মা-বাবা বেঁচে নেই এখনও জানে না আরাধ্যা
Published: 2nd, April 2025 GMT
আরাধ্যা বিশ্বাস। ঈদের ছুটিতে মা-বাবার সঙ্গে যাচ্ছিল কক্সবাজার। আশা ছিল স্বপ্নের কক্সবাজারে বেশ ক’দিন মা-বাবার সঙ্গে আনন্দ উল্লাসে কাটাবে সে। তবে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে তার স্থান হয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে। দুর্ঘটনায় মাইক্রোবাসে থাকা তার বাবা দিলীপ বিশ্বাস আর মা সাধনা রাণী চলে গেছেন পরপারে। অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছে আরাধ্যা। তবে মা-বাবা যে আর বেঁচে নেই তা এখনও জানে না সে। জ্ঞান ফেরার পর থেকেই তাই মা-বাবাকেই খুঁজছে ছোট্ট আরাধ্যা।
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে বুধবার গুরুতর আহত হয় আরাধ্যা বিশ্বাসসহ আরও বেশ কয়েকজন। ঘটনার পর তাদের উদ্ধার করে মুমূর্ষু অবস্থায় চমেক হাসপাতালে আনা হয়। পরে আরাধ্যাকে হাসপাতালের ২৮ নম্বর নিউরো সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়। দুর্ঘটনায় তার দুই পায়ের হাড় ভেঙে গেছে। আঘাত পেয়েছে মাথা, হাতসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে। চিকিৎসকরা বলছেন, জ্ঞান ফিরলেও এখনও ঝুঁকিমুক্ত নয় আরাধ্যা।
জানতে চাইলে চমেক হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা.
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তসলিম উদ্দিন সমকালকে বলেন, চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় বুধবার হাসপাতালে পাঁচজনকে আনা হয়। এরমধ্যে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। বাকি তিনজনকে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। মা-বাবার মৃত্যু হলেও শিশু আরাধ্য অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছে। মা-বাবা যে আর বেঁচে নেই তা এখনও জানে না শিশুটি। ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। তাকে সুস্থ করে তুলতে সবাই আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এর আগে একমাত্র মেয়ে আরাধ্যা, স্ত্রী সাধনা রানীসহ কয়েকজন নিকট আত্মীয়কে নিয়ে কক্সবাজার যাচ্ছিলেন দিলীপ কুমার (৪২)। বুধবার ভোরে টঙ্গী থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দিলেও আনন্দের সেই যাত্রা থমকে যায় চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলা চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকায়। সেখানে নিয়ন্ত্রণ হারানো একটি বাসের সঙ্গে তাদের বহনকারী মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে মৃত্যু হয় দিলীপ কুমার, তার স্ত্রী সাধনা রানীসহ ১০ জনের।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সড়ক দ র ঘটন ন হত দ র ঘটন আর ধ য
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ