নিখোঁজের দুই দিন পর সেপটিক ট্যাংক থেকে স্কুলছাত্রের লাশ উদ্ধার
Published: 27th, March 2025 GMT
নোয়াখালী সদর উপজেলায় নিখোঁজের দুই দিন পর একটি বাড়ির সেপটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে এক স্কুলছাত্রের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ছাত্রের নাম মো. রায়হান (১৬)। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটার দিকে উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ হুগলি গ্রাম থেকে সুধারাম থানার পুলিশ ওই লাশটি উদ্ধার করে। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে আটক এক যুবকের তথ্যের ভিত্তিতে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত রায়হান উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ হুগলি গ্রামের মো.
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর বাড়ির কাছের মসজিদে তারাবিহর নামাজ আদায় করতে যায় রায়হান। এরপর রাতে আর বাড়িতে ফিরে আসেনি। পরিবারের লোকজন তাঁকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেন এবং বিষয়টি থানায় জানান। তবে থানায় এ–সংক্রান্ত কোনো সাধারণ ডায়েরি কিংবা মামলা করা হয়নি।
নিহত ছাত্রের পরিবারের সদস্যরা জানান, গতকাল বুধবার একটি অপরিচিত মুঠোফোন নম্বর থেকে রায়হানের পরিবারের কাছে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি থানা-পুলিশকে জানানো হয়। এরপর পুলিশ গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সন্দেহভাজন হিসেবে রায়হানদের একই বাড়ির বাসিন্দা মো. মারুফকে (২২) আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পরে মারুফের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আজ বিকেল পাঁচটার দিকে একই গ্রামের এক ব্যক্তির বাড়ির পেছনের সেপটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে রায়হানের লাশ উদ্ধার করা হয়।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী সুধারাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুদন দাশ প্রথম আলোকে বলেন, স্কুলছাত্রকে খুন করে সেপটিক ট্যাংকের ভেতর লাশ ফেলে রাখার পর পরিবারের কাছে চাঁদা দাবি করা হয়েছে। যে সিম কার্ড ব্যবহার করে টাকা দাবি করা হয়েছে, মারুফের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সেটিও উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি জানান, সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির সময় রায়হানের কপালের ডান পাশে এবং ডান চোখের ওপর জখমের দাগ গেছে।
সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তারাবিহর নামাজ পড়তে যাওয়ার পর নিখোঁজ হয়েছিল রায়হান। পরে আজ ওই ঘটনায় আটক এক ব্যক্তির তথ্যের ভিত্তিতে লাশ উদ্ধার করা হয়। তবে কী কারণে রায়হানকে খুন করা হয়েছে, সেটি এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি তাঁরা। কারণ রায়হানকে খুন করার পর টাকা দাবি করা হয়েছে।
ওসি কামরুল ইসলাম জানান, আটক ব্যক্তি ও নিহত স্কুলছাত্র একই বাড়ির বাসিন্দা। আটক ব্যক্তি সম্পর্কে রায়হানের চাচা। বিষয়টি তাঁরা গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছেন। এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত ছিল কি না, সেটিও দেখা হচ্ছে। পরিবার এখনো থানায় লিখিত কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগের আলোকে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বাজারে এসেছে নতুন আলু, দাম কত
শুরু হয়েছে আলুর নতুন মৌসুম। নভেম্বর মাসের শেষ দিকেই কৃষকেরা জমি থেকে নতুন আলু তোলা শুরু করেছেন। সেই আলু সরাসরি চলে আসছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার খুচরা বাজারে। নতুন আলুর চাহিদা বেশি থাকে; এ জন্য দামও পুরোনো আলুর চেয়ে বেশি হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, নতুন আলুর দাম এখন কেজিপ্রতি ৫০-৬০ টাকা। দুই সপ্তাহ আগে যখন প্রথম বাজারে এসেছিল নতুন আলু, তখন ১২০-১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
আলু পচনশীল পণ্য। তবে নতুন অবস্থায় মাস দুয়েক এটি ভালো থাকে। এরপরে আলু সংরক্ষণের জন্য হিমাগারে রাখতে হয়। সাধারণত জমি থেকে নতুন মৌসুমের আলু উত্তোলন শুরু হয় নভেম্বরের শেষ বা ডিসেম্বরের শুরু থেকে। মার্চ-এপ্রিল মাস পর্যন্ত বাজারে এসব নতুন আলু কিনতে পাওয়া যায়। পাশাপাশি পুরোনো আলুও বিক্রি হয়।
অন্যদিকে হিমাগার থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে সব পুরোনো আলু বের করে দেওয়া হয়। এরপর হিমাগারের রক্ষণাবেক্ষণকাজ শেষে ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন মৌসুমের আলু সংরক্ষণ শুরু হয়। মার্চ মাসে হিমাগারে আলু সংরক্ষণ শেষ হয়। সেই আলু আবার আমরা সারা বছর খাই।
আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ও টাউন হল বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, প্রায় প্রতিটি সবজির দোকানেই পুরোনো আলুর পাশে বিক্রির উদ্দেশ্যে নতুন আলুও রাখা আছে। কোনো ক্রেতা এলে পুরোনো আলুর চেয়ে নতুন আলু বেচতে বেশি আগ্রহ দেখান বিক্রেতারা। তাঁরা বলেন, নতুন আলু বিক্রি করলে লাভ বেশি।
আদাবর এলাকার বাসিন্দা সাদমান ইসলাম আজ সকালে মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে সবজি ও মাছ কিনতে আসেন। সবজির দোকানে আলুর কথা বলতেই বিক্রেতা আব্বাস আকন্দ তাঁকে বলেন, ‘স্যার, নতুন আলু আসছে, নতুন আলু নেন। খেয়ে মজা পাবেন।’ বিক্রেতার কথায় নতুন আলু কেনেন সাদমান।
পরে সাদমান ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘দাম একটু বেশি; কিন্তু বাসা থেকেও বলেছে নতুন আলু পেলে আনতে। তাই দুই কেজি আলু কিনলাম।’
নতুন আলুর দাম কেমনসাধারণত মৌসুমের শুরুতে যেকোনো পণ্যের দাম বেশি থাকে। বাজারে প্রায় ১৫ দিন ধরে নতুন আলু উঠছে। শুরুর কয়েক দিন প্রতি কেজির দাম ছিল ১২০ থেকে ১৫০ টাকা। এরপর দাম কমতে থাকে। সপ্তাহখানেক আগে কেজি ছিল ৮০-১০০ টাকা। এখন খুচরা বাজারে এক কেজি নতুন আলু কেনা যাচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। এগুলো সাদা আলু। আর নতুন লাল আলুর দাম আরেকটু বেশি, কেজি ৭০-৮০ টাকা।
অবশ্য পাইকারি কিংবা কারওয়ান বাজারের মতো বড় বাজারে নতুন আলুর দাম আরও কিছুটা কম। যেমন আজ সকালে কারওয়ান বাজারে এক কেজি নতুন আলু বিক্রি হয়েছে ৩০-৪০ টাকায়।
বিক্রেতারা জানান, ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ নতুন আলুর সরবরাহ আরও বাড়বে। তাতে দামও কমে আসবে। তখন কেজি ৩০-৪০ টাকায় নামতে পারে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের একটি সবজির দোকানে নতুন আলু সাজিয়ে রাখা হয়েছে