই মানাজকে। আহত হয়ে সেই মানাজও উঠে গেলেন যোগ করা সময়ে, এবার নামলেন ভাকুন বায়ো। বায়োর ভাগ্য ভালোই বলতে হবে, ম্যাচটি শেষ করেই তিনি মাঠ ছাড়তে পেরেছিলেন।চার অধিনায়কের ম্যাচএকটি ম্যাচে এক দলের হয়ে সর্বোচ্চ কতজনকে অধিনায়কের আর্মব্যান্ড পরতে দেখেছেন? অধিনায়ক বদলি হয়ে উঠে গেলে অন্য কাউকে অধিনায়কত্ব করতে দেখাটা নিয়মিত ঘটনাই। তবে ২০২২ সালে আর্জেন্টিনার ঘরোয়া ফুটবলে অধিনায়কত্ব নিয়ে অবিশ্বাস্য এক কাণ্ডই করে বসে নিউয়েলস ওল্ড বয়েজ। সান লরেঞ্জোর বিপক্ষে এক ম্যাচে দলটির অধিনায়কের আর্মব্যান্ড হাতে উঠেছিল চারজনের! অধিনায়ক পাবলো পেরেজ ১৫ মিনিটে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন। যাওয়ার আগে আর্মব্যান্ডটা ক্রিস্তিয়ান লেমাকে দিয়ে যান পেরেজ। সেন্টারব্যাক লেমা লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ৬২ মিনিটে। ওল্ড বয়েজের অধিনায়কত্বের দায়িত্বটা এরপর বর্তায় হুলিয়ান ফার্নান্দেজের ওপর। ১৫ মিনিট পর অধিনায়কত্বের দায়িত্ব ছাড়েন এই মিডফিল্ডারও। কারণটা অবশ্য চোট কিংবা কার্ড পাওয়া নয়। আর্জেন্টিনার হয়ে তিনটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা লেফটব্যাক লিওনেল ভানিওনি বদলি হিসেবে মাঠে নামতেই সিনিয়রের প্রতি সম্মান দেখাতে তাঁর হাতে আর্মব্যান্ড পরিয়ে দেন ফার্নান্দেজ।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেমের টানে চীনা যুবকের বাংলাদেশে এসে বিয়ে
মাদারীপুরে মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের প্রেমের টানে চীনের নাগরিক শি তিয়ান জিং বাংলাদেশে এসেছেন। বিয়ে করে বর্তমানে মাদারীপুরে শশুরবাড়িতে আছেন। ভিনদেশি যুবককে দেখার জন্য ওই বাড়িতে মানুষ ভিড় করছেন।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুরের সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের উত্তর মহিষেরচর এলাকার বাসিন্দা সাইদুল হোসেনের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (১৯)। সুমাইয়া মাদারীপুর শহরের সরকারি সুফিয়া মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। তারা তিন বোন। সুমাইয়া বড়। মেঝ সাদিয়া আক্তার (১২) মাদ্রাসায় পড়ে। ছোট বোন আরিফা (৬)।
চীনের সাংহাই শহরের সি জিং নিং এর ছেলে শি তিয়ান জিং (২৬)। তারা দুই ভাই। বড় শি তিয়ান জিং। তার চীনের সাংহাই শহরে রেস্টুরেন্টের ব্যবসা আছে।
আরো পড়ুন:
‘একজন ছেলে মানুষ আমাদের পরিবারের বৌ হয়েছিল’
এক বিয়ের বরযাত্রী খেয়ে ফেলল অন্য বিয়ের খাবার
শি তিয়ান জিংকে টিকটকে দেখেন সুমাইয়া। এরপর ইউচ্যাটের মাধ্যমে কথা আদান-প্রদান হয়। উভয়ই গুগলের মাধ্যমে লেখা অনুবাদ করে মনের ভাব আদান- প্রদান করেন। এক পর্যায় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। মাত্র চার মাসের প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে গত ২৪ জুলাই চীন থেকে বাংলাদেশ আসেন শি তিয়ান জিং। এরপর এক দিন ঢাকার একটি হোটেলে থাকেন। ২৬ জুলাই মাদারীপুর সদর উপজেলার মহিষেচরের সুমাইয়ার বাড়িতে আসেন।
সুমাইয়া, সুমাইয়ার বাবা সাইদুল ইসলাম ও তার দুইজন আত্মীয় মিলে ঢাকা থেকে শি তিয়ান জিংকে মাদারীপুরে নিয়ে আসেন। বাংলা ভাষায় কথা বলতে না পারায় মোবাইলে অনুবাদ করে কথা আদান-প্রদান করেন শি তিয়ান জিং। এরপর ২৭ জুলাই তারা বিয়ে করেন। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে সুমাইয়ার বাড়িতে মানুষ ভিড় করতে থাকে।
সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘‘টিকটক দেখে আমি ওর ভক্ত হই। এরপর ইউচ্যাটের মাধ্যমে কথা হয়। পরে দুজনেই প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। মাত্র চার মাসের প্রেমের সূত্র ধরে চীন থেকে বাংলাদেশ আমার কাছে চলে আসবে, তা কখনো ভাবিনি। ও প্লেনে উঠার সময় বলেছে, আমি বাংলাদেশে আসছি। আমি বিশ্বাস করিনি। যখন ইন্ডিয়া এসে আমাকে জানায়, তখন বিশ্বাস করেছি।’’
সুমাইয়া আক্তার আরো বলেন, ‘‘ও ওর মা-বাবাকে আমার কথা বলেছে। তারাও মুসলিম। ওর মা বলেছেন, আমাকে বিয়ে করে চীনে নিয়ে যেতে। তাই শি তিয়ান জিং বাংলাদেশে এসে আমাকে বিয়ে করেছেন।’’
সুমাইয়া বলেন, ‘‘এরই মধ্যে পাসপোর্ট করতে দিয়েছি। শি তিয়ান জিং এক মাস বাংলাদেশে থাকবে। এর মধ্যে আমার কাগজপত্র রেডি করা হবে। তারপর ও আমাকে চীনে নিয়ে যাবে। আমিও চীনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’’
শি তিয়ান জিং বলেন, ‘‘বাংলাদেশ আমার ভালো লেগেছে। তবে অনেক গরম। আর অনেক মানুষ আমাকে দেখতে আসে। তাই আমার ভয় লাগে। আমি ভালোবেসে চীন থেকে এখানে এসেছি। সুমাইয়াকে বিয়ে করেছি। এখন ওর কাগজপত্র রেডি করে চীনে নিয়ে যাবো। আমার পরিবার সব জানে। তারাই সুমাইয়াকে চীনে নিয়ে যেতে বলেছেন।’’
সুমাইয়ার বাবা সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘‘শি তিয়ান জিং আমাদের এখানে আছে। ও খুব ভালো ছেলে। খুবই অমায়িক। কোনো অহংকার নেই। এক মাস থাকবে এবং আমার মেয়েকে নিয়ে যাবে। আমরা খুব খুশি।’’
পাঁচখোলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রুবেল হাওলাদার জানান, প্রথমে আদালতের মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়। পরে সামাজিকভাবে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বিয়ে হয়। চীনে ওই ছেলের ব্যবসা আছে। কিছু দিনের মধ্যে সুমাইয়াকে চীনে নিয়ে যাবে।
ঢাকা/বকুল