ছত্তিশগড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে ১৬ সন্দেহভাজন মাওবাদী নিহত
Published: 29th, March 2025 GMT
ভারতের ছত্তিশগড়ের সুকমা জেলায় আজ শনিবার নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে গুলিবিনিময়ে অন্তত ১৬ জন সন্দেহভাজন মাওবাদী নিহত হয়েছেন। গুলিবিনিময়ে সংরক্ষিত নিরাপত্তা বাহিনীর দুই সদস্যও আহত হয়েছেন। এ নিয়ে ২০২৫ সালের প্রথম তিন মাসে ১৩২ জনকে মাওবাদী সন্দেহে হত্যা করা হলো। তবে তাঁরা মাওবাদী কি না বা তাঁদের আত্মসমর্পণের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল কি না, তা জানা যাচ্ছে না।
দক্ষিণ ছত্তিশগড়ের বস্তার রিংকেল ইন্সপেক্টর জেনারেল পি সুন্দররাজ ১৬ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে বলেছেন, ঘটনাস্থল থেকে স্বয়ংক্রিয় একে ৪৭ রাইফেল ও ভারতের নির্মিত রাইফেল ছাড়াও অন্যান্য অস্ত্র পাওয়া গেছে। অভিযান এখনো চলছে।
নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল আটটার দিকে মাওবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হলে দুই পক্ষে গুলিবিনিয়ম হয়। সর্বশেষ খবরে জানানো হয়, এখনো দুই পক্ষে গুলিবিনিময় হচ্ছে। এ পর্যন্ত ১৬টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
২০২৪ সাল থেকে ছত্তিশগড়ে মাওবাদীদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা অভিযান জোরদার করা হয়েছে। গত বছর ২১৯ জনকে হত্যা করার পর এ বছরে এখন পর্যন্ত ১১৬ জনকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু ২০২২ এবং ২৩ সালে মারা গিয়েছিলেন মোট ৫২ জন।
এভাবে কোনো প্রমাণ বা বৈচারিক ব্যবস্থা ছাড়াই ধারাবাহিকভাবে গ্রামাঞ্চলে মানুষকে মাওবাদী বলে চিহ্নিত করে হত্যা করার বিরুদ্ধে একাধিক বিবৃতি দিয়েছেন মানবাধিকারকর্মীরা। কিন্তু তাতে কোনোই কাজের কাজ হয়নি। নিরাপত্তা বাহিনীর তরফে শীর্ষস্তরে জানানো হয়েছে, ২০২৬ সালের মধ্যে ছত্তিশগড়কে মাওবাদীশূন্য করে ফেলা হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেম ছিল না তবু কেন মধুবালাকে বিয়ে করেছিলেন কিশোর কুমার
দিলীপ কুমারের সঙ্গে বিচ্ছেদের কিছুদিন পরই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন অভিনেত্রী মধুবালা। তবে তখন তিনি ছিলেন অসুস্থ। কিশোর কুমার জানিয়েছিলেন, ভালোবাসা থেকে নয়, বরং কথা রাখতেই তিনি এ বিয়ে করেছিলেন।
মধুবালা ও দিলীপ কুমারের প্রেম নিয়ে একসময় মুখর ছিল মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। কিন্তু অভিনেত্রীর বাবার বাধার কারণে সে সম্পর্কে ফাটল ধরে এবং দুজনের বিচ্ছেদ ঘটে। কিছুদিন পরেই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন মধুবালা। তাঁদের এই বিয়ে অনেককে চমকে দিয়েছিল। কারণ, তাঁদের প্রেমের কথা তখনো গোপন ছিল। তবে মধুবালার শরীর তখন ভালো যাচ্ছিল না। বলা হয়, দীর্ঘ রোগভোগের সময় কিশোর কুমার তাঁকে মায়ের বাড়িতে রেখেই চলে যান।
দ্য ইলাস্ট্রেটেড উইকলি অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমার বলেছিলেন, ‘বিয়ের আগেই জানতাম, ও খুব অসুস্থ। কিন্তু কথা তো দিয়েছিলাম। তাই সে কথা রেখেই ওকে ঘরে এনেছিলাম স্ত্রী হিসেবে। জানতাম, ওর জন্মগত হৃদ্রোগ আছে। তবু ৯ বছর ধরে সেবা করেছি। চোখের সামনেই ওকে মরতে দেখেছি। কেউ বুঝবে না এর যন্ত্রণা, না ভুগলে। ও অসম্ভব সুন্দরী ছিল। আর কত যন্ত্রণায় মারা গেছে, সেটা চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। হতাশায় চিৎকার করত, কান্নাকাটি করত। এত প্রাণোচ্ছল মানুষ নয়টা বছর বিছানায় শুয়ে থাকবে—এ কল্পনাই করা যায় না। ডাক্তার বলেছিল, ওকে হাসিখুশি রাখতে হবে। আমি তা–ই করেছি—ওর শেষনিশ্বাস পর্যন্ত। কখনো হেসেছি, কখনো কেঁদেছি ওর সঙ্গে।’
তবে কিশোর কুমারের এই বক্তব্য নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। কারণ, পরে ফিল্মফেয়ার সাময়িকীতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একেবারে ভিন্ন কথা বলেন তিনি। সেই সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমার বলেন, ‘মধুবালার সঙ্গে আমি প্রেমে পড়িনি কখনো। বরং ওর প্রেমিক ছিল আমার বন্ধু দিলীপ কুমার। আমি তো শুধু ওদের বার্তা পৌঁছে দিতাম। বিয়ের প্রস্তাবটা দিয়েছিল মধুবালাই। এমনকি, যখন আমার প্রথম স্ত্রী রুমা তখনো আমার সঙ্গে ছিল, তখনো মধু বলত, “ওকে কখনো ছেড়ো না, না হলে আমি তোমার হয়ে যাব।”’
আরও পড়ুনকিশোর কুমার কি সত্যিই ঘরে কঙ্কাল আর মাথার খুলি নিয়ে ঘুমাতেন২৭ মে ২০২৫মধুবালার পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, চিকিৎসকেরা তখন বলেছিলেন, অভিনেত্রীর পক্ষে শারীরিক সম্পর্ক কিংবা সন্তানধারণ কোনো কিছুই সম্ভব নয়। সেই বাস্তবতা হয়তো প্রভাব ফেলেছিল কিশোরের সিদ্ধান্তে। এক ঘনিষ্ঠজন বলেন, ‘আমরা বলছি না কিশোরদা ভুল করেছিলেন। ডাক্তার তো স্পষ্ট বলেছিল—শারীরিক সম্পর্ক বা সন্তান কোনোটাই সম্ভব নয়। তবে একজন নারীর তো মানসিক সঙ্গীও দরকার হয়।’
ওই ঘনিষ্ঠজন আরও জানান, কিশোর কুমার তিন মাসে একবার আসতেন মাত্র। বলতেন, ‘আমি এলে তুমি কাঁদবে, আর এতে তোমার হৃদ্যন্ত্রের ক্ষতি হবে। তুমি বিষণ্ন হয়ে পড়বে।’ সে সময় মধু অনেক ছোট ছিলেন, ঈর্ষাও ছিল স্বাভাবিক। হয়তো এ দূরত্বই ধীরে ধীরে তাঁকে শেষ করে দিয়েছিল।
১৯৬৯ সালে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান বলিউড অভিনেত্রী মধুবালা