ভারতীয় বাংলা সিনেমার গুণী পরিচালক সৃজিত মুখার্জি। ২০১২ সালে তিনি নির্মাণ করেন ‘হেমলক সোসাইটি’। আলোচিত এ সিনেমার আদলে সৃজিত নির্মাণ করছেন ‘কিলবিল সোসাইটি’। পূর্বের মতো সিনেমাটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করছেন পরমব্রত চ্যাটার্জি। তবে কোয়েল মল্লিকের পরিবর্তে নেওয়া হয়েছে কৌশানী মুখার্জিকে।

‘কিলবিল সোসাইটি’ সিনেমায় পরমব্রত-কৌশানীর চুম্বন দৃশ্য রয়েছে। প্রথমবার সিনেমায় চুম্বন দৃশ্যে অভিনয় করলেন কৌশানী। সেই অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে পরমব্রতকে বলিউডের সিরিয়াল কিসার ইমরান হাশমির সঙ্গে তুলনা করলেন এই অভিনেত্রী।

‘কিলবিল সোসাইটি’ সিনেমায় যুক্ত হওয়ার গল্প জানিয়ে কৌশানী মুখার্জি বলেন, “সৃজিতদা আমাকে প্রথম ফোন করে ডাকেন। জিজ্ঞাসা করেন, ‘তোর চুমু খেতে অসুবিধা আছে?’ আমি বলেছিলাম, ‘হ্যাঁ, অসুবিধা তো নিশ্চয়ই আছে।’ তারপর সৃজিতদা জানান, সিনেমায় চুমু খাওয়াটা চিত্রনাট্যের জন্য জরুরি। আমি চিত্রনাট্য শুনলাম, শুনে আর না বলার প্রশ্নই ছিল না। কী অসাধারণ গল্প! সৃজিতদার সঙ্গে আমিও সহমত, কিছু জায়গায় গল্পের খাতিরে ওই দৃশ্যটা প্রয়োজনীয়। আর চুমু খাওয়াটাই তো সব নয়। বুঝেছিলাম ওই চরিত্রের নিশ্চয়ই অন্য অনেক কিছু করার আছে, তারপর কথাবার্তা এগিয়ে যায়।”

আরো পড়ুন:

আমি আর জিৎ ৬ বছর একসঙ্গে ছিলাম: স্বস্তিকা

শ্রাবন্তীকে আপত্তিকর স্পর্শ, তেড়ে গেলেন নায়িকা

চুম্বন দৃশ্যে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার কথা স্মরণ করে কৌশানী মুখার্জি বলেন, “এখন এটা অনায়াসে বলতে পারি, আমার অভিনীত সেরা চরিত্র এটি। পর্দায় ঠোঁট ঠাসা চুমু খাওয়া নিয়ে আমার এত বিরোধিতা সেই জায়গায় নিজেকে মানিয়ে নিয়েছি এই চরিত্রের জন্য। এর আগে কিন্তু বনির সঙ্গেও পর্দায় চুম্বনের দৃশ্যে অভিনয় করিনি।”

চুম্বন দৃশ্যের জন্য নিজেকে কীভাবে প্রস্তুত করেন? এমন প্রশ্নের জবাবে কৌশানী মুখার্জি বলেন, “আলাদা করে কোনো প্রস্তুতি নিতে হয়নি। সেটে ‘ইন্টিমেসি কোঅর্ডিনেটর’ থাকেন। স্বাচ্ছন্দ হতে অনেকটা সাহায্য করেছেন তিনি। শটের আগে আমি ভীষণ চাপে ছিলাম। সকাল থেকে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল। কারো সঙ্গে কথা বলছিলাম না। আমার বিপরীতে পরমদা, পরমব্রত চ্যাটার্জি। পরমদা তো ইমরান হাশমি, দারুণ চুমু খায়। পর্দায় অনেককে চুমু খেয়েছে। তবে সৃজিতদাকে বলে রেখেছিলাম, এটা যেন এক টেকেই হয়ে যায়। এই দৃশ্যের রিটেক করা যাবে না।”

সৃজিতের একটি বক্তব্য উল্লেখ করে কৌশানী মুখার্জি বলেন, “শট নেওয়ার পর চিত্রগ্রাহককে সৃজিতদা বলেছিলেন, ‘তুই যদি শট না নিতে পেরেছিস বস, পরের চুমুটা তোকে আর আমাকে খেতে হবে। কৌশানী বলে দিয়েছে আর চুমু খাবে না।’ পরে এসব কথা শুনে আমাদের কী হাসি! পরমদাও খুব ভালোভাবে সবটা সামলেছে।”

নায়ক বনি সেনগুপ্তর সঙ্গে চুটিয়ে প্রেম করছেন কৌশানী মুখার্জি। পরমব্রত চ্যাটার্জির সঙ্গে চুম্বন দৃশ্যে অভিনয় করতে আপত্তি জানাননি প্রেমিক বনি? জবাবে কৌশনী মুখার্জি বলেন, “সঙ্গী হিসেবে তো যে কারো অসুবিধা হবে। বাড়ি ফেরার পর কিছুক্ষণ নিস্তব্ধ একটা পরিস্থিতি ছিল। আমি ওর জীবনে আসার আগে পর্দায় বনি চুম্বন দৃশ্যে অভিনয় করেছে। ‘বরবাদ’ সিনেমায় ঋত্বিকার সঙ্গে ঠোঁটঠাসা চুমুর দৃশ্যে অভিনয় করেছে। আমরা সম্পর্কে আসার পর এটা পর্দায় প্রথম চুমু। একটা চ্যালেঞ্জ তো ছিলই, সেটা অতিক্রম করতে হয়েছে। এটা হওয়ারই ছিল।”

পরিচালনার পাশাপাশি সিনেমাটির চিত্রনাট্য রচনা করেছেন সৃজিত। পরমব্রত-কৌশানী ছাড়াও ‘কিলবিল সোসাইটি’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন— বিশ্বনাথ বসু, সন্দীপ্তা সেন, সৌমেন চক্রবর্তী প্রমুখ। আগামী ১১ এপ্রিল প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে সিনেমাটি।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র চ ম বন দ শ য পর দ য়

এছাড়াও পড়ুন:

ছুটি না পেয়ে অসুস্থ শ্রমিকের মৃত্যু, মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ 

নারায়ণগঞ্জের বন্দরের মদনপুর এলাকায় লারিজ ফ্যাশনের পোশাক কারখানায় অসুস্থ হয়ে রিনা আক্তার (৩২) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। 

সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে তারা মদনপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিকরা জানিয়েছেন, রিনা আক্তার অসুস্থ অবস্থায় কারখানায় কাজ করছিলেন। রোববার তিনি বেশি অসুস্থতা অনুভব করলে ছুটি চেয়ে আবেদন করেন। তবে, কর্তৃপক্ষ ওই শ্রমিকের আবেদনে সাড়া না দিয়ে কাজ করতে বাধ্য করেন। ওই নারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে সহকর্মীরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অবরোধকারী শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য মালিকপক্ষ দায়ী। রিনা অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাকে ছুটি দেওয়া হয়নি। চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন তিনি। 

লারিজ ফ্যাশনের মালিকপক্ষ ও কর্মকর্তাদেরকে গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে লারিজ ফ্যাশন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শিমুল বলেছেন, আমাদের একজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত্যু হয়। এতে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেছেন, সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য গার্মেন্টস মালিকপক্ষ দায়ী, এমন অভিযোগ করে শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশও আছে। শ্রমিকরা রাস্তা থেকে সরে গেছেন। যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

ঢাকা/অনিক/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ