নারী সংবাদকর্মীকে শ্লীলতাহানি ও হেনস্থা, প্রধান অভিযুক্তসহ গ্রেপ্তার ৩
Published: 3rd, April 2025 GMT
রাজধানীর বনশ্রী এলাকায় নারী সাংবাদিককে শ্লীলতাহানি ও হেনস্তার ঘটনায় জড়িত অভিযোগে প্রধান আসামি সোয়েব রহমান ওরফে জিশানসহ (২৫) তিন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গতকাল বুধবার গভীর রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার অন্য ব্যক্তিরা হলেন মো. রাইসুল ইসলাম (২১) ও মো.
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে র্যাব-৩–এর পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল রাতে রাজধানীর রামপুরা এলাকায় যৌন হয়রানিসংক্রান্ত একটি ঘটনা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি র্যাব-৩–এর নজরে আসে এবং তাৎক্ষণিকভাবে গুরুত্বসহকারে তারা ছায়াতদন্ত শুরু করে। ওই ঘটনায় রামপুরা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী ২০০৩) ১০ ধারায় একটি মামলা হয়। মামলায় এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাতনামা অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-৩–এর একাধিক গোয়েন্দা ও আভিযানিক দল মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু করে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গোয়েন্দা সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ওই মামলার প্রধান আসামি সোয়েব রহমান জিশানকে রাজধানীর মেরাদিয়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বাড়ি বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার ফুলহাতায়। পরে সোয়েবের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আজ বৃহস্পতিবার সকালে র্যাব রাজধানীর বেইলি রোড থেকে রাইসুল ইসলাম (২১) ও গেন্ডারিয়া থেকে কাউসার হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। রাইসুলের বাড়ি বরিশাল সদর উপজেলার চহটা এবং কাউসার হোসেনের বাড়ি বরিশাল সদর উপজেলার রাজ্জাকপুরে।
গতকাল রাত পৌনে আটটার দিকে একটি ইংরেজি দৈনিকের নারী সংবাদকর্মী তাঁর ছোট ভাইকে নিয়ে বনশ্রী ই-ব্লকের ৩ নম্বর রোডের মুখে একটি জুসের দোকানে যান। এ সময় স্থানীয় কয়েকজন যুবক তাঁকে উত্ত্যক্ত করেন। এতে তাঁর ভাই প্রতিবাদ করলে তাঁরা তাঁকে মারধর করেন। এ সময় ওই নারী সংবাদকর্মী বাধা দিতে গেলে তাঁরা তাঁকে মারধর ও শ্লীলতাহানি করেন। গতকাল রাতে ওই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ভুক্তভোগী নারী সংবাদকর্মী সোয়েব রহমান ওরফে জিসানের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও দুজনকে আসামি করে রামপুরা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ১০ ধারায় মামলা করেন। ওই ঘটনা ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর সোয়েব বাসায় তালা লাগিয়ে সপরিবার পালিয়ে যান। তিনি বনশ্রী সি ব্লকে থাকেন।
আরও পড়ুন: বনশ্রীতে নারী সংবাদকর্মীকে শ্লীলতাহানি-মারধর, থানায় মামলা
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর স ব দকর ম বনশ র গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?