এখন হরহামেশাই হ্যাকিংয়ের ঘটনা শোনা যায়। পাসওয়ার্ড চুরি থেকে শুরু করে বিটকয়েন ওয়ালেট হ্যাকিংয়ের ঘটনা ঘটছে। এখন খুব সাধারণ মনে হলেও বিশ্বের প্রথম হ্যাকিংয়ের ঘটনা ঘটেছিল কম্পিউটার আবিষ্কার হওয়ার আগে!

সাধারণভাবে হ্যাকিং বা কোনো সিস্টেমে অনুপ্রবেশের ধারণাটি আধুনিক সাইবার অপরাধ হিসেবে মনে করা হয়। আধুনিক অপরাধ হলেও বিশ্বের প্রথম হ্যাকিংয়ের ঘটনাটি উনিশ শতকের শুরুতে ঘটেছিল। তখন ইন্টারনেট বা কম্পিউটারেরই অস্তিত্ব ছিল না। বিশ্বে প্রথম হ্যাকিংয়ের ঐতিহাসিক ঘটনাটি ফ্রান্সের টেলিগ্রাফ সিস্টেমে ঘটেছিল ১৮৩৪ সালে।

ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, ১৮৩৪ সালে প্রথম পরিচিত হ্যাকিংয়ের ঘটনাটি ঘটে। তখন ফরাসি প্রতারক ফ্রাঁসোয়া ব্ল্যাংক ও জোসেফ ব্ল্যাংক আর্থিক সুবিধা লাভের জন্য চ্যাপ টেলিগ্রাফ সিস্টেম ব্যবহার করেন। সেই সময় ফ্রান্সের প্যারিস ও বোর্দোর মধ্যে শেয়ারবাজারের তথ্য পাঠানোর জন্য অপটিক্যাল টেলিগ্রাফের একটি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা হতো। সেই সিস্টেম সেমাফোর সিস্টেম নামেও পরিচিত।

১৮ শতকের শেষের দিকে ক্লদ চ্যাপ এই সিস্টেমটি বিভিন্ন বার্তা জানানোর জন্য তৈরি করেন। বিভিন্ন বাহুযুক্ত টাওয়ারের ওপর নির্ভরশীল ছিল এই সিস্টেম। ব্ল্যাংক ভাইয়েরা সেই টেলিগ্রাফ সিস্টেমের ওপর নজর দেন। টেলিগ্রাফ সিস্টেম ব্যবহার করে প্যারিস থেকে বোর্দোয় শেয়ারবাজারের তথ্য পাঠানো সম্পর্কে কৌতূহলী হন তাঁরা। বাজারে অন্যদের চেয়ে দ্রুত তথ্য পেলে প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা পাওয়া যায়। এই ধারণায় তাঁরা সংকেতের মধ্যে গোপন বার্তা ঢোকানোর একটি উপায় তৈরি করেন।

চ্যাপ সিস্টেমে টেলিগ্রাফ অপারেটরদের ব্যক্তিগত বার্তা পাঠানোর সুযোগ ছিল না। ব্ল্যাংক ভাইয়েরা রিলে স্টেশনের মধ্যে একজন অপারেটরকে ঘুষ দিয়ে সরকারি বার্তায় সামান্য পরিবর্তন আনেন। তাঁরা এমন একটি পদ্ধতি তৈরি করেন যেখানে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি এড়িয়ে একটি বিশেষ কোড পাঠানো হতো। রিলে পয়েন্টে থাকা কর্মী এই পরিবর্তনগুলো ব্যাখ্যা করে ব্ল্যাংক ভাইদের শেয়ারবাজারের তথ্য আগেই জানিয়ে দিত। সাধারণ মানুষের কয়েক ঘণ্টা আগে শেয়ারের দাম কতটা পরিবর্তন হয়েছে তা জেনে ব্ল্যাংক ভাইয়েরা শেয়ারে বেশ লাভ পেতে শুরু করেন। তাঁদের এই কাজ দুই বছর কেউ ধরতে পারেনি। পরবর্তী সময়ে এই ত্রুটির কথা সরকার জেনে যায়। সেই সময় এই ধরনের কারসাজির বিরুদ্ধে কোনো আইন না থাকায় তাঁদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে মামলা করা যায়নি।

১৮৩৪ সালের সেই টেলিগ্রাফ হ্যাক ইতিহাসের প্রথম নথিভুক্ত হ্যাকিংয়ের ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হয়। কম্পিউটারের ব্যবহার না থাকলেও অননুমোদিত প্রবেশাধিকার ও তথ্য বিকৃতির কারসাজির জন্য প্রযুক্তি ব্যবহারের নজির সেটাই ছিল প্রথম।

সূত্র: মার্কপ্যাক ডট ওআরজি

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম হ য ক র প রথম য় র ঘটন ব যবহ র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকার রাস্তায় টেসলা, রোলস–রয়েস, পোরশেসহ ২৫০০ বিলাসবহুল গাড়ি

রাজধানী ঢাকার রাস্তায় চলে বিশ্বের আলোচিত টেসলা গাড়ি। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) থেকে ছয়টি টেসলা গাড়ির নিবন্ধন নেওয়া হয়েছে। শুধু টেসলা নয়; রোলস-রয়েস, ফেরারি, বেন্টলি, পোরশের মতো বিলাসবহুল অভিজাত গাড়ি এখন ঢাকার রাস্তার বুক চিড়ে চড়ে বেড়ায়।

অন্যদিকে রেঞ্জ রোভার, বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ বেঞ্জের মতো অভিজাত গাড়িও ঢাকার রাস্তায় অহরহ দেখা যায়। এ গাড়িগুলো যেন দেশের ধনীদের আভিজাত্যের প্রতীক হয়ে গেছে।

সব মিলিয়ে দেশে এখন আড়াই হাজারের বেশি এমন বিলাসবহুল ও দামি গাড়ি আছে। এই গাড়িগুলোর দাম ১ কোটি থেকে ১২ কোটি টাকা। দেশের একশ্রেণির অতিধনী ব্যবসায়ীরা এসব বিলাসবহুল গাড়ি চালান।

গাড়ি ব্যবসায়ীরা জানান, এমন বিলাসবহুল দামি গাড়ির গ্রাহকের সংখ্যা দেড় থেকে দুই হাজারের মতো। কেউ কেউ একাধিক বিলাসবহুল গাড়ি কিনেছেন।

দেশে বিলাসবহুল গাড়ির মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় মার্সিডিজ বেঞ্জ, বিএমডব্লিউ ও আউডি (অনেকে অডি বলেন) ব্র্যান্ডের গাড়ি। রাজধানীর ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রামের রাস্তায় এমন দামি গাড়ি মাঝেমধ্যে দেখা যায়।

এক দশক আগেও রাস্তায় বিলাসবহুল গাড়ি অনেক কম দেখা যেত। গুলশান, বনানী, ধানমন্ডি, বারিধারা ও বসুন্ধরার মতো অভিজাত এলাকায় এখন প্রায়ই দেখা মিলে রেঞ্জ রোভার, মার্সিডিজ ও বিএমডব্লিউর মতো বিলাসবহুল গাড়ি। সাধারণত রাতের দিকে অভিজাত এলাকায় এমন গাড়ির আনাগোনা বেড়ে যায়। সব মিলিয়ে গত ১০ বছরে আড়াই হাজারের বেশি বিলাসবহুল গাড়ি আমদানি হয়েছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ বছরে দেশে শুধু রোলস-রয়েস ব্র্যান্ডের গাড়ি আমদানি হয়েছে ১২টি। আর গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষে (বিআরটিএ) ৮টি রোলস-রয়েস নিবন্ধিত হয়েছে।

গত জুলাই মাসে রাজধানীর পূর্বাচলের ৩০০ ফিট সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পরে রোলস-রয়েসের ‘স্পেক্টার’ মডেলের গাড়ি। যার দাম ফিচারভেদে প্রায় ১১ থেকে ১২ কোটি টাকা। তখন এই দামি গাড়ি নিয়ে বেশ আলোচনা হয়।

টেসলা ব্র্যান্ডের ‘মডেল এস’ গাড়ি

সম্পর্কিত নিবন্ধ