নোয়াখালী সদর উপজেলায় নিখোঁজের দুই দিন পর একটি বাড়ির সেপটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে এক স্কুলছাত্রের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ছাত্রের নাম মো. রায়হান (১৬)। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটার দিকে উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ হুগলি গ্রাম থেকে সুধারাম থানার পুলিশ ওই লাশটি উদ্ধার করে। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে আটক এক যুবকের তথ্যের ভিত্তিতে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত রায়হান উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ হুগলি গ্রামের মো.

আলমগীরের ছেলে। স্থানীয় খলিফারহাট উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল সে। উদ্ধারের পর তার লাশটি সুধারাম থানায় রাখা হয়েছে। আগামীকাল শুক্রবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর বাড়ির কাছের মসজিদে তারাবিহর নামাজ আদায় করতে যায় রায়হান। এরপর রাতে আর বাড়িতে ফিরে আসেনি। পরিবারের লোকজন তাঁকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেন এবং বিষয়টি থানায় জানান। তবে থানায় এ–সংক্রান্ত কোনো সাধারণ ডায়েরি কিংবা মামলা করা হয়নি।

নিহত ছাত্রের পরিবারের সদস্যরা জানান, গতকাল বুধবার একটি অপরিচিত মুঠোফোন নম্বর থেকে রায়হানের পরিবারের কাছে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি থানা-পুলিশকে জানানো হয়। এরপর পুলিশ গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সন্দেহভাজন হিসেবে রায়হানদের একই বাড়ির বাসিন্দা মো. মারুফকে (২২) আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পরে মারুফের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আজ বিকেল পাঁচটার দিকে একই গ্রামের এক ব্যক্তির বাড়ির পেছনের সেপটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে রায়হানের লাশ উদ্ধার করা হয়।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী সুধারাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুদন দাশ প্রথম আলোকে বলেন, স্কুলছাত্রকে খুন করে সেপটিক ট্যাংকের ভেতর লাশ ফেলে রাখার পর পরিবারের কাছে চাঁদা দাবি করা হয়েছে। যে সিম কার্ড ব্যবহার করে টাকা দাবি করা হয়েছে, মারুফের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সেটিও উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি জানান, সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির সময় রায়হানের কপালের ডান পাশে এবং ডান চোখের ওপর জখমের দাগ গেছে।

সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তারাবিহর নামাজ পড়তে যাওয়ার পর নিখোঁজ হয়েছিল রায়হান। পরে আজ ওই ঘটনায় আটক এক ব্যক্তির তথ্যের ভিত্তিতে লাশ উদ্ধার করা হয়। তবে কী কারণে রায়হানকে খুন করা হয়েছে, সেটি এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি তাঁরা। কারণ রায়হানকে খুন করার পর টাকা দাবি করা হয়েছে।

ওসি কামরুল ইসলাম জানান, আটক ব্যক্তি ও নিহত স্কুলছাত্র একই বাড়ির বাসিন্দা। আটক ব্যক্তি সম্পর্কে রায়হানের চাচা। বিষয়টি তাঁরা গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছেন। এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত ছিল কি না, সেটিও দেখা হচ্ছে। পরিবার এখনো থানায় লিখিত কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগের আলোকে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ব র র র পর ব

এছাড়াও পড়ুন:

অল্প বয়সে বিয়ে, ধীরে ধীরে নিজের দক্ষতা বাড়িয়ে ফ্রিল্যান্সার তানিয়ার মাসিক আয় লাখ টাকা

মাত্র ১৪ বছর বয়স। যে বয়সে কিশোরীরা স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে দুরন্তপনায় মেতে থাকে, সে বয়সেই বাল্যবিবাহের পিঁড়িতে বসতে হয়েছিল তানিয়া নাসরিনকে। অল্প বয়সে সংসারের ভার, এরপর কোলজুড়ে আসে এক ছেলে ও এক মেয়ে। পড়াশোনা শেষ করার আগেই সংসারে প্রবেশ করায় চাকরি করার কোনো যোগ্যতা বা সুযোগ কোনোটাই ছিল না তাঁর। এর মধ্যেই সংসারে শুরু হয় তীব্র অর্থনৈতিক টানাপোড়েন।

সাধারণ কোনো গল্প হলে এখানেই হয়তো সমাপ্তি ঘটত। কিন্তু তানিয়া নাসরিন হার মানতে নারাজ। সেই কঠিন সময় পাড়ি দিয়ে তানিয়া আজ একজন সফল ডিজিটাল ডিজাইনার। মাসে আয় করছেন হাজার ডলারের বেশি। একজন গৃহিণী থেকে শুরু করলেন, তারপর পড়াশোনা শেষ করে হলেন সফল ফ্রিল্যান্সার। তানিয়া নাসরিনের এই যাত্রাপথ কিন্তু মোটেও সহজ ছিল না।

ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প

তানিয়া নাসরিনের বাবা আবদুল খালেক ছিলেন একজন প্রবাসী, থাকতেন দুবাইয়ে। মা রাশেদা বেগম, গৃহিণী। ২০০১ সালে প্রবাসেই তাঁর বাবার ক্যানসার ধরা পড়ে। তখনই শুরু হয় তানিয়ার বিয়ে নিয়ে আলোচনা। সেই অল্প বয়সেই মেয়েকে বিয়ে দিতে হয়। বিয়ের দেড় মাস পর তানিয়ার বাবা মারা যান।

বাবাহারা অল্প বয়সি মেয়ের জীবনে আসে শূন্যতা। তানিয়ার স্বামীর নাম জাহিদ হাসান, পেশায় একজন ব্যাবসায়ী। জাহিদ তানিয়াকে বললেন, ‘তুমি চাইলে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারো।’ তখন ২০০২ সাল প্রথম সন্তান জেবা ফারিহা এসেছে ঘরে। সেভাবে পড়াশোনাই আর করতে পারেননি। সংসারে ব্যস্ত সময় কাটে তানিয়ার।

২০০৭ সালেই সংসারে আসে দ্বিতীয় সন্তান জুবায়ের আহম্মেদ। সে বছরেই তানিয়া আবিষ্কার করেন নিজেকে। সন্তান মানুষ করার পাশাপাশি নিজেকে কিছু করতে হবে। আর কিছু করতে গেলে পড়াশোনাটা আগে শুরু করতে হবে। যেই ভাবনা সেই কাজ। যেহেতু স্বামীর বাসা ঢাকার লালবাগ, সেখানেই ওয়েস্ট অ্যান্ড হাইস্কুলে নবম শ্রেণিতে তানিয়া ভর্তি হন। এরপর সংসার, বাচ্চা সামলানো আর পড়াশোনা।এরপর ভর্তি হন উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচএসসি প্রোগ্রামে। এইচএসসি পাস করে শেখ বোরহানুদ্দীন পোস্টগ্র্যাজুয়েট কলেজ থেকে বিবিএ শেষ করেন। তানিয়ার গ্রামের বাড়ি ঢাকার দোহার উপজেলায়। দুই ভাই ও দুই বোন। তিনিই সবার ছোট ছোট।

সংসারের অভাব-অনটনের দিনগুলোতে তানিয়া খুঁজছিলেন এমন কোনো পথ, যা তাঁকে ঘরের বাইরে না গিয়েও আয়ের সুযোগ দেবে। একদিন এক বান্ধবীর ভাবির কাছ থেকে জানতে পারেন গ্রাফিক ডিজাইনের কথা। জানতে পারেন, এ কাজ শিখে ঘরে বসেই সম্মানজনক আয় করা সম্ভব। সেই ভাবি নিজেও তখন ঘরে বসে ভালো আয় করছিলেন। অন্যের সাফল্য দেখে নিজের মনেও সাহস সঞ্চার করেন তানিয়া। সংকল্প করেন তিনিও পারবেন।

তানিয়া নাসরিন মনে করেন, বিয়ে হয়ে যাওয়া মানেই সব শেষ হয়ে যাওয়া নয়

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আদালত চত্বর থেকে দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার মামলায় তিন আসামি কারাগারে
  • বাজারে এসেছে নতুন আলু, দাম কত
  • মানিকগঞ্জে বাউলশিল্পী আবুল সরকারের জামিন আবারও নামঞ্জুর
  • এই দিনে হানাদার মুক্ত হয়েছিল কুষ্টিয়ার যেসব স্থান
  • দীর্ঘ বিরতির পর কেন এই জরিপ
  • ৬০ বছর বয়সে প্রেমের দেখা পাব ভাবিনি: আমির খান
  • অল্প বয়সে বিয়ে, ধীরে ধীরে নিজের দক্ষতা বাড়িয়ে ফ্রিল্যান্সার তানিয়ার মাসিক আয় লাখ টাকা
  • ইংল্যান্ডকে উড়িয়ে ২–০–তে এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া
  • আইএল টি–টোয়েন্টিতে অভিষেকেই মোস্তাফিজ জাদু
  • নবীজি (সা.) যেভাবে নামাজ পড়তেন