ভারতের ছত্তিশগড়ের সুকমা জেলায় আজ শনিবার নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে গুলিবিনিময়ে অন্তত ১৬ জন সন্দেহভাজন মাওবাদী নিহত হয়েছেন। গুলিবিনিময়ে সংরক্ষিত নিরাপত্তা বাহিনীর দুই সদস্যও আহত হয়েছেন। এ নিয়ে ২০২৫ সালের প্রথম তিন মাসে ১৩২ জনকে মাওবাদী সন্দেহে হত্যা করা হলো। তবে তাঁরা মাওবাদী কি না বা তাঁদের আত্মসমর্পণের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল কি না, তা জানা যাচ্ছে না।

দক্ষিণ ছত্তিশগড়ের বস্তার রিংকেল ইন্সপেক্টর জেনারেল পি সুন্দররাজ ১৬ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে বলেছেন, ঘটনাস্থল থেকে স্বয়ংক্রিয় একে ৪৭ রাইফেল ও ভারতের নির্মিত রাইফেল ছাড়াও অন্যান্য অস্ত্র পাওয়া গেছে। অভিযান এখনো চলছে।

নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল আটটার দিকে মাওবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হলে দুই পক্ষে গুলিবিনিয়ম হয়। সর্বশেষ খবরে জানানো হয়, এখনো দুই পক্ষে গুলিবিনিময় হচ্ছে। এ পর্যন্ত ১৬টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

২০২৪ সাল থেকে ছত্তিশগড়ে মাওবাদীদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা অভিযান জোরদার করা হয়েছে। গত বছর ২১৯ জনকে হত্যা করার পর এ বছরে এখন পর্যন্ত ১১৬ জনকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু ২০২২ এবং ২৩ সালে মারা গিয়েছিলেন মোট ৫২ জন।

এভাবে কোনো প্রমাণ বা বৈচারিক ব্যবস্থা ছাড়াই ধারাবাহিকভাবে গ্রামাঞ্চলে মানুষকে মাওবাদী বলে চিহ্নিত করে হত্যা করার বিরুদ্ধে একাধিক বিবৃতি দিয়েছেন মানবাধিকারকর্মীরা। কিন্তু তাতে কোনোই কাজের কাজ হয়নি। নিরাপত্তা বাহিনীর তরফে শীর্ষস্তরে জানানো হয়েছে, ২০২৬ সালের মধ্যে ছত্তিশগড়কে মাওবাদীশূন্য করে ফেলা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ