পরিবার-স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে এরইমধ্যে বহু মানুষ ঢাকা ছেড়েছেন। আর অনেকেই রয়েছেন শেষ মুহূর্তের ঈদযাত্রায় বাড়ি ফেরার অপেক্ষায়। এরইমধ্যে অনেকটাই ফাকা হয়ে গেছে ঢাকা। তবে ঢাকার বাসিন্দাদের রাতভর কেনাকাটার ব্যস্ততায় কমতি নেই তাতে। চাঁদ রাতে ঢাকার একেবারে ভিন্ন এক চিত্র দেখা গেছে বিভিন্ন বিপণী বিতানে। 

রোববার রাত ৯টা থেকে মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, নিউ মার্কেট, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, বেইলি রোড ও বিজয় সরণি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে মানুষের ভিড়। বিশেষ করে শহরের বিভিন্ন মার্কেট, শপিং সেন্টার আর সড়ক সংলগ্ন বিপণী বিতানগুলোতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। 

বিজয় সরণি ও ধানমন্ডির একটি সড়কে কর্তব্যরত দুই ট্রাফিক সার্জেন্ট বলেন, শহরের বাসিন্দারা গরমের কারণে রাতের সময়টাকেই মনে হচ্ছে কেনাকাটার জন্য বেছে নিয়েছেন। 

ধানমন্ডির দুটি অভিজাত শপিং মল এবং এলিফ্যান্ট রোডে গিয়ে দেখা যায় ক্রেতাদের প্রচণ্ড ভিড়। দোকানগুলোতে বিক্রিও চলছিল অনেক। 

উত্তরা থেকে আসা ব্যবসায়ী রেদওয়ান আহমেদ জানান, ঈদের মূল কেনাকাটা শেষ। এই সময়টায় জুতা, স্যান্ডেল, প্রসাধনীর জন্যই মানুষ ভিড় করছে মার্কেটে। 

তিনি বলেন, অনেক বছর পর তুলনামূলক সহনশীল ঈদের বাজার। মানুষ কেনাকাটা করতে পারছে বেশ আনন্দে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, দফায় দফায় চাঁদাবাজি, উচ্ছৃঙ্খলতা, ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা এবার প্রায় নেই বললেই চলে। প্রশাসনের কাছ থেকে তারা সহায়তা পাচ্ছেন প্রত্যাশা মতোই। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকায় ক্রেতা-ব্যবসায়ী উভয় পক্ষ নিশ্চিন্ত। রাত যতই হোক তাতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। আগেও রাতে মানুষের কেনাকাটা চলত। তবে বিগত বছরগুলোতে নানা অনিশ্চয়তা ও নিরাপত্তাহীনতার কারণে মানুষের মনে দুঃচিন্তা থাকত।

এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) নজরুল সিলাম দোওনিক সমকালকে বলেন, রাজধানীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রেক্ষাপট এবং প্রয়োজন অনুসারে করণীয় নির্ধারণ করছে পুলিশ। ঈদের সময় রাজধানীজুড়ে যে জনশুন্যতা সৃষ্টি হবে সেটা যেন অপরাধীদের উস্কে না দেয় সেদিক নজর রাখা হবে। বিশেষ করে যেসব ব্যাংকের ভল্টে বড় অংকের অর্থ মজুদ থাকে, জুয়েলারী দোকান এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তায় বিশেষ নির্দেশনা মতো কাজ শুরু হয়েছে। আবাসিক এলাকাগুলোতেও একইভাবে নিরাপত্তা বলয়ে ঘেরা হবে। পুলিশের পক্ষ থেকে আমরা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে চাই। আপনারা নিশ্চিন্তে ঈদের আনন্দ উপভোগ করুন। পুলিশ জেগে আছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

সুন্দরবনের নতুন পর্যটন স্পট ‘আলী বান্দা’

পূর্ব সুন্দরবনের নিসর্গঘেরা অভয়ারণ্যে গড়ে তোলা হয়েছে নতুন পর্যটন কেন্দ্র ‘আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার’। সবুজ ম্যানগ্রোভ বনের বুক চিরে, নদীর নোনাজলে ভেসে, প্রকৃতির নীরব সৌন্দর্যে ঘেরা এই কেন্দ্রটি চলতি নভেম্বর মাস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভ্রমণ করতে পারবেন পর্যটকরা।

পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের আওতাধীন আলী বান্দা এরইমধ্যে ভ্রমণপিপাসুদের দৃষ্টি কেড়েছে। শরণখোলা রেঞ্জ অফিস থেকে ট্রলারযোগে মাত্র ৪০ মিনিটের নৌপথ পেরিয়ে পৌঁছানো যায় সেখানে। 

যাত্রাপথে চোখে পড়ে বনের গভীর সবুজ গাছগাছালি, ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে যাওয়া পাখি, কচুরিপানায় ঢাকা জলাশয় এবং সুন্দরী-গেওয়া গাছের সারি যা পর্যটকদের মোহিত করে।

বন বিভাগ জানিয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টারের অবকাঠামো নির্মাণকাজ শুরু হয়। এখানে তৈরি হয়েছে ছয়তলা ভবনের সমান উচ্চতার একটি ওয়াচ টাওয়ার, যেখান থেকে সুন্দরবনের বিস্তৃত সবুজাভ দৃশ্য চোখে ধরা পড়ে। 

রয়েছে দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ ফুট ট্রেইল (ওয়াকওয়ে)। পথের দুই পাশে ঘন বনের মাঝে হাঁটলে দেখা যায় প্রকৃতির আসল রূপ। এছাড়া রয়েছে মিষ্টি পানির পুকুর, হরিণ রাখার সেড, জেটি, বিশ্রামাগার, সুভেনিয়ার শপ এবং পর্যটকদের নিরাপত্তায় বনরক্ষী ও স্থানীয় গাইডের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান।

ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে আলীবান্দা বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর মানুষের জন্য সবচেয়ে সহজগম্য স্পট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কম সময় ও কম ঝুঁকিতে সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে এখানে। স্থানীয় পর্যটকরা এরইমধ্যে আগ্রহ দেখাতে শুরু করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা শাহিন বলেন, “আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার চালু হলে স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে স্থানীয় গাইড, নৌযানচালক, হোটেল ব্যবসায়ী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কর্মসংস্থান বাড়বে। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব পর্যটনের মাধ্যমে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সচেতনতা বাড়বে।”

তবে পর্যটনকেন্দ্রে প্রবেশ ফি নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে। আলীবান্দায় প্রবেশের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪৫ টাকা।

শরণখোলা ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল বয়াতী বলেন, ‘‘আলীবান্দায় প্রবেশ ফি ৩৪৫ টাকা, অথচ একই বনের করমজল পর্যটন পয়েন্টে ফি মাত্র ৪৬ টাকা। অনেকেই আলীবান্দায় যেতে আগ্রহী, কিন্তু ফি বেশি হওয়ায় নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।’’

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “আলীবান্দা এখন প্রায় প্রস্তুত। চলতি মাসেই এখানে হরিণ আনা হবে। বর্তমানে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে স্পটটি। যেহেতু এটি ২০১৭ সালে ঘোষণা করা অভয়ারণ্য এলাকার অন্তর্ভুক্ত, তাই সাধারণ বনাঞ্চলের তুলনায় কিছু বিধিনিষেধ ও প্রবেশ ফি বেশি রাখা হয়েছে। তবে পর্যটকদের দাবির বিষয়টি আমরা সরকারের কাছে জানাব।’’

ঢাকা/শহিদুল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুন্দরবনের নতুন পর্যটন স্পট ‘আলী বান্দা’
  • খুলনার নতুন কারাগার চালু, ফুল দিয়ে স্বাগত জানানো হবে বন্দীদের